Tag: রপ্তানি

  • বাঘার ভালো মানের আম ইতালিতে প্রথম বারের মত রপ্তানি হচ্ছে।

    বাঘার ভালো মানের আম ইতালিতে প্রথম বারের মত রপ্তানি হচ্ছে।

    রাজশাহীর বাঘা থেকে এবার আগাম জাতের চোষা আমের প্রথম চালান যাচ্ছে ইতালি। আজ বুধবার সন্ধ্যায় ৩০০ কেজি আম ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।  আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে এই আম ইতালি পাঠানো হবে।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, উপজেলার আম উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম (ছানা) ৩০০ কেজি আম প্যাকেজিং করে ঢাকায় পাঠিয়েছেন। ঢাকা থেকে আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ইতালি পাঠানো হবে। আমগুলো দেশি গুটি জাতের চোষা আম।

    সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, চোষা জাতের আম আগাম হয়। খেতেও খুব সুস্বাদু। স্থানীয়ভাবে চাহিদা বেশি। এই আমটা এবারই প্রথম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে রফতানির চেষ্টা করছি। ৩০০ কেজি আম আমার এখান থেকে যাচ্ছে। রাজশাহীর লোকাল মার্কেটে বেশি দাম হলেও ১০০ টাকা কেজি দরে রপ্তানির জন্য বিক্রি করছি। আমরা চাচ্ছি এই আম রপ্তানি হোক।

    ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আদব ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারি ইসমাইল হোসেন সাগর জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা ৫৫ মিনিটে যাত্রীবাহী বিমানে এই আম ইতালি পাঠানো হবে।

  • চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ যাবে ইতালিতে,রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত।

    চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ যাবে ইতালিতে,রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত।

    বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে সরাসরি পণ্য যাবে ইউরোপের দেশ ইতালিতে। বিষয়টিকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলছেন রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, সরাসরি যোগাযোগে ইউরোপে রপ্তানি বাড়বে; এতে সময় ও অর্থও বাঁচবে।

    শিল্প সংশ্লিষ্ট এবং বন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এতদিন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য ইউরোপে রপ্তানি হতো অন্য দেশের বন্দর হয়ে। সেখানে অনেকদিন অপেক্ষায় থাকতো হতো বড় জাহাজের বুকিং পেতে। এভাবে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পণ্য পৌঁছাতে সময় লাগতো ৪০ থেকে ৪৫ দিন, তাছাড়া খরচও বেশি হতো।

    সেসব ঝামেলা দূর করতেই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইতালিতে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটি-৪ এ নোঙর করেছে সরাসরি ইতালিগামী প্রথম জাহাজ ‘এমভি সোঙ্গা চিতাথ। এ জাহাজে ১৬ থেকে ১৭ দিনেই ইতালিতে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশি পণ্য।

    এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইতালি থেকে এমভি সোঙ্গা চিতা নামের একটি জাহাজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। জাহাজটিতে ৯৪৫ টিইইউএস (২০ ফুট দৈঘের্যর কনটেইনার সমতুল্য একক) খালি কনটেইনার রয়েছে।

    তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ইতালির এই রুটে সরাসরি যোগাযোগ হবে। জাহাজটি পণ্য  নিয়ে সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে। এতে রপ্তানি পণ্যের ৯৮ শতাংশই থাকবে গার্মেন্টস পণ্য।

    চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে সরাসরি জাহাজ চালু হওয়ায় কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি চালু হওয়ায়  কোনো ট্রানজিট লাগবে না, ট্রান্সশিপমেন্ট লাগবে না। আগে সিঙ্গাপুর হয়ে যেতো হতো। কিন্তু এখন জাহাজটি সরাসরি যেতে পারবে। এতে সময় ও অর্থ দুইই বাঁচবে।

    তিনি আরও বলেন, এমভি সোঙ্গা চিতা জাহাজটিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। পণ্য পরিবহন করতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে যাতে সঠিক সময়ে জাহাজটি সঠিক গন্তব্যে যেতে পারে।

    বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক যাত্রায় ইতালি থেকে খালি কনটেইনার নিয়ে পরীক্ষামূলক যাত্রায় চট্টগ্রামে ক্যাপ ফ্লোরেস নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। ইতালির ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান আরআইএফ লাইন এবং এটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্যালিপসো কোম্পানিয়া ডি নেভিগেশন চট্টগ্রাম-ইতালি সরাসরি জাহাজ চলাচলের এ সেবা চালু করছে।

    জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস লিমিটেডের চেয়ার‌ম্যান মোহাম্মদ রাশেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইতালি থেকে এমভি সোঙ্গা চিতা জাহাজটি আজকে চট্টগ্রামে এসেছে। এটি ৯৮৩ একক কনটেইনার পণ্য নিয়ে সোমবার ইতালির রেভেনা বন্দরের  উদ্দেশে  চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে। এসব কনটেইনারে ৯৮ শতাংশই পোশাক পণ্য থাকবে। সরাসরি জাহাজ চালু হওয়ায় খরচ ৪০ শতাংশ খরচ কমবে।আপাতত বাংলাদেশ থেকে একটি জাহাজ চলাচল করবে। সফল হলে জাহাজের সংখ্যা বাড়বে।

    বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে সরাসরি পণ্য পরিবহন চালু হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে পোশাক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

    সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে পণ্য পরিবহনের সময় অনেক কমে যাচ্ছে।যত তাড়াতাড়ি ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছাবে ততই তাড়াতাড়ি পেমেন্ট পাব। পেমেন্ট সংশ্লিষ্ট জটিলতা সহজ হয়ে যাবে। সরাসরি পণ্য পরিবহনে খরচও অনেক কমে আসবে।

  • বগুড়ার বইকচু বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি সৃষ্টি হয়েছে নারী-পুরুষের কর্মস্থা।

    বগুড়ার বইকচু বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি সৃষ্টি হয়েছে নারী-পুরুষের কর্মস্থা।

    গোলাম রব্বানী শিপন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বইকচু। এমনই দৃশ্য মিলেছে বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানহাটে। প্রতিদিন এই হাটে আশেপাশের কৃষকদের উৎপাদিত ছড়া কচু অর্থাৎ বইকচুর প্রচুর আমদানিতে ভরপুর।

    বগুড়া জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে, চট্টগ্রাম, ফেনী, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হচ্ছে। আর কচু পরিচর্যা কাজে কর্মস্থান যুগিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার শতশত নারী-পুরুষ।

    বর্তমান সময়ে কচুর মৌসুমে বগুড়ার মাটি ও আবহাওয়া ছড়া কচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় এ অঞ্চলে ফলনও ভালো হয় বলে জানিয়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

    মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মহাস্থান হ্টের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,রায়নগর ইউনিয়নের টেপাগাড়ী এলাকার কৃষক ফজলুর রহমান জানান, তিনি বইকচু চাষ করে লাভবান হয়েছেন। প্রায় ৩ বছর ধরে কচু চাষ করেন তিনি। এ বছর ৪বিঘা জায়গায় কচু চাষ করেছেন। তবে এবছর বইকচুর দাম কিছুটা কম। তারপরও ফলন খরচ বাদে লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদী।

    সদরের নামুজা ইউনিয়নের কৃষক হাফিজুর রহমান, একটি অটোভ্যান যোগে প্রায় ৫বস্তা কচু বিক্রি করতে হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, কচু চাষে উৎপাদন সময় একটু বেশি লাগলেও বাজার দর যদি ভাল হয় তাহলে অন্য ফসলের তুলনায় সময় পুষে যাবে।

    অন্যান্য ফসল বৈরী আবহাওয়ার কারণে নষ্ট হলেও কচু ফসলে তেমন বিরূপ প্রভাব পড়ে না। তিনি পুজিঁ উঠিয়ে বর্তমান সফল লাভের স্বপ্ন দেখছেন। তিনি প্রতিবছরই এই কচু চাষ করে বেশ লাভবান বলে জানান। গত প্রায় ৮ বছর ধরে বগুড়ার কৃষকরা বাণিজ্যিক সম্ভাবনার হাত ধরে বিকশিত হয়েছে ঝুকে পড়েছেন এই কচু চাষে৷

    মহাস্থানহাট থেকে কচু ক্রেতা আড়ৎ ব্যবসায়ী পাইকাড়, মুনছুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুর রশিদ, ও তোতা মিয়ার সাথে কথা বললে তারা জানান, কচু মৌসুমে তাঁরা শুধু এই বইকচুর ব্যবসা করেন। দূরের জেলার ব্যবসায়ীদের সাথে তাঁদের লেনদেন।তাঁরা মহাস্থান হাটের কচু কিনেন।

    এরপর এই কচুগুলো মহাস্থান মাহীসওয়ার ডিগ্রী কলেজের উত্তরপাশে “বিশাল সবজি আড়ৎ ভান্ডার” নামক আড়তে মজুদ করেন। সেখানে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক এই কচু বাচাই কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তাঁরা এই বইকচু মাড়াই করে ছোট-বড় ধরণ আলাদা করছেন।

    মঙ্গলবার মহাস্থানহাটের কচুর চলতি বাজার ছিল ৪০ থেকে ৭ শত টাকা প্রতি মণ। মহাস্থান বিশাল সবজি ভান্ডার ঘুরে দেখা যায়, নানা বয়সের নারী-পুরুষেরা কচু বাচাইয়ের কাজ করছেন। তাদের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। আর এ কাজে বেতন হিসেবে তাঁরা ২’শ থেকে ৩ শ টাকা পর্যন্ত প্রতিদিন পায়।

    সল্প সময়ে এ কাজ করে নগদ টাকা বুঝে পেয়ে অনেকের সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে বলে তাঁরা ব্যক্ত করেন।

    এবিষয়ে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এজাজুল কামালের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এবছরে ২শ হেক্টর জমিতে বইকচুর চাষ করা হয়েছে।

    আবহাওয়া ভালোর কারণে কচুগুলো বর্ধমান৷ বই কচু চাষ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বইকচু একবার চাষ করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। তবে প্রচুর পরিমাণ জৈব সার ব্যবহার করে পরের বছর কচু চাষ উপযোগী করে তুলতে হবে।

    পানি সেচের ব্যবস্থা থাকলে ফাল্গুন মাস (ফেব্রুয়ারি) বীজ বপনের সবচেয়ে ভালো সময়। কিন্তু যদি সে সুযোগ না থাকে তাহলে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং প্রথম বৃষ্টিপাতের পরপরই বীজ লাগিয়ে ফেলতে হবে। তবে বৈশাখের পর (এপ্রিলের পর) বীজ লাগালে ফলন খুব একটা ভালো হবে না।