সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার উদ্যোগে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ১২ জুলাই সোমবার সকালে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাড়াশ পৌরসভার উদ্যোগে ঈদ উপলক্ষে জি আর ’র বরাদ্দ থেকে এ টাকা বিতরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক মেজবাউল করিমের সভাপতিত্বে ২শ জন হতদরিদ্র ও দূঃস্থ পরিবারের মাঝে ৫শ টাকা করে নগদ বিতরণ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি।
এ সময় উপন্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান,প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম, পৌর সচিব আশরাফুল ইসলাম ভূইয়া,কাউন্সিলর জালাল উদ্দিন,আব্দুল সালাম,শামছুল আলম,আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু, বকুল হোসেন,সাইফুল ইসলামসহ অনেকে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ব্রীজের কাজ শেষ না হতেই গাইড ওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার কুন্দইল (ওয়াবদা ক্যানেল) কাটা গাং এর উপর নির্মিত আরসিসি গার্ডার ব্রীজ ও গাইড ওয়াল নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই গাইড ওয়াল ফেটে গেছে। বন্যার পানি আসার সাথে সাথেই এই গাইড ওয়াল যদি ফেটে যায় তাহলে বর্ষাকালে এর পরিস্থিতি কি হবে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অফিস সুত্রে জানা গেছে, জিপিবিআরআইডিপি প্রকল্পের আওতায় তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল বারুহাস হাট ভায়া প্রতিরামপুর রাস্তার কাটা গাং এর উপর ৬৯.০০মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ ও গাইড ওয়াল নির্মানের জন্য ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার ৭শ ৬৬ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে বরাদ্দ করা হয়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা । এলজিইডি সিরাজগঞ্জ বাস্তবায়নে তাড়াশ রায়গঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আজিজ ২১.০২.২০১৯ তারিখে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রীজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
কাজটি করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রফিকুল ইসলাম খান। ২বছর ৫মাস যাবৎ খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা ব্রীজ ও গাইড ওয়াল নির্মানের কাজ শেষ প্রান্তে প্রায়। এ দিকে চলনবিল এলাকায় বন্যার পানি আগমনের সাথে সাথে সদ্য নির্মিত গাইড ওয়ালে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় জনগন বলছেন, ভারী বর্ষণ ও কাটা গাং এ শ্রোত হলে ওই গাইড ওয়াল বিলের পানিতে বিলিন হয়ে যাবে।গাইড ওয়াল ধসে পরলে ব্রীজের মারাত্বক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ওই কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যানেজার জানান, এ অঞ্চলের মাটি শুকালে খুব শক্ত আর পানি পেলে নরম হয়। বন্যার পানি প্রবেশ করার কারনে গাইড ওয়াল ফেটে গেছে।পানি শুকালে ঠিক করে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে ব্রীজের ঠিকাদার মোঃ আব্দুল হাকিম কে বার বার ফোন করা হলে ও তিনি ফোন ধরেন নি।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আবু সায়েদ বলেন, কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হতেই পারে। তবে যে কোন সমস্যা হলে অবশ্যই তা পুনরায় ঠিক করে নেয়া হবে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নিজের তহবিল থেকে মানবিক সহায়তা দিয়ে করোনা পজিটিভ রোগীর পাশে দাঁড়ালেন বারুহাস ইউনিয়নের সুযোগ্য বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রভাষক মোক্তার হোসেন মুক্তা।
৯ জুলাই শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিমের নির্দেশনায় উপজেলার বিনসাড়া গ্রামের করোনা পজিটিব রোগী সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমানের বাসায় গিয়ে এই মানবিক সহায়তা দেন।(মানবিক সহায়তার মধ্যে ছিল চাল,ডাল,তেল,লবন ও আটাসহ অন্যান্য সামগ্রী ) জানা যায় গত ৮ জুলাই তারিখে তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরিক্ষা করলে উপজেলার মধ্যে ৭জনের পজিটিভ হয়।
এর মধ্যে বিনসাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের নাম থাকায় প্রশাসনের পক্ষ তাকে তার নিজ ভবনে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। মানবিক সহায়তা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জাকের পার্টির সভাপতি ইদ্রিস আলী, ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য আবু বক্কার,ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান সরকার,সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম,ইউনিয়ন চার নেতা পরিষদের সভাপতি বজলুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক আলমামুদ হোসেন প্রমুখ।
সিরাজগঞ্জের চলনবিলের তাড়াশে ঢাকিদের জীবন চলছে দুর্বিসহ। “কোভিড ১৯ ” করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্বের মানুষ যখন স্তম্ভিত হয়ে পরেছে।
ঠিক সেখান থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশের খেটে খাওয়া অভাবী ও অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। এমন টাই দেখা গেছে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামে বসবাসরত ঢাক ঢাকি বাজানো বাদ্যকর জনগনের চিত্র। বর্তমানে তারা অভাব ,অনাটনে বসবাস করছেন। ২ বছরের অধিক “কোভিড ১৯ ” করোনা ভাইরাসের কারনে সারা দেশের মানুষের পাশাপাশি তারা অসহায়ত্ব জীবন নিয়ে হতাশায় দিনাতিপাত করছেন।
এই পরিস্থিতিতে অন্য পেশায় নিয়োজিত মানুষদের কোন না কোন একটা কাজ কর্ম নিয়ে সংসার পরিচালনা করা কষ্টে হলেও চালাচ্ছেন। কিন্তু ঢাকিরা কোন ভাবেই চালাতে পারছেন না তাদের সংসার। তাদের সংসার চলতো বিয়ে, জন্মদিন, খেলাধুলা,পুজাসহ নানা ধরনের অনুষ্ঠানে ঢাক ঢোল বাজিয়ে।
করোনা ভাইরাসের কারনে এলাকায় কোন ধরনের অনুষ্ঠান না থাকায় তাদের কোন আয় হচ্ছেনা বরং তাদের বাজানো যন্ত্রপাতি গুলো অকেজ হয়ে যাচ্ছে। বছরে শুধু সনাতন ধর্মের পুজা গুলোতে কটা দিন ঢাকের বোল তুলে ৮ থেকে ৮০ বছরের সকলের মনে আনন্দের ঢেউ তোলেন, কিন্তু তাদের সারা বছর দুবেলা দুমুঠো অন্য জোটে না।
ঢাকের বোল তুলে মানুষের মনে আনন্দ দান করলেও সারা বছর নিজেরা থাকেন নিরানন্দে। তাই আর্থিক অনটনে থাকায় তাদের অন্য পেশায় কাজ করতে গেলেও হিমর্শিম খেতে হয়।
পুজোর সময় দুটো পয়সা উপার্জন করলেও বছরের বাকি সময় গুলোয় পরিবার নিয়ে তারা থাকেন চরম অর্থকষ্টে। তাই এই সময় তাদের পরিবার তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে। পুজোর ক’টা দিন কাঁধে ঢাক নিয়ে মন্ডপে মায়ের আরাধনায় ঢাক বাজিয়ে পুজোর সম্পূর্ণতা ফুটিয়ে তোলা ঢাকিরা পান ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।
বাকী সময় চরম আর্থিক অনটনে দিন কাটে তাদের। অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত মানুষদের সরকারী বিভিন্ন বরাদ্দ আসলেও এই বাদ্যকর পেশায় থাকা মানুষ গুলো পায় নি সরকারী কোন সহায়তা। তাই তারা সরকারের কাছে সহযোগীতা পাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
বিনসাড়া গ্রামের ঢাকি শ্যামল বাদ্যকর বলেন, সরকার অন্যান্য বাদ্যকরদের শিল্পী ভাতা প্রদান করছেন। আমরা ঢাক বাজাই, আমরাও শিল্পী অথচ সরকার আজও আমাদের শিল্পীর মর্যাদা দেননি। স্থানীয় সরকার ইউপি চেয়ারম্যান কিছুটা ২/১বার সহযোগীতা করলেও বড় কোন সহায়তার জন্য কেউই ফিরে তাকাননি আমাদের দিকে। আরও অভিযোগ করে বলেন, ভোটের ঢাকে কাঠি পড়লেই এই ঢাকি পাড়ায় তখন আসেন অনেকেই। হাজারও আশ্বাসের বানী শুনে রাজনৈতিক নেতারা ভোট নিয়ে চলে যান। এভাবেই দিন যায়। আমরা সেই দুর্দশার মধ্যেই দিন কাটাই। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের দিকে তাকিয়ে যেন সহযোগীতা করেন।
শ্রী গোপাল বাদ্যকর জানান, বিগত ২ বছর যাবত আমরা খুব কষ্টে আছি। শুনেছি সরকার বিভিন্ন জনকে সহযোগীতা করেছেন তবে আমাদেরকে দেন নাই। অনুষ্ঠানাদি না থাকায় আমরা অভাবে আছি। পারছি না জন বাচ্চা নিয়ে সংসার চালাতে।
এ বিষয়ে বারুহাস ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোক্তার হোসেন বলেন, বিনসাড়া গ্রামের বাদ্যকরদের সংসার চলতো ঢাক ঢোল বাজিয়ে। বাপ দাদাদের আমল থেকেই তারা এই পেশার সাথে জড়িত। করোনার কারনে সকল কাজ কর্ম কমে যাওয়ায় তাদেরও কাজ কর্ম কমে গেছে। ফলে তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। আমি মাঝে মধ্যেই তাদের কিছু সহযোগীতা দিয়ে আসছি। এবার ঈদের সামনে আবারো সহযোগীতা দেওয়া হবে। তবে তাদের পূর্নবাসনের জন্য সরকারী সহযোগীতা করা প্রয়োজন।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার তাড়াশ সদর বাজারে ও নওগাঁ হাটে সরকার কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন এ মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় তাড়াশ সদরে মোটর সাইকেল চালানোর অপরাধে ২ জনকে ১ হাজার টাকা ও নওগাঁ হাটে দোকান খুলে রাখার অপরাধে ২জনকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম, সহকারী কমিশনার ভূমি ওবায়দুল্লাহ, থানা অফিসার ইনচার্জ ফজলে আশিক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এর সদস্যগণ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম,তাড়াশবাসীর প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন সরকারের নির্দেশনা গুলো মেনে চলার জন্য। ঘরে থাকুন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন। নিয়মিত মাস্ক পরুন। তিনি আরোও বলেন সরকার কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন এ মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা অব্যাহত রাখবে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিলে পানি না থাকলেও উপজেলার উত্তরাঞ্চলের জনগন জলাবদ্ধতার কারনে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে। এমনটি ঘটেছে উপজেলার তালম ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম সহ পাশ্ববর্তী উপজেলা সিংড়ার ১০টি গ্রামে। এ সকল গ্রামের জনগনের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জন দুভোর্গ।
কয়েক দিনের বৃষ্টির বর্ষনে এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি প্রবাহিত ভদ্রাবতী নদীর মাঝে মাঝে স্থাপিত অবৈধ সুতি জালের বাধায় পানি বের হতে না পেরে আবাদী জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। রাস্তাঘাট গেছে পানির নিচে।
বসত বাড়ির উঠানে পানি উঠে বেরেছে সাপ ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব। বসত বাড়ীর দেওয়াল ভেঙ্গে পরেছে পানির মধ্যে। পুকুরের মাছ বের হওয়ায় আশঙ্কায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন মাছ চাষীরা। রোপা আমন ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়েছে। পারছেনা বিচনের চারা দিতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার মানুষের দুভোর্গ। কলামুলা ভাদাই ব্রীজ থেকে শুরু করে তালম নাগোড়পাড়া পর্যন্ত ভদ্রাবতী নদীর মাঝে মাঝে ১১টি সুুতি জালের বাধ। এই সুতি জালের বাধে পানি প্রবাহিত হতে না পেরে এলাকার জমিসহ রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বার বার সুতি জাল মালিকদের সমস্যার কথা বললেও তারা কোন কর্নপাত করেন নাই। সুতি জাল মালিকগন প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার খেটে খাওযা জনগন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারছেন না বলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পানিতে বসতবাড়ি ভেঙ্গে যাওয়া এক ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান রেজাউল করিম জানান, প্রায় ১ মাস যাবত এই পানিতে আমার ঘরবাড়ী ডুবে থাকায় দেওয়াল ভেঙ্গে পরেছে। আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। এ ছাড়াও আমার মতো আরও অনেক বাড়ি ঘর পানিতে ডুবে আছে।
কলামুলা গ্রামের বেল্লাল হোসেন বলেন, এই পানির কারনে এক আবাদ নষ্ট হয়েছে। সামনে রোপা ধান রোপন করবো। আমরা কোন ভাবেই বিচন চারা দিতে পারছি না। এই পানি যদি না নামে তাহলে রোপা ধান রোপন করা হবে না। আমরা না খেয়ে মরবো।
কোলাকুপা গ্রামের ফিরোজ উদ্দিন বলেন, সুতি জালের বাধায় পানি নামতে না পেরে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পারাপারে কলা গাছরে ভেলা তৈরী করে পরিবারের সদস্যরা পার হচ্ছি। এভাবে আর কতদিন চলতে হবে জানি না।
ওই এলাকার মোস্তাব আলী বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী চলনবিলে এখন গরু , বাছুর, ছাগল, ভেড়া ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছে আর আমাদের উচু এলাকায় পানিতে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছি। পানি বের করতে হলে প্রসাশনের হস্তক্ষেপে সুুতি জাল উচ্ছেদ করতে হবে। তবেই আমরা রক্ষা পাবো।
এই বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস-উজ-জামান বলেন, কতিপয় ১০ থেকে ১১জন লোকের সুবিধা দেখতে গিয়ে আমি তো বৃহৎ স্বার্থ ক্ষতি হতে দেব না। এলাকায় এই সুতি জালের কারনে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এটা অতি তাড়াতাড়ি উচ্ছেদ করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। সুতি জাল দিয়ে মাছ ধরা সম্পন্ন নিষেদ।সুতি জাল উচ্ছেদের অভিযান চলমান আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিমকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায় নি।
সিরাজগঞ্জের চলনবিল তাড়াশে ছোট মাছ ধরার জন্য এটাই শ্রেষ্ঠ কৌশল বলে মনে করেছেন কৃষক পেশার জনগন। এই কৌশল উপকরণ টির নাম বিভিন্ন এলাকায় চাই নামে পরিচিত থাকলেও এই অঞ্চলে এর নাম ধুন্দি বা ধিয়াল নামে পরিচিত।
চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলায় বন্যার পানি আগমনের সাথে সাথে গ্রামের খাল বিল হাওড়-বাওড় কিংবা নদীতে মাছ ধরার মহা উৎসব শুরু হয়েছে। মাছ ধরতে বিভিন্ন উপকরন ব্যবহার হলে ও চলনবিল অঞ্চলে ছোটমাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে পুরনো পদ্ধতির বাঁশের তৈরী (চাঁই ) যা তাড়াশ অঞ্চলে এর নাম ধুন্দি বা ধিয়াল।
এই ধুন্দি কেউ বা তৈরী করে আবার কেউ বা কিনে সেটা দিয়ে মাছ ধরে বিলাঞ্চলের বিভিন্ন কৃষক পেশার মানুষ সহ বিভিন্ন আয়ের মানুষ জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিনে উপজেলার নওগা হাটে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা শত শত ধুন্দি নিয়ে সারি বদ্ধ হয়ে বিক্রি করছে। এক একটি ধুন্দি বিক্রি করা হচ্ছে ৩শ থেকে ৪শ টাকায়। তবে বিক্রেতা ও ক্রেতারা খাজনা নিয়ে পরছেন বিপাকে। তবুও নিজেদের চাহিদা মিটাতেই ভির জমছে হাট গুলোতে।
বর্ষা শুরু হলেই বিশেষ পদ্ধতিতে বাঁশ দিয়ে তৈরী ওই সমস্ত ধুন্দি খাল, বিল ,নদী- নালায় ১০-১৫ হাত ফাঁকে ফাঁকে বানা দিয়ে বসিয়ে মাছ ধরা হয়। এতে চিংড়ি, মোয়া, পুঁটি, বেলে, টেংরাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ ধরা পরে। এতে সাধারণ জনগনের মাছ কেনা লাগে না । মাছে ভাতে বাঙ্গালীর ঐতিহ্য কথাটি ধরে রাখতেই সবাই এই সময় মাছ মারেন আবার কেউ কেউ টাকা আয়ও করেন।
ধুন্দি তৈরীর কারিগর ভাদাশ গ্রামের আজম আলী জানান, বঁাশ দিয়ে ধুিন্দ বাধতে হয় অনেক কষ্ট হলেও এটা টেকসই। বর্তমানে বাঁশের কাঠির পরিবর্তে শুধু বাঁশের চটা দিয়ে তৈরী ফ্রেমে জাল দিয়েও ধুন্দি বানানো হচ্ছে। তবে জালের তৈরী ফাঁদ অনেক সময় ছিঁড়ে যাওয়া বা কাঁকড়া কেটে ফেলার সম্ভবনা থাকে। তাই বিলাঞ্চলের মানুষ বাশের তৈরী ধুন্দি বেশী পছন্দ করে। বাঁশের ধুন্দির চাহিদা পুর্বে যেমন ছিল বর্তমানে আর ও বেরেছে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গ্রাম্য সালিশে প্রধানদের হুকুমে এক বৃদ্ধ মারপিট খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তালম ইউনিয়নের নামো সিলেট গ্রামে।
জানা গেছে ওই গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে আসাদ আলী (৫০) গ্রামের প্রধান ৬নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক রাজু আহম্মেদ’র নিকট একই গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের মেয়ে ইসরাত খাতুন মোহনার বিরুদ্ধে সালিশের আরজি জানালে গ্রাম্য প্রধানগন ২ জুলাই শুক্রবার বিকালে ওই গ্রামেই গোলাম রাব্বানীর বাড়িতে সালিশে বসে।
সালিশে উভয় পক্ষের জিজ্ঞাসাবাদ শোনা হলে সালিশী রায়ের পূর্ব মুহুর্তে ইসরাত খাতুন মোহনার ছোট ভাই দুলাল হোসেন প্রধানদের নিকট তার বোনের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে প্রধান রাজু আহম্মেদ হুকুম দিয়ে দুলাল হোসেনকে মারতে বলে। এমন সময় দুলাল দৌড় দিয়ে পালায়। তখন আসাদ আলী (৫০) পিতা মৃত মন্তাজ আলী,সাত্তার আলী পিতা: মৃত খাজী পাগলা,নুরুল ইসলাম (২৫) পিতা সাত্তার আলী,শাহিন রহমান (৩৫) পিতা আকবর আলী, মোন্নাফ হোসেন(২৫) পিতা: আসাদ আলী, হাশেম ও হোসেন সহ একটি দল তার পিতা বৃদ্ধ ইসরাফিল হোসেন (৭০)কে মারপিট করে আহত করে।
বাবার চিৎকারে মেয়ে ইসরাত খাতুন মোহনা কাছে আসিলে প্রধানগন তাকেও হ্যাস্ত ন্যাস্ত করে। মেয়ে বাবার অবস্থা খারাপ হতে দেখে তাকে নিয়ে তাড়াশ সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ বিষয়ে তাড়াশ থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানগনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোর্তজা হোসেন,আমিনুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, রফিজ উদ্দিন, সাইদুল মোহরীসহ অনেকে।
তালম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান হিরণ বলেন, সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম। শান্তিপূর্ন ভাবেই সালিশ চলতে ছিলো। হঠাৎ করে তর্ক বিতর্ক করতে গিয়ে হাতাহাতি হয়। আমি এ হট্টগোল থামানোর চেষ্টা করেছি। দু একজন বৃদ্ধ মানুষটিকে মারার কারনে সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। উভয় পক্ষকেই মিমাংসা করার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে অফিসার ইনচার্জ ফজলে আশিক বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার তাড়াশ সদর বাজারে ও নওগাঁ হাটে সরকার কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন এ মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় তাড়াশ সদরে মোটর সাইকেল চালানোর অপরাধে ২ জনকে ১ হাজার টাকা ও নওগাঁ হাটে দোকান খুলে রাখার অপরাধে ২জনকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা করার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম, সহকারী কমিশনার ভূমি ওবায়দুল্লাহ, থানা অফিসার ইনচার্জ ফজলে আশিক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এর সদস্যগণ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম,তাড়াশবাসীর প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন সরকারের নির্দেশনা গুলো মেনে চলার জন্য। ঘরে থাকুন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন। নিয়মিত মাস্ক পরুন। তিনি আরোও বলেন সরকার কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন এ মোবাইল কোর্ট ও টহল পরিচালনা অব্যাহত রাখবে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের পাটের বাম্পার ফলনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। আগামীতে ব্যাপক পাট চাষ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার পাট চাষে ভাগ্য খুলেছে চলনবিলাঞ্চলের চাষীদের।
চলনবিলাঞ্চলের পাটের মাঠ এখন সবুজে ঘেরা। অনেক কৃষকই পাট কাটতে শুরু করেছেন। বিস্তির্ণ মাঠজুড়ে পাট কাটার এমন চিত্র এখন চোখে পরবে এলাকায়। পাটের বাম্পার ফলনে মাঠে মাঠে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও পাটের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাটের বীজ, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য কৃষি উপাদানের দাম অনুকুলে থাকায় ও কৃষি অধিদফতরের উদ্যোগে এবং অফিসারদের পরামর্শে কৃষকেরা এবার পাট চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ করতে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, গত বছরে ২শ ১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার অফিসারগন কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে ৫শ ৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করছেন। বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের পাট চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়। যেমন দেশি, তোষা, মেশতা, রবি-১ মহারাষ্ট্র জাত।এসব জাতের পাট ১৫ থেকে ১৭ হাত লম্বা হয়। পাটের দাম বেশি পেলে চাষিরা পাট চাষে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের ঘরগ্রামের পাট চাষী আগের আলী জানান, চলতি মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। প্রতি বিঘায় ফলন পেয়েছি ১০ মণ। কৃষি বিভাগ থেকে আবারো সার্বিক সহযোগিতা পেলে সামনে পাটের আবাদ আরও করবো।
স্থানীয় আরেক জন পাট চাষী জবান আলী ফকির বলেন, আমরা পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট ছড়ানো ও শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। এবার খালে পানি থাকায় পাট জাগ দিতে কোনও সমস্যা হয়নি। এছাড়া, পাটের ফলন ভালো হওয়ায় প্রতি মন পাট ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।
চলনবিলে অবস্থিত তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, চলনবিলাঞ্চলে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্য সোনালি আঁশ হিসেবে পরিচিত পাট হারিয়ে যেতে বসেছিল । এই সোনালী আঁশ নাম ধরে রাখতেই আমরা এবার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। ভাল বীজ সংগ্রহ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে কৃষকের অর্থকরী ফসল পাট চাষ করানোর চেষ্টা করেছি।প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২মন পাট হচ্ছে। বাজারে প্রতি মন পাট ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ জাগবে।