Tag: হত্যা
-
কুলাউড়ার দশটেকি সীমান্তে ভারতীয়রা বাংলাদেশী যুবককে কুপিয়ে হত্যা।
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারে কুলাউড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় এক বাংলাদেশি যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় নাগরিকরা। রবিবার ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ইং, দুপুরে কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দশটেকি (নতুন বস্তি) এওলাছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে জেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।নিহত ব্যক্তি ওই এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আহাদ আলী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ গোলাম আপছার।জানা যায়, রবিবার দুপুরে জায়গাসংক্রান্ত বিষয়ে ভারতীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় বাংলাদেশি বাসিন্দা আহাদ আলীর। একপর্যায়ে ভারতীয় নাগরিক হায়দার আলী ও তার সহযোগীরা আন্তর্জাতিক সীমানা রেখার ৫ গজ ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে আহাদ আলীকে।এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় আহাদ আলীকে উদ্ধার করে কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। পরে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার বিকেলে আহাদের মৃত্যু হয়।সীমান্তবর্তী এলাকা শিকড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য শাহীন আহমদ বলেন, ভারতীয় নাগরিক ঘাতক হায়দার আলীর সাথে নিহত আহাদের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে জায়গা নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো ধরনের বিরোধ রয়েছে কিনা তা জানা নেই।সূত্র জানায়, ১০৮৩ এর ৩৪ এস এর ৫ গজ বাংলাদেশের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষে বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ করেছে বিজিবি।এবিষয়ে বিজিবির আলীনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার খায়ের জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো বক্তব্য দিতে পারবে না। আপনারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করুন।শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের (৪৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম জাকারিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে কোনো কথা বলেননি। তাই তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ গোলাম আপছার, মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ মর্গে আছে। হত্যাকারী ভারতীয় নাগরিক। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। -
মৌলভীবাজারে যুবদল নেতা নোমান হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার।
নিজস্ব প্রতিবেদক:মৌলভীবাজারের বড়লেখায় যুবদল নেতা নোমান হোসেন (৩৪) হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ইং, দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার বর্ণি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের দশঘরি গ্রামের ছবির মিয়ার ছেলে মারজান আহমদ (২৩) ও কালাইউরা গ্রামের আব্দুস সহিদের ছেলে রায়হান আহমদ রেহান (২৪)।জানা যায়, পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার বাড্ডা বাজারে যুবদল নেতা নোমানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।ঘটনার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। নোমান উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের রাঙ্গিনগর গ্রামের লেচু মিয়ার ছেলে। তিনি সুজানগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।এই ঘটনায় নিহত নোমানের বাবা লেচু মিয়া গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) বাদি হয়ে দশঘরি গ্রামের মারজান আহমদ, কালাইউরা গ্রামের রায়হান আহমদ রেহান, দশঘরি গ্রামের আবেদ আহমদ, নাঈম আহমদ ও জাকির আহমদের নামোল্লেখ এবং ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নোমান হোসেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি আগর-আতর ব্যবসা করতেন। নোমান রায়হান আহমদ রেহানের নিকট আগর ব্যবসার ২০ হাজার টাকা পান। কিন্তু রায়হান দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা না দিয়ে নোমানকে ঘোরাচ্ছিলেন। আসামিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে নোমান এলাকার মুরব্বিদের নিকট বিচার প্রার্থী হন।বিচার প্রার্থী হওয়ায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে নোমানকে প্রাণে হত্যার সুযোগ খুঁজে। ঘটনার দিন গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার সময় নোমান উপজেলার বাড্ডা বাজারের জনৈক জায়েদ আহমদের দোকানের সম্মুখে দাঁড়িয়ে পান খাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে আসামি মারজান আহমদ ও রায়হান আহমদ রেহান একটি মোটরসাইকেলে এবং আসামি নাঈম আহমদ, আবেদ আহমদ ও জাকির আহমদ অপর আরেকটি মোটরসাইকেল যোগে বাড্ডা বাজারে এসে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নোমান হোসেনের চারিদিকে ঘিরে ধরে তাকে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে নোমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছার পর নোমান হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাইয়ূম বলেন, নোমান হোসেন হত্যা মামলার দুই আসামিকে বুধবার গভীর রাতে আটক করা হয়েছে। তাদের আজকে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে তিনি জানান। -
পিলখান হত্যাকাণ্ডে ১৬ বছর পর ছেলের মুক্তি দেখে যেতে পরলো না বাবা।।
(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নেংটিহারা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম। স্থানীয় হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে বিডিআর বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) যোগ দেন। তার মা-বাবাও সেদিন স্বস্তির হাসি হেসেছিলেন। কিন্তু ছেলের চাকরিতে যোগ দেওয়ার ২৬ দিনের মাথায় ঢাকার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রবিউলের বাবা-মায়ের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলার আসামি হন রবিউল। সেই মামলায় তার সাজা হয়। তবে তার বাবা আব্দুর রহমানের বিশ্বাস ছিল যেহেতু ছেলে নির্দোষ, সে একদিন মুক্তি পাবেই। জমি-জায়গা বিক্রি করে ছেলের মুক্তির জন্য আদালতের চক্কর কেটেছেন দীর্ঘ দিন। এক সময় ছেলের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
অবশেষে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক মামলায় ২৫০ জনের জামিন মঞ্জুর করেন কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১। ২৫০ জনের মধ্যে রবিউল ইসলামও রয়েছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) কারামুক্তি পেয়েছেন রবিউল। তাকে এক পলক দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন তার স্বজনরা। কিন্তু যে বাবা দীর্ঘ ১৬ বছর ছেলের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন তিনি আর নেই। গত ৩ মাস আগে মারা গেছেন। ছেলের জন্য লড়াই করলেও আদুরের রবিউলকে শেষবারের মতো দেখে যেতে পারলেন না আব্দুর রহমান।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েকদিন পর সারাদেশে পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় বিস্ফোরক ও হত্যা মামলার নিরপরাধ বিডিআর জোয়ানদেন মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন তাদের স্বজনেরা। রবিউলের বাবাও ছেলের মুক্তির জন্য অসুস্থ শরীর নিয়েও রাস্তায় নামেন। আশায় বুক বেঁধেছেন। কিন্তু তার আশা পূরণ হলেও ছেলেকে আর দেখা হলো না।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৬ বছর কারামুক্তি পাবেন রবিউল ইসলাম (৩৪)। গত রোববার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ যে ২৫০ জন বিডিআর সদস্যকে খালাস দিয়েছে, তার মধ্যে একজন রবিউল ইসলাম।
রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রবিউলের কারামুক্তির খবরে খুশি মা, ভাই পরিবার-আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামের লোকজন। বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে শুক্রবার সকালে বাড়ীতে ফেরার কথা রয়েছে তার। ১৬ বছর তার ফেরার খবরে পরিবারের সাথে গ্রামের লোকজন তাকে একনজর দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।
আজ বিকালে রবিউলের বাড়ীতে গিয়ে জানা গেছে, এসএসসি পাশ করার পর চাকরি হয় রবিউলের। প্রশিক্ষণ শেষ করে যোগ দেন পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে। ২৬ দিনের মাথায় ঘটে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। এরপর থেকে কারাগারে রবিউল। প্রথমে একটি মামলায় ৭ বছর সাজাভোগ করেছেন রবিউল। সাজা খেটে বের হওয়ার কিছুদিন পরে আবার বিস্ফোরক আইনের একটি মামরায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে।
রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী জানান, চাকরি পাওয়ার পর বাবা ও মা খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই সব খুশি ম্লান হয়ে যায়। চাকরি করে উপার্জন করে রবিউল আমাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু তার উল্টো হয়েছে। রবিউল কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা খাওয়া খরচ। কিছুদিন পর পর কাপড়-চোপড় কিনে দেওয়া, আদালতপাড়ায় অনেক খরচ করতে হয়েছে। তার পিছনে খরচ করতে করতে পুরো পরিবার প্রায় নি:স্ব।
রবিউলের চাচা রেজাউল করিম জানান, ছেলের জন্য নানা দুশ্চিন্তায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন রবিউলের বাবা আব্দুর রহমান। ফিরবে ফিরবে বলে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে গত অক্টোবর মাসে মারা গেছেন। তার মা সালেহা খাতুন এখনও অসুস্থ, বোনের বাড়ীতে ঠাকুরগাঁও শহরে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। আজ যদি রবিউলের বাবা বেঁচে থাকতেন, রবিউলের বাড়ীর ফেরার খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন।
রবিউলের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রবিউল আর ফিরবে না, এমনটা ধরে নিয়েছিল পুরো পরিবার। গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ফলে রবিউল ফিরছে বাড়ীতে। ছোট সেই ছেলেটা এখন কত বড় হয়েছে, কেমন আছে। সেটা দেখার জন্য কবে ফিরবে, এমন খোঁজ খবর নিতে রবিউলের বাড়ীতে লোকজনের আসা যাওয়ার শুরু হয়েছে।
রবিউলের দাদী জমেলা বেগম জানান, ‘ছুয়াডা কোন অপরাধে নি করে, তাহু ছুয়াডাক ১৬ বছর জেলত থাকিবা হইল। এতদিন বাড়ীত থাকিলে বেহা করিলেহে, ওয়ার বাপ-মা নাতি-পুতির মুখ দেখিবা পারিলেহে।’
রবিউল ইসলামকে পুনরায় চাকরিতে পুনবর্হাল, একই সাথে দীর্ঘদিন বিনা অপরাধে কারাগারে থাকা এবং তার পেছনে খরচ করতে গিয়ে আর্থিক ভাবে যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি। তার ক্ষতিপুরণ সরকারের কাছে দাবি করেছেন রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী।
-
কানাইঘাটে পূর্বশক্রতার জেরে হত্যা সুরমা নদীর চরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার।
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের কানাইঘাটে আবারো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সালিক আহমদ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে লাশ সুরমা নদীর বালুচরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সাতবাঁক ইউনিয়নের লোভারমুখ বাজার থেকে নদী পার হয়ে বাড়ি ফেরার পথে হত্যাকান্ডের স্বীকার হন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষীপুর (মনিপুর) গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান ছেলে সালিক আহমদ। থানায় লাশ নিয়ে আসার সালিকের স্ত্রী ও ৭ ছেলে-মেয়েদের বার বার কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে খুনীদের ফাঁসির দাবী করেছেন।
নিহতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাতে লোভারমুখ বাজার থেকে কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছিলেন সালিক আহমদ। স্থানীয় চরিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের নৌকা দিয়ে সুরমা নদী পার হয়ে বাড়িতে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা ৮/৯ জন দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সালিক আহমদকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে লাশ নদীর বালুচরে ফেলে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌকার মালিক ফয়জুর রহমান গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তবে এ নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
নিহতের বড় ভাই আব্দুল খালিক সহ স্বজনরা জানান, অনুমান ২ মাস পূর্বে নিহত সালিকের ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে মাঠে গরু চরানো নিয়ে একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সায়েল আহমদের সাথে মারামারি হলে সায়েলের পরিবারের লোকজন জাহাঙ্গীরকে মারপিট করে। এতে তার পিতা সালিক আহমদ কানাইঘাট থানায় সায়েল আহমদ ও তার পিতা ইসলাম উদ্দিন সহ কয়েকজনকে আসামী করে অভিযোগ দেন।এ নিয়ে গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে সালিশ বিচার বসলে সালিশেও ইসলাম উদ্দিন গংরা সালিক আহমদের হামলার চেষ্টা করে। হামলার ঘটনায় আবারো থানায় সালিক আহমদ অভিযোগ দেন। কেন থানায় অভিযোগ দেয়া হলো এ নিয়ে ইসলাম উদ্দিন সহ তার আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের কতিপয় মাতব্বররা সালিক আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সমাজচ্যুত ও গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ সহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন। বিষয়টি সামাজিক ভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য সালিক আহমদ পাশর্^বর্তী সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া গ্রামের মুরব্বীয়ানদের স্মরনাপন্ন হলে তার প্রতিপক্ষ লোকজন আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এ ঘটনার জের ধরে প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির ইন্ধনে ও মদদে ইসলাম উদ্দিন, তার ভাই আশিক উদ্দিন গংরা সালিক আহমদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বলেন, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত সালিক আহমদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুনেছি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।
-
পিলখানা হত্যাকান্ডের বিচার ও বিডিআর সদস্যদের চাকুরীতে পুনর্বহালের দাবি।
(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সারাদেশে চাকুরীচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যকে চাকুরীতে পুনর্বহাল এবং পরিবারকে পূনর্বাসনসহ তিন দফা দাবীতে মানববন্ধন করেছে ঠাকুরগাঁও জেলা বিডিআর কল্যাণ পরিষদ।রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।এসময় সাবেক বিডিআর সদস্য শমসের আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সভাপতি মামুন অর রশীদ, বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সদস্য প্রমিলা রাণী সহ অনেকে।মানববন্ধনে তারা, ১৬ বছর ধরে জেলে বন্দী নির্দোষ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি এবং স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান। -
কালিয়াকৈর শিহান হত্যাকারীর ৬ সদস্য গ্রেফতার।
গাজীপুর(কালিয়াকৈর)প্রতিনিধিঃ
প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিনও ভোরবেলা হাতে দামী মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে শিহানের নিজ কর্মস্থলে যাতায়াত করতেন।ছিনতাইকারীরা ওই দামী মোবাইল ফোনকে টার্গেট করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পথ রোধ করে। তাদের কেউ চায়ের দোকানদার, কেউ পরিবহন চালক, কেউ কেউ পেশাদার ছিনতাইকারী।গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫ টা ২০ মিনিট।
শিহান অফিসে যাওয়ার পথে কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে গেলে সড়কের অপরপাশ থেকে আচমকা এসে শিহানকে পথরোধ করে আটকে দেয় ছিনতাইকারীরা। এসময় হাতের মোবাইলটি ছিনিয়ে নিতে গেলে বাধা দেয় শিহান। পরে ছিনতাইকারীদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোবাইল, মানিব্যাগ, ঘড়ি, এটিএম কার্ড নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা। দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত শিহান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনার পর নিহতের পিতা তানভির হোসেন নান্নু মিয়া বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার পর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ। প্রথমে একটি চোরাই মোবাইলের কারবারি আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়।সর্বশেষ সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে জেলার সালনা, কোনাবাড়ি, বাসন ও টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী ছয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—তাকওয়া পরিবহনের চালক ময়মনসিংহ ধোবাউরা উপজেলার আমগাছীহান্দা গ্রামের হালিমউদ্দিন সরওয়ার হোসেন (২৮), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম রৌমারি উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩৫), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম উলিপুর থানার মধুপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ফুল ইসলাম (৪২), আজমেরী বাসের হেলপার লক্ষ্মীপুর সদরের জামেরতলী গ্রামের মালেকের ছেলে জুয়েল (২৪), তাকওয়া বাসের স্টাফ জয়পুরহাটের মোহনপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মো. মিলন (২৭) এবং চায়ের দোকানদার ভোলার চরফ্যাশনের সুলতান বয়াতির ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ ছয়জন গ্রেফতারের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
-
নেতাকর্মীদের হত্যার বিচারের দাবীতে রামপাল কলেজ ছাত্রদলের মানববন্ধন।
রামপাল(বাগেরহাট)প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের রামপালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গুমের শিকার ছাত্রদলের সকল নেতা-কর্মী ও সকল নাগরিকের মুক্তির দাবিতে এবং আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ড, নির্যাতনের শিকার ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের নিপীড়নের ঘটনার যথাযথ বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রামপাল সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদল।মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রামপাল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আয়োজনে কলেজ গেইটে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মোল্যা তরিকুল ইসলাম শোভন, ছাত্রদলের সহসম্পাদক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন, ইমরান হাওলাদার তুহিন, অপু রায়হান।এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা শেখ রফিকুল ইসলাম, ইকরামুল সরদার, ইমরুল পারভেজ, পিয়াস প্রমুখ।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তা যেন আর ফিরে না আসে। আমরা আগামীতে মানবাধিকার ও সাম্যের বাংলাদেশ দেখতে চাই। মানবাধিকার দিবস আমাদের জনগণের জন্য। কিন্তু বিগত দেড় যুগ ধরে সরকার মানবাধিকার কুক্ষিগত করে রেখেছিল। বিরোধী দলের নেতাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যন্ত করেনি। এটা একটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা বিগত সরকারের আমলের সকল অনিয়মের বিচার চাই। -
জুড়ীতে জনসম্মুখে মায়া হরিণকে পিটিয়ে হত্যা।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৌলভীবাজারে জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে জুড়ী নদীর পাড়ে জনসম্মুখে আসা একটি মায়া হরিণকে লাঠির আঘাতে মেরে ফেলেছে একদল শিশু-কিশোর। প্রাণভয়ে সে পালানোর চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে লাঠির আঘাতে শেষ পর্যন্ত বন্য প্রাণীটি প্রাণ হারায়।রবিবার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, সকালে বন বিভাগের জুড়ী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ইং, জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের যোগীমোড়া এলাকায় জুড়ী নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে যোগীমোড়া এলাকায় একটি মায়া হরিণ দেখতে পায় স্থানীয় কিছু শিশু-কিশোরেরা। এরপর তারা এটিকে ধাওয়া দেওয়া শুরু করে। একসময় হরিণটি ক্লান্ত হয়ে জুড়ী নদীর পাড়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে হরিণটিকে ঘিরে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সেখানেই মারা যায় হরিণটি।বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খবর পেয়ে বন বিভাগের স্থানীয় কিছু কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত হরিণটিকে উদ্ধার করে উপজেলা সদরে অবস্থিত প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হরিণটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। পরবর্তীতে সেখানে চিকিৎসকেরা বন্য প্রাণীটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর বন বিভাগের লোকজন স্থানীয় পুঁটিছড়া বিটে নিয়ে হরিণটিকে মাটিচাপা দেন।শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, নদীর পাড়ে মৃত অবস্থায় মায়া হরিণটি পড়ে আছে। সেখানে শিশু-কিশোররা জড়ো হয়ে আছে। স্থানীয় এক ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের বলছে, হরিণরে মারল কিতার লাগি, এইটারে কে মারছে? জবাবে কয়েক শিশুকে বলতে শোনা যায়, আলতার ছেলে দেলোয়ারে মারছে।এ বিষয়ে বন বিভাগের জুড়ী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হোসাইন বলেন, শিশু-কিশোরদের ধাওয়ায় মায়া হরিণটি পাথরে আঘাত পেয়ে মারা যায় বলে তারা প্রথমে খবর পান। পরে জানা যায়, এটিকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাবারের সন্ধানে মায়া হরিণটি পুঁটিছড়া বন থেকে লোকালয়ে চলে এসেছিল বলে ধারণা করা যাচ্ছে বলে জানান তিনি। -
আইনজীবী হত্যার ঘটনায় মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও গায়েবানা জানাজা।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামে সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) হত্যার ঘটনায় মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন মৌলভীবাজার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও শিক্ষার্থীরা এবং অন্যদিকে গায়বানা জানাজার নামাজ আদায় করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সময়ে শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ ও বড়লেখা-সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ইং, দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।মৌলভীবাজার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ড. মোঃ আব্দুল মতিন চৌধুরী, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বকশী জুবায়ের আহমদ ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল, অতিরিক্ত সহকারী কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মোঃ দেলওয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট নেপুর আলী প্রমুখ।এদিকে চট্টগ্রামে আদালত চত্বরে কুপিয়ে হত্যা করা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের গায়বানা জানাজার নামাজ আদায় করেছে মৌলভীবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।।বুধবার (২৭ নভেম্বর) বাদ জোহর শহরের পশ্চিমবাজার জামে মসজিদে গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।এতে ইমামতি করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের শহর শাখা সাহিত্য সম্পাদক মাওলানা শাহ মুস্তাকীম আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সুমন ভূইয়া, জাকারিয়া ইমন-সহ অন্যান্যরা। জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল আলা মওদূদ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রমুখ। -
কানাইঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা-হত্যাকারী গ্রেফতার।
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ কানাইঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রবাসী ছেলের সামনে পিতাকে কোপিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ধলিবিল দক্ষিণ নয়াগাও গ্রামে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকান্ডের মূল ঘাতক এলাকার বহু অপকর্মের হুতা সুলতান আহমদ (৫০) কে গ্রেফতার করেছে। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো রাম দা উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধলিবিল দক্ষিণ নয়াগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের পুত্র ফয়জুল হোসন (৬৮) কে আপন চাচাতো ভাই মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র সুলতান আহমদ বসত বাড়িতে নৃশংস ভাবে ধারালো রাম দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপিয়ে জবাই করে ঘটনাস্থলে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর ঘাতক সুলতান আহমদ সে তার চাচাতো ভাই ফয়জুল হোসনকে হত্যা করেছে বলে এলাকাবাসী ও থানা পুলিশের সামনে বিরদর্পে স্বীকার করে।
স্থানীয়রা জানান, ফয়জুল হোসেন এর সাথে সুলতান আহমদ এর বসত বাড়ির জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত কয়েকদিন থেকে ধারালো দা নিয়ে সুলতান আহমদ চাচাতো ভাই ফয়জুল হোসনকে হত্যার পরিকল্পনা করছিল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে যখন ফয়জুল হোসন তার প্রবাসী ছেলে আলী রাজাকে নিয়ে নিজ বসত ঘরে ছিলেন। তখন ধারালো রাম দা নিয়ে সুলতান আহমদ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফয়জুল হোসেন ও তার প্রবাসী ছেলের দিকে দা নিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। তখন প্রবাসী আলী রাজা প্রাণ রক্ষার্থে সরে গেলে সুলতান আহমদ রাম দা দিয়ে ফয়জুল হোসনের মাথা ও গলায় এলোপাতাড়ি কোপিয়ে জবাই করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সুলতান আহমদকে তার বসত ঘরে ঘেরাও করে রেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে থানা পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে সুলতান আহমদকে নিজ বসত ঘর থেকে গ্রেফতার করে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা রাম দা জব্দ করে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে কাতার প্রবাসী আলী রাজা বাদী হয়ে থানায় সুলতান আহমদ সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সুলতান আহমদ তার চাচাতো ভাই ফয়জুল হোসনকে কোপিয়ে হত্যা করেছে এবং সে নিজেও হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আপন চাচাতো ভাই ফয়জুল হোসেনের হত্যাকারী সুলতান আহমদ এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। সে সব-সময় এলাকায় দা নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করত। তার ভয়ে আপন ভাই ও চাচাতো অপর ভাইয়েরা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে সিলেট শহরে বসবাস করছে বলে জানান।