Tag: শীত
-
শীতের আনাগনা শুরু ব্যস্ত সময় পাড় করছে লেপ-তোষক তৈরির কারিগর।
নাহিদ মিয়া,মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি।“বইতে শুরু করেছে শীতের হাওয়া। ধীরে ধীরে বাড়ছে এর তীব্রতা। এরই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জনপদের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর (ধুনকর) ও ব্যবসায়ীদের।কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। সন্ধ্যা নামলেই অনুভূত হচ্ছে শীত। পাতলা কাঁথার মানছে না শীত। তাই হিমেল ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন লেপের উষ্ণতার। শীতের তীব্রতা বাড়ার আগেই মানুষ ভিড় জমাচ্ছে লেপ তোষক তৈরির বেডিং স্টোরগুলোতে। দিনে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে সকালে সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে শীত।মাধবপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক লেপ-তোষক তৈরির দোকানে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পাড় করছেন ধুনকররা। শীতের আগমনকে উপলক্ষ করে দোকানগুলোতে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। হিমেল ঠান্ডায় শরীরকে সতেজ রাখার জন্য বিশেষ করে লেপের চাহিদা বেড়ে যায়। শীতের প্রচন্ড ঠান্ডায় হাড়কাপানো পরিস্থিতি রাতের নিদ্রায় একটু আরামের জন্য লেপের উষ্ণতা প্রশান্তি এনে দেয়। তাইতো বেড়েছে লেপ-তোষক তৈরি ধুনকরদের ব্যস্ততা।এছাড়া ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে উপজেলার হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটে।হিমেল শীতের পরশ থেকে উষ্ণতা পেতে কেউ পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক করছে। আবার কেউ নতুন তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকে উঠিয়ে রাখা লেপ-তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।উপজেলার বিভিন্ন বেডিং আর কটন শোপ দোকানগুলোতে গিয়ে তাদের কর্ম ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। কারিগররা কেউ তুলো ধুনছে, কেউ ব্যস্ত লেপ-তোষক সেলাইয়ের কাজে, কেউ বা লেপে হরেকরকম ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন। শীত মৌসুমেই তাদের সারা বছরের ব্যবসায়িক হিসাব মেলাতে হয়।মাধবপুর উপজেলার অর্ধশতাধিক কারিগর শীত মৌসুমে লেপ-তোষক তৈরি করে সারা বছর সংসার চালানোর মতো অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেন। তাই শীত মৌসুমি এ ব্যবসায় একটু বেশি বিক্রির জন্য দিন-রাত সমানতালে পরিশ্রম করছেন তারা।বর্তমানে বাজারে শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা তুলা ১১০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা করে দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। প্রতিপিছ লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হচ্ছে ১২০০ থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বিভিন্ন রকমের দামী-কমদামী তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে।প্রতিদিন একজন কারিগর পাঁচ থেকে ছয়টি লেপ তৈরি করতে পারেন। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করলে তাদের ৩০০ থকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। শীত মৌসুমের শুরুর দিকে কাজের চাপ বেশি থাকে। এ সময় প্রতিদিন তাদের ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ থাকে।ক্রেতা আলাকপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, শীত মৌসুম চলে আসছে। এখন আর পাতলা কাঁথায় শীত মানছেনা। তাই পুরোনো লেপ নতুন করে তৈরি করতে এসেছি। কাপড় ও তুলার দাম বাড়ার কারণে খরচ বেশি লাগছে।লেপ কিনতে আসা মজীনা বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, ছেলের জন্য একটা লেপ কিনতে এলাম। গত বছর যে লেপ ১৩০০ টাকায় নিয়েছি এবছর সমমানের লেপই ১৬০০ টাকায় কিনতে হলো।উপজেলার মাধবপুর বাজার ধান সংলগ্ন ইকরা এন্ড নিষপা বেডিং ষ্টোর লেপ-তোষক ব্যবসায়ী মোঃ সৈয়দ মিয়া বলেন, শীত মৌসুমের আগমনে ক্রেতারা নতুন লেপ তোষক কিনে নিচ্ছেন।অনেকে আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। শীত মৌসুমে বেচা-বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আয় রোজগারও বাড়ে। বছরের অন্যান্য সময়ের মন্দাভাব পোষিয়ে নিতে এখন সমান তালে কাজ করছি।মেসার্স ভাই ভাই বেডিং ষ্টোর মালিক মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, ‘সারা বছরই টুকিটাকিষ্টোর বেচা-কেনা হয়। তবে শীত মৌসুমের শুরু থেকে দোকানে কাজের চাপ বাড়ে। বিক্রিও ভাল হয়। কাপড়, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ- তোষক তৈরির খরচ কম বেশি হয়। কাপড় ও তুলার মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবার খরচও কিছুটা বেড়েছে। তবে শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষকের চাহিদা আরও বাড়বে। আমি ৪- ৫ হাত লেপ বিক্রি করছি ৫ কেজি তুলা দিয়ে ১৩০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকায়। আর তোষক বিক্রি করছি ১৭০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকায়। -
মাধবপুরে শীতের আগমনী বার্তায় বেড়েছে লেপ তোষকের চাহিদা।
নাহিদ মিয়া, মাধবপুর(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি: শীতের আগমনী বার্তায় চা বাগান কোলঘেঁষা হবিগঞ্জ জেলা মাধবপুরে শীত নিবারণের উপকরণ তৈরির ব্যাস্ততায় ফিরছে লেপ- তোষক কারিগররা। শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। আর এই শীত জেঁকে বসার আগেই ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা।এ মাসেই উপজেলায় শীতের আমেজ অনেকটা শুরু হয়েছে। ভোররাতে হালকা ঠান্ডা আর সকালের মৃদু শীত শীত ভাব বলে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীতের আগমনী বার্তা।
সেইসঙ্গে ভোরের মিষ্টি রোদে মাঠের সবুজ ঘাসের গায়ে লেগে থাকা শিশির বিন্দুর ঝলকানি শীতের সকালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে উপজেলাবাসীকে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে শীতের আগমনী বার্তা শীতকালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না। গ্রাম বাংলায় আজও প্রবাদ আছে আশ্বিনে গা করে শিন-শিন। কিন্তু প্রকৃতির লীলা খেলায় কার্তিক মাসের শেষ ভাগে সকাল হলেই ঘন কুয়াশার আচ্ছন্ন আর শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে।
আবার সূর্য ওঠার কয়েক ঘণ্টার পরেই রোদের তাপে শীত কুয়াশা দূর হয়ে গরমে ঘাম ঝরছে এই এলাকার মানুষের।এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারারাত ধরেই মাঝারি ধরনের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরনের রোগের পাদুর্ভাব কিছুটা দেখা দিয়েছে।এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারারাত ধরেই মাঝারি ধরনের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরনের রোগের পাদুর্ভাব কিছুটা দেখা দিয়েছে।লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে।মাধবপুর উপজেলা, ধর্মঘর, চৌমুহনী,মনতলা,শাহাজানপুর,জগদীশ, মাধবপুর সদরে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিত আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে।মাধবপুর উপজেলার পৌরসভা বাজারে লেপ-তোষক ব্যবসায়ী ইকরা এন্ড নিষপা বেডিং ষ্টোর, মোঃ সৈয়দ মিয়া জানান,এ সময়ে অনেকে ক্রেতারা নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের জন্য লেপ-তোষক,বালিশসহ শীতবস্ত্র বানাতে দিচ্ছেন ও অনেকেই আবার বানিয়ে নিয়েছেন।
তবে লেপ-তোষক তৈরির কাঁচামাল তুলা ও কাপড়ের দাম একটু বেশি।তিনি আরও বলেন, বাজারে প্রতি কেজি গার্মেন্টস তুলা (সাদা) ৮০ থেকে ১২০ টাকা, গার্মেন্টস তুলা (কালো) ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শিমুল তুলা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, কার্পাস তুলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। আরেক মাধবপুর বাজারে ব্যবসায়ী মোঃ ইলিয়াস মিয়া জানান, এ বছর লেপ-তোষক তৈরিতে গত বছরের চেয়ে দুই থেকে তিনশত টাকা বেশি লাগছে। তাছাড়া একটি তোষক এক হাজার থেকে দুইহাজার পাঁচশত টাকায় বিক্রি হচ্ছে।