সোহেল হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় করোনার সময় অতিরিক্ত আয়কর আদায় এর প্রতিবাদে পৌরসভার আপামর জনসাধারন সতস্ফুর্তে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। একদিকে করোনা মহামারি, আর অন্যদিকে পৌর নাগরিকদের মাথার উপর লাগামহীন আয়করের বোঝা। এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভাতে। গেল কয়েক অর্থ বছরে চেয়ে চলতি অর্থ বছরে কয়েকগুণ পৌরকর ধার্য্য করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পৌরসভার নাগরিকরা। অতিরিক্ত আয়করের প্রতিবাদে বুধবার (৮ সেপ্টম্বর) বেলা ১১টার দিকে তারা মানববন্ধন পালন করেছে।
লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে শহরের উত্তর তেমুহনীতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী পৌরবাসিন্দারা। এতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
পৌর মেয়র আবু তাহের নিয়ম বহির্ভূতভাবে পৌরবাসীর ওপর সীমাহীন কর চাপিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
পৌর বাসিন্দারের দাবি, নাগরিক হিসেবে তারা পৌরসভা থেকে তেমন কোন সেবা পাচ্ছেন না। কিন্তু প্রতি বছর পৌর কর পরিশোধ করে আসছেন। তার উপর চলতি বছরে পৌরকর কয়েকগুন নির্ধারণ করা হয়েছে। যা তাদের সাধ্যের বাহিরে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূর্বের ১ হাজার ৫০০ টাকার করের স্থলে নতুন করে ৭৩ হাজার টাকার নোটিশ দিয়েছেন। ৭ হাজার টাকার করের স্থলে ১১ লাখ টাকার নোটিশ দিয়েছেন। ২০০ টাকার করের স্থলে ৩ হাজার টাকার নোটিশ দিয়েছেন।করোনাকালীন এ সময়ে করের এমন নোটিশ পৌরবাসীর কাছে পুরোই বোঝা ও হতাশাজনক।
এক মেয়াদে একবার করারোপ করার কথা থাকলেও পৌর মেয়র নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনবার কর নির্ধারণ করেছেন। অবিলম্বে দ্রুত পৌর কর কমিয়ে পৌরবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান বক্তারা।
পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেনা জানিয়ে মাননবন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, পৌর এলাকার বেশিরভাগ সড়ক গর্তে ভরা। বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে থাকে। সুপেয় পানির লাইন থাকলেও নিয়মিত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরেও পানির বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। পৌরসভার নিজস্ব ভবন ভেঙে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু বিগত কয়েক বছর থেকে পৌরসভার কার্যক্রম অস্থায়ী কার্যালয়ে করা হচ্ছে। পৌরসভার নিজস্ব ভবন না থাকায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাস বলেন, আমাদের একটি সুন্দর পৌরভবন ছিল। কিন্তু পৌরমেয়র আবু তাহের ওই স্থানে আধুনিক বিপণিবিতান তৈরি করেছেন। এখন ওই মার্কেটে জুতা আর পরোটা বিক্রি হয়। মানুষ পৌরভবন খুঁজে পান না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, জেলা পরিষদের প্যানেল মেয়র ফরিদা ইয়াসমিন লিকার বাড়ির ট্যাক্স এক হাজার টাকা ছিল। তাকে ৮০ হাজার টাকার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এভাবে সবার করই বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলব, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, আওয়ামী লীগ নেতা বদরুল আলাম শাম্মি। এরা প্রত্যেকেই আগামী পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এছাড়া মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা এহতেশাম হায়দার বাপ্পী, রেজাউল করিম জেনি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হোসেন লোটাসসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার দুই শতাধিক নারী-পুরুষ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আবু তাহের আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দেননি। তবে তিনি বলেন, কে কি করছে তা আমার জানার দরকার নেই। সরেজমিন পৌরবাসীর কাছ থেকে খবর নিয়ে দেখেন কর বাড়ানো হয়েছে না কমানো হয়েছে।