Tag: রাণীশংকৈল

  • রাণীশংকৈল নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৭ জন নির্বাচিত।

    রাণীশংকৈল নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৭ জন নির্বাচিত।

    ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকসহ ৭ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি পদগুলোতে আগামী ২১ জানুয়ারি ভোট হবে।

    বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন সাধারণ সম্পাদক পদে সুমন পাটোয়ারী, অর্থ সম্পাদক মনিরুজ্জামান কাজল, সহ-সভাপতি মনির হোসেন, সহ-সম্পাদক মুক্তার হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আবুল হোসেন, কার্যকরী সদস্য নিরেন চন্দ্র রায় ও দপ্তর সম্পাদক মো. দুলু।

    এর আগে গত রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়ে পাঁচটি পদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদক পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

    গত রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে পাঁচ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এর আগে সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদক পদে কেউ মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ না করায় যাচাই বাছাই শেষে তাঁরা একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।

    সংগঠনের নির্বাচন কমিশনার রমজান আলী গতকাল বলেন, মোট ১১ পদের মধ্যে ৭টি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে প্রার্থীরা। আগামী ২১ জানুয়ারি বাকি চারটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

  • রাণীশংকৈলে সমাজসেবা দিবসে প্রতিবন্ধীদের সুদমুক্ত ঋনের চেক বিতরণ।

    রাণীশংকৈলে সমাজসেবা দিবসে প্রতিবন্ধীদের সুদমুক্ত ঋনের চেক বিতরণ।

    নারী পুরুষ নির্বিশেষ সমাজসেবায় গড়বো দেশ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈলে সমাজ সেবা দিবস পালন করা হয়েছে।

    এ উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের আয়োজনে রবিবার (০২জানুয়ারি) সকালে একটি র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি  শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে হলরুমে  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

    এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।শাহরিয়ার আজম মুন্না  বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী বেগম সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সইদুল হক পৌরমেয়র আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক মহিলা আ.লীগ সম্পাদিকা ফরিদা ইয়াসমিন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

    সমাজসেবা দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম।

    আলোচনা শেষে বিনামূল্যে বয়স্ক বিধবা ভাতা কার্ড বিতরণ ও প্রতিবন্ধীদের সুদমুক্ত ঋনের চেক বিতরণ করা হয়।

  • পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখরিত রাণীশংকৈলের শিমুলগাছ!

    পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখরিত রাণীশংকৈলের শিমুলগাছ!

    চারদিকে সবুজের শ্যামলে সমারোহের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শিমুলগাছ। বিকেলের সোনালি রোদে গাছের ডালে ডালে পানকৌড়ির পালক জ্বলজ্বল করে উঠে।গাছটিতে একসঙ্গে এত পানকৌড়ি দেখে শতব্যস্ততার মধ্যেও অনেক পথচারী একটু দাঁড়িয়ে চোখ জুড়িয়ে নিচ্ছেন। আর তা দেখে প্রাণ জুড়ায় ওই গাছের মালিক যাদব রায়ের।

    যাদব রায়ের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা থেকে কাঠালডাঙ্গী যাওয়ার সড়ক ঘেঁষা কেউটান গ্রামে।

    যাদব রায় বলেন,পাখিদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। আর এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে কত মানুষ দেখতে আসে। দেখে ভালো লাগে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে শীতের মৌসুম কমে গেলে ওরা যখন চলে যায়, তখন বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আবার যখন ফিরে আসে তখন বুক ভরে যায়। পাখির কারণে ক্ষতি হলেও, সব ক্ষতি আমি নিয়েছি মেনে।

    সরেজমিনে দেখা গেল,কুলিক নদীর পাশে সব গাছ ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে আছে একটি শিমুলগাছ। শিমুলগাছের ডালে ডালে শুধু পানকৌড়ি আর পানকৌড়ি। কত যে পানকৌড়ি,তার হিসাব নেই। পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখর চারদিক। আর এই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেছে অনেক মানুষ।

    আর এই পাখিগুলোর নিরাপদ অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে গাছটি। পাখিগুলোর কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। পাখিগুলো দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ।

    তবে স্থানীদের অভিযোগ,আগের মতো এবারে একটু কম দেখা মিলছে এই পাখিদের। কারন ইদানিং কিছু মানুষ হাতে বন্ধুক নিয়ে এসে পাখিগুলো শিকার করছেন। পাখিগুলো শিকার না করার জন্য বলা হলেও তারা কোন কথা শোনে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই সাথে পানকৌড়ি পাখি শিকার বন্ধ করার দাবী জানান স্থানীয়রা।

    কেউটান গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল ইমলাম বলেন, রাতে পাখিগুলো শিমুল গাছটিতেই থাকে। সকাল হলেই পাখিগুলো বেড়িয়ে পড়ে খাদ্যের খোঁজে। আবার সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে গাছটিতে। দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এই পানকৌড়ি পাখিগুলো শিমুল গাছটিকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে বাস করছে। এক সময় এ গাছটিতে প্রচুর পরিমাণে পাখি ছিল। কিন্তু পাখি শিকারীদের কারণে তার সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে।

    পাখিপ্রেমী রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন,পাখিগুলোর কারণে ঐ এলাকার সৌন্দর্য ফিরে পায়। পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রচুর ভুমিকা রাখে। তাই পানকৌড়ি পাখিগুলোর নিরাপত্তা সহকারে পরিচর্যা করলে পাখির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। শিমুল গাছটি যেন নিরাপদে থাকতে পারে সেজন্য প্রশাসনকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)সোহেল সুলকান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন,পাখি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য ধরে রাখে। তাই পাখিদের প্রতি সকলকে সহনশীল হতে হবে। পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনিক তৎপরতা আরো জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি।

  • রাণীশংকৈলে উদ্বোধনের ৩৪দিন পর পাঁকা রাস্তার ফাটল

    রাণীশংকৈলে উদ্বোধনের ৩৪দিন পর পাঁকা রাস্তার ফাটল

    ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড় ঘিরে মিনি পার্কের ৫২০ মিটার নবনির্মিত রাস্তা উদ্বোধনের ৩৪ দিনের মাথায় প্রায় ১২ স্থানে ফাটল ধরেছে। কাজের মান নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলসহ সাংবাদিকেরা প্রশ্ন তুললে রাস্তার ফাটল তড়িঘড়ি করে মেরামত করা হয়েছে।

    এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ এর কাছে এই রাস্তার ব্যয় ও কাজের মানের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

    জানা গেছে,এডিবি ও রাজস্ব মিলে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই মিনি পার্কসহ রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।

    এর আগে উপজেলা পরিষদ মিনি পার্ক হিসেবে গত ২২ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ দবিরুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুর রহমানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এ সময় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাবেক সাংসদ অধ্যাপক ইয়াসিন আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান শাহারিয়ার আজম মুন্না, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রীতম সাহা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সইদুল হকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

    গত বৃহস্পতিবার মিনি পার্কের রাস্তায় ফাটল নিয়ে ইউএনও’র দৃষ্টি আকর্ষণ করে এর নির্মাণ ব্যয় ও কাজের মান নিয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।রোববার বিকালে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় ফাটলের স্থানগুলোতে বালু-সিমেন্টের প্রলেপ লাগিয়ে মেরামত করা হয়েছে।

    এ সময় সেখানে উপস্থিত উপজেলা আ’লীগের সদস্য তারেক আজিজ এই প্রতিবেদককে দেখে বলেন,‘ছবি তুলে কী করবেন? দুদিন পরে আরও ফাটবে,তখনই ভালো করে ছবি তুলিয়েন। এত বড় একটি স্থাপনা পরিকল্পনাহীনভাবে নির্মাণ করায় এমন অবস্থা। তা ছাড়া টাকা তো আর কম খরচ করেনি। একটু ভালোভাবে নির্মাণকাজ করলে এমনটা হতো না।’

    এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সাংবাদিকদের বক্তব্য কেন দেবে না। ইউএনও বক্তব্য না দিলে তিনি ঠিক করেননি।’ তা ছাড়া পুকুর পাড়ের কাজে অনিয়ম হলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

  • রাণীশংকৈলে শীত বস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাহিল ছিন্নমূল শ্রমজীবীরা।

    রাণীশংকৈলে শীত বস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাহিল ছিন্নমূল শ্রমজীবীরা।

    শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। তা ছাড়া এই সময়ে  ঠান্ডাজনিত রোগেও ভুগছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

    ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর,ধর্মগড়,লেহেম্বা, সন্ধারই,নয়ানপুর,হাটগাঁও,ক্ষুদ্র বাশঁবাড়ী ও রাউতনগরসহ বেশ কিছু এলাকার দিনমজুরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীত বস্ত্রের অভাবে অনেকে ঠান্ডায় কাহিল হচ্ছেন।

    দিন দিন হিমেল হাওয়া বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। এতে প্রশাসন থেকে তেমন পদক্ষেপ না নিলেও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

    সন্ধারই এলাকার প্রতিবন্ধী আব্দুস সবুর ‍মিয়া বলেন, ‘হাঁটা চলা করতে পারি না। দিনের রোদে কিছুটা স্বস্তি পেলেও রাতে আর ভোরে ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়ি। প্রতিবন্ধী হয়েও একটি কম্বল বা শীত বস্ত্র পায় না।

    রাণীশংকৈলে সরকারিভাবে চেয়ারম্যান মেম্বার ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা না গেলেও কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে রাণীশংকৈল ফেসবুক ব্যবহারকারী গ্রুপের সদস্যদের শীতবস্ত্র বিতরণে ভালোই তৎপরতা দেখা গেছে।

    উপজেলার আট ইউপির মধ্যে পাঁচটিতে সদ্য নির্বাচন হওয়ায় নতুন চেয়ারম্যানেরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না। তবে বাকি তিন চেয়ারম্যানের মধ্যে হোসেনগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম বলেন,মাত্র ২৫০টি কম্বল উপজেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া গেছে। এখনো তা বিতরণ করা হয়নি।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন,এত বড় একটি ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত কম্বল আসলে অনেক কম।

    উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকার খগেণ বিশ্বাস ও মালা রাণী বিশ্বাস জানান, মাছ ধরে পরিবারের দিনের খরচ মেটাতে পারছেন না তাঁরা, সেখানে গরম কাপড় কেনা স্বপ্নের মতো। তাই শীতে কষ্ট করে দিনরাত পার করতে হচ্ছে তাঁদের।

    আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে রাণীশংকৈলে ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। রবিবার ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

    উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুস সামাদ চৌধুরী জানান,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।

  • স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রাণীশংকৈলে বধ্যভূমি বেদখল,অরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ ! 

    স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রাণীশংকৈলে বধ্যভূমি বেদখল,অরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ ! 

    আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
    মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করে  নিরীহ গ্রামবাসীদের। মরদেহ ফেলে দেয়া হতো খুনিয়াদিঘীতে। গণহত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হয় মরদেহ।
    কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হয়নি। সেটি এখনো রয়েছে বেদখল হয়ে।
    ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলার সীমান্তবর্তী হরিপুর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাতে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী রানীশংকৈলে এসে ক্যাম্প স্থাপন করে। এসব ক্যাম্প থেকেই  অপারেশন চালাতো পাক বাহিনী।
    বিভীষিকাময় টর্চার সেলে মুক্তিযোদ্ধাসহ তাদের সহায়তাকারী ও বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো। সাধারণ নারী-পুরুষদের ধরে এনে বায়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে সারা শরীর রক্তাক্ত করার পর গুলি করে হত্যা করে মরদেহ ফেলে দেয়া হতো খুনিয়াদিঘীতে। তবে ক্যাম্পে কত বাঙালি মুক্তিকামী নারী-পুরুষকে হত্যা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসেব নেই কারও কাছে।
    মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সহায়তা করার জন্য রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুর রহমান ও তার সহোদরকে খুনিয়া দীঘির পাড়ে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয় । দীঘি পাড়ের শিমুল গাছে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের তালুতে লোহার পেরেক মেরে ঝুলিয়ে রেখে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বর্বর র্নিযাতন চালিয়ে পরিশেষে গুলি করে হত্যা করা হয়। কখনো কখনো হত্যার পূর্বে লোকজনকে নিজেদের কবর খুঁড়তে বাধ্য করা হত। হত্যার পরে দীঘির পাড়ের উঁচু জমিতে মাটি চাপাও দেওয়া হয়েছে ।
    স্থানীয় মুক্তিযোদ্বা হাবিবর, আবু সুফিয়ান ও মোতালেব বলেন ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি আর্মি রাজাকার আলবদর আর আলশামসেদের সহায়তায় ৩ হাজারের বেশি মানুষকে খুনিয়া দীঘিতে হত্যা করে পানিতে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে। লাশের স্তুপে পরিণত হয়েছিল খুনিয়াদিঘী। অনেক লাশ শিয়াল-কুকুরে ছিঁড়ে খেয়েছে। এর ফলে সেসময় মানুষের রক্তে দীঘির পানির রং হয়ে যায় ঘন খয়েরি। রক্ত  লাশ কঙ্কালে ভরপুর খুনিয়া দীঘি নামটি আরো সার্থক হয়ে খুনিয়াদিঘীতে পরিণত হয়।
    দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীঘি থেকে উদ্ধার করা মানুষের হাড়গোড় দীঘির পাড়ে একটি গর্ত করে মাটি দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হয়। এবং শহীদদের স্মরণে দীঘিপাড়ের ওই জায়গাটিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
    ১৯৭৩ সালে জাতীয় চার নেতার মধ্যে অন্যতম আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান এটিকে উপজেলার স্মৃতিসৌধ হিসেবে ঘোষনা দিয়ে এর শুভ উদ্বোধন করেন।
    অথচ সেই ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ খুনিয়াদিঘীটি স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বেদখল হয়ে ব্যক্তি-মালিকানায় রয়েছে।
     উদ্ধারে প্রশাসনের তেমন তৎপরতা না থাকারও অভিযোগও উঠেছে।
    বেদখলের পর মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তে রঞ্জিত খুনিয়াদিঘী বধ্যভূমিটি পুণরায় ২০১৬ সালের মে মাসে বিনা বাধায় উপজেলা সাব-রেজিষ্টার অফিসের মাধ্যমে দলিল দস্তখতে বিক্রি হয়ে যায়। তবে বিক্রি হওয়ার খবর প্রশাসন না রাখলেও স্থানীয় সংবাদকর্মিরা ঠিকই রাখে। স্থানীয় সাংবাদিকরা সবার প্রথম ২০১৭ সালে এপ্রিল মাসে খুনিয়াদিঘী বিক্রির তথ্যটি সংগ্রহ করে স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। পরে খুনিয়াদিঘী বিক্রির সংবাদটি ব্যাপকভাবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়। তবে এত প্রচার প্রচারণাও মধ্যে আজও খুনিয়াদিঘীটি বেদখল রয়েই গেছে।
    উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়নের ভাণ্ডারা গ্রামের খুনিয়া দীঘি বধ্যভূমিটি ২০১৬ সালের মে মাসে বিক্রি করে দেন মালিক দাবি করা এক ব্যক্তি। যার বাবা তৎকালীন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছ বন্দোবস্ত নিয়ে ছেলেদের নামে দলিল করে দেন। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মিদের তৎপরতায় ২০১৭ সালে ওই বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে রিভিশন মামলা আজও লাল ফিতায় ফাইল বন্দি হয়ে রয়েছে।
    হোসেনগাঁও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জাহেরুল ইসলাম জানান, ব্রিটিশ ১ নম্বর খতিয়ানে খুনিয়া দিঘী টি মোট ৫ একর ৬৮ শতক জমির উপর। যার মালিক ছিলেন রাজা টঙ্কনাথ। রাজা টঙ্কনাথ স্থানীয় কুসুমউদ্দীনের কাছে খুনিয়া দিঘী, বানিয়া দিঘী ও মোর দিঘীর জলকর মাছ চাষ করা শর্তে ৪২৯ নম্বর খতিয়ান করে দেন। কুসুমউদ্দীন ১৯৮২ সালের ২১ জুলাই ঐ খতিয়ানের কপি দিয়ে তৎকালীন দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে দিঘী তিনটির খাজনা খারিজ দেওয়ার জন্য আদেশ নেন।
    একই বছরের ১২নং দলিল মূলে ছেলে হামিদুর রহমানের নিকট খুনিয়া দিঘীর জলকর ২ একর ১৮ শতক জমি বিক্রি করেন তিনি। হামিদুর রহমান আবার ২০১৬ সালের মে মাসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন খুনিয়াদিঘী।
    সে হিসাবে খুনিয়া দিঘীটি বিক্রি হয়েছে দু’বার।
    ভুমি কর্মকর্তা আরো জানান, আমরা ইতিমধ্যে আবারো নথি যাচাই বাছাই করে এবং সমস্ত আইনি জটিলতা নিরসনের নিমিত্তে একটি প্রতিবেদন জেলা প্রশাসনের বরাবরে পাঠানো হয়েছে। আশা রাখছি খুব শিগগির খুনিয়াদিঘীর মালিকানার জটিলতা নিরসন হবে।
    সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুনিয়াদিঘীর জলকরটিতে ব্যক্তি মালিকানায় মাছ চাষ চলছে। পাশে দিঘীর পাড়ের পূর্ব প্রান্তে  নির্মিত বধ্যভূমি স্বাধিনতার ৫০ বছরেও অরক্ষিত অবস্থায়  রয়েছে। এক গবেষণেয় বের হয়েছে, ওইসব বধ্যভূমিতে ৩ হাজারের অধিক লোক গণহত্যার শিকার হয়েছে। পুকুর পাড়ের উত্তর প্রান্তে সদ্য নতুন আরেকটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। সেটিও অরক্ষিত এবং নাজেহাল হয়ে পড়েছে।
    স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ইতিমধ্যে দিঘীটির চারপাশের পাড়ের অনেক মাটি কেটে পুকুরটি সম্প্রসারিত করা হয়েছে। প্রশাসন যদি পাড় কাটার দিকে নজর না দেয় তাহলে এক সময় দিঘীর পাড় আরো কেটে ফেলা হতে পারে আশংকা তাদের। অন্যদিকে পাড় কাটার ফলে সদ্য নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটির উত্তর- দক্ষিণ পাশে ধসে যাওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে।
    খুনিয়াদিঘীর বিক্রেতা হামিদুর রহমান বলেন, খুনিয়া দিঘীর জলকরের মালিক আমি আর দিঘীর পাড়ের মালিক সরকার । অর্থনৈতিক সংকটের কারণে  গত ২০১৬ সালের মে মাসে স্থানীয় আবুল কাশেমের স্ত্রী ফাতেমার কাছে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় খুনিয়া দিঘীর জলকরটি বিক্রি করে দিয়েছি।
    বীরমুক্তিযোদ্বা হাবিবর রহমান বলেন, অব্যশই খুনিয়াদিঘী ইতিমধ্যে সরকারের তত্বাবধানে থাকা উচিত ছিল। খুনিয়াদিঘী মানেই রাণীশংকৈলের স্বাধীনতা রাণীশংকৈলের বিজয়ের নির্দশন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।আশা রাখছি সমস্ত জটিলতা শেষ করে খুব শিগগির স্থানীয় প্রশাসন সরকারের দখলে খুনিয়াদিঘীটি নেবে।
    তবে মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ অনেকে আক্ষেপ করে বলেছেন, বিজয়ের দিন আসলেই আমরা শহীদদের কথা মনে করি। শুধু একটি দিনের মধ্যে এদের স্মরণ করা দুঃখজনক। যাদের জন্য আমরা লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি, পেয়েছি স্বাধীন একটি রাষ্ট্র, তাদেরকে সবসময় স্মরণে রাখতে হবে। আর তাদের স্মৃতি ধরতে রাখতে বধ্যভূমি সংরক্ষণ অতি জরুরি।
    উপজেলা সহকারী সেটলমেন্ট অফিসার আফসার আলী বলেন, ২০০৬ সালের ভূমি জরিপে খুনিয়াদিঘীর জমিটি এখনও খাস খতিয়ান হিসেবেই আমাদের দপ্তরে লিপিবদ্ধ রয়েছে। এ লিজ জমি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
    উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ইদ্রজিত সাহা বলেন আমরা ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। অব্যশই দ্রুত এর মালিকানার সমস্যাটি সমাধান হবে।
    ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম  মুঠোফোনে বলেন ইতিমধ্যে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসনে একটি লিখিত পত্র দিয়েছিল। সেই পত্রটিতে তথ্য ঘাটতি এবং আবেদন প্রক্রিয়া সঠিক না হওয়ায় পরবর্তীতে সঠিক নির্দেশনা দিয়ে খুনিয়াদিঘী উদ্ধারে একটি রিভিউ মামলা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিভিউ করা হলে খুব শিগগির মালিকানার জটিলতা নিরসন হবে।
  • রাণীশংকৈলে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব।

    রাণীশংকৈলে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব।

    নোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

    শীত মৌসুম পুরোপুরিভাবে শুরু না হলেও ভেজাল খেজুরের গুড়ে সয়লাব ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হাট বাজারগুলোয়। বিভিন্ন জেলা থেকে এসব ভেজাল গুড় এনে বাজারজাত করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে উপজেলার সাধারণ মানুষ।

    জানা যায়,মৌসুমের আগেই উপজেলার  বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে শীতের পিঠা বিক্রি। এতে চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে পাটালি ও খেজুরের গুড় বিক্রি। রাণীশংকৈল উপজেলায় গুড় ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ২৫ জনের মত।

    বেশি লাভের আশায় শীত মৌসুমের আগেই নাটোর রাজশাহী নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ভেজাল পাটালি ও খেজুর গুড় কিনে আনছেন তাঁরা। নিম্নমানের ঝোলা ও নরম গুড় গলিয়ে তাতে চিনি, রং,হাইড্রোজ,সোডা,ফিটকিরি,পাথুরে চুন ও বিশেষ গাছের ছালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা হয় এসব গুড়। গুড়ের চাহিদা ও উৎপাদন খরচ পুষিয়ে নিতে প্রতি ১০ লিটার রসে দুই কেজি চিনি মেশানো হয়।

    গুড়ের রং ফরসা ও গুড় শক্ত করতে মেশানো হয় চিনি।এই গুড়ে প্রকৃত স্বাদ-গন্ধ থাকে না। এই গুড় প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    নেকমরদ এলাকার গুড় ব্যবসায়ী মোকসেদ আলী বলেন,আমরা বাইরে থেকে পাইকারি দরে গুড় কিনে এনে বিক্রি করছি। ভেজালের বিষয়টা আমার জানা নেই।

    উন্মে হাবিবা নামে এক গৃহিণী বলেন,বাজারে খেজুরের গুড় দেখলাম,তাই ছেলেমেয়ে পিঠা খাওয়ানোর জন্য কিনলাম। তবে এতে ভেজাল আছে কিনা জানি না।

    রাণীশংকৈল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের মেডিকেল আবাসিক অফিসার ডাক্তার ফিরোজ আলম বলেন,যদি এসব গুড়ে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো হয়ে থাকে,তবে তা হার্ট ও কিডনিসহ স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে মনে করেন তিনি।

    জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ সাদি আহমেদ বলেন,ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ভেজাল গুড় বিক্রেতাদের দ্রুত বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • রাণীশংকৈলে হঠাৎ বেড়েছে কলার দাম।

    রাণীশংকৈলে হঠাৎ বেড়েছে কলার দাম।

    আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

    রমজান মাসে কলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়ে যায়। কিন্তু কারণ ছাড়াই ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে হঠাৎ কলার দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজার থেকে হাতবদলে খুচরা বাজারে দাম হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ। ভোক্তারা জানান, ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে কলা এখন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।

    সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার নেকমরদে পাইকারি বাজার কলাহাটিতে প্রতি কাঁদি বড় আকারের মালভোগ ৮০০-৯০০ টাকা, মাঝারি আকারের ৬০০-৭০০ টাকা, চিনি চম্পা ৫০০-৬০০ টাকা ও সাগর ৪৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    রাণীশংকৈলে পৌরশহরের ইউসুফ ফল ভান্ডারের ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী জানান, চাহিদার তুলনায় আমদানি কম। অন্যদিকে খরচও ব্যাপক। যার জন্য দামও বেশি।

    আরেক বিক্রেতা নওশাদ হোসেন জানান, কলাবাগানের মালিকদের কাছ থেকে চড়া দামে কলা কিনতে হয়। খাজনা ও পরিবহন খরচও বাড়তি। যার কারণে চড়া দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হন।

    খুচরা বাজারে কলা কিনতে এসেছেন নার্গিস পারভীন নামে এক শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগেই প্রতি হালি মালভোগ কলা কিনেছি ১৫-২০ টাকা। এখন সেই কলাই ৩০-৩৫ টাকায় কিনতে বাধ্য হলাম। হাটবাজারে প্রশাসনের মনিটরিং না করায় সুযোগ নেন অসাধু কলা ব্যবসায়ীরা।’

    জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শেখ শাদী আহমেদ বলেন, দু-এক দিনের মধ্যেই কলার বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যাঁরা কারসাজি করে কলার দাম বেশি নেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • রাণীশংকৈল কৃষক জিম্মি করে সারের কৃত্তিম সংকট;বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ।

    রাণীশংকৈল কৃষক জিম্মি করে সারের কৃত্তিম সংকট;বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ।

    আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি: কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সব উপজেলাতে ডিলার ও খুচরা সার বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। বিশেষ করে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার অনেক বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। যদিও কৃষি অধিদপ্তর সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে।

    কৃষকদের অভিযোগ,তাঁদের কাছ থেকে সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও ডিলাররা কোনো রসিদ দিচ্ছেন না। কেউ কেউ রসিদ দিলেও তাতে সরকার নির্ধারিত দাম দেখাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে সার বিক্রি করবেন না জানিয়ে দিচ্ছেন বা ক্রেতার কাছে বিক্রি করা সার কেড়ে নিয়ে রেখে দিচ্ছেন। ডিলারদের কাছে এভাবে জিম্মি হয়ে তাঁরা অসহায় বোধ করছেন। তবে এ বিষয়ে  ডিলারদের দাবি, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে বাজারে সারের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই সার বিক্রি করছেন তাঁরা।

    কৃষকেরা বলছেন, সার কিনতে গেলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সংকটের কথা বলেন। তবে দাম বেশি দিলেই সার বের করে দিচ্ছেন। এ ছাড়া কিছু কিছু ডিলার দোকানে মূল্যতালিকা টাঙিয়ে রাখলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করছেন না। এমনকি সরকারি দরের রসিদ দিলেও বাড়তি দরের রসিদ দিচ্ছেন না।

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাণীশংকৈল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার প্রতি বস্তা (৫০ কেজির বস্তা) টিএসপি সারের খুচরা মূল্য ১ হাজার ১০০ টাকা (২২ টাকা প্রতি কেজি), এমওপি প্রতি বস্তা ৭৫০ টাকা (১৫ টাকা কেজি), ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ও ইউরিয়া প্রতি বস্তা ৮০০ টাকা (১৬ টাকা কেজি) নির্ধারণ করে দিয়েছে।

    ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি ডিসেম্বর মাসে জেলায় ২ হাজার ৫৫৩ মেট্রিক টন টিএসপি, ৩ হাজার ১৭৫ মেট্রিক টন এমওপি, ৭ হাজার ৭৩ মেট্রিক টন ডিএপি এবং ৭ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ডিলারদের ৩০২ মেট্রিক টন টিএসপি, ৫৩৬ মেট্রিক টন এমওপি, ১ হাজার ৮৮৬ মেট্রিক টন ডিএপি এবং ১ হাজার ২১২ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয়েছে।

    এসব সার বিসিআইসির ৬৩ এবং বিএডিসির ১৪০ জন ডিলারের মাধ্যমে জেলার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত ৯৮ মেট্রিক টন টিএসপি, ৩৮৬ মেট্রিক টন এমওপি এবং ৩১২ মেট্রিক টন ডিএপি উত্তোলন করেছেন ডিলাররা।

    রবি মৌসুমে জেলায় আলু, ভুট্টা, ধান, শর্ষেসহ ব্যাপক সবজির উৎপাদন হয়। এসব ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে জমিতে কৃষকেরা টিএসপি, এমওপি, ডিএপি ও ইউরিয়া সার ব্যবহার  করেন।

    রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া এলাকার কৃষক মুন্জর হোসেন (৪৫) বলেন, তিনি মঙ্গলবার নেকমরদ বাজারে এক ডিলারের দোকানে এক বস্তা টিএসপি ও এক বস্তা পটাশ কিনতে যান। প্রথমে ডিলার তাঁকে টিএসপি সার নেই বলে জানিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলার পর ডিলার তাঁকে দুই বস্তা সার বের করে দেন। প্রতি বস্তা টিএসপি ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং এমওপি ১ হাজার ১০০ টাকায় দেন।

    মুন্জর হোসেন  বলেন, সরকারি দামে প্রতি কেজি টিএসপি ২২ টাকায় বিক্রি করার কথা; দোকানদার তা বিক্রি করছেন ৩২ টাকা। বস্তাপ্রতি টিএসপি সার ৫০০ টাকা এবং এমওপি ৩৫০ টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে। রসিদ চাইলেও তাঁরা বাড়তি দামের রসিদ দেননি।

    উপজেলার রাতোর গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, কয়েক দিন আগে  একজন খুচরা সার বিক্রেতার কাছ থেকে প্রতি বস্তা টিএসপি সার দেড় হাজার টাকায় কিনেছেন। রসিদ চাওয়ায় দোকানদার তাঁর সারের বস্তা কেড়ে নিচ্ছিলেন।

    বাড়তি দরে সার বিক্রির অভিযোগ পেয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. শেখ সাদী জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান। সে সময় তিনি সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির সত্যতা পান। তিনি সদর উপজেলার আরিফ ট্রেডার্স ও পীরগঞ্জের হাবিবুর রহমান ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।

    এদিকে আজ বুধবার সকালে অভিযান চালিয়ে শহরের নিউ ঐশি বীজ ভান্ডারের মালিক এনামুল হককে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান।

    এর আগে গত সোমবার বাড়তি দামে সার বিক্রি, কৃষককে রসিদ না দেওয়ার অভিযোগে রানীশংকৈলের রাউতনগর বাজারের হাসান ট্রেডার্সের মালিক হাসান আলীকে ৫ হাজার টাকা, নেকমরদ বাজারের মেসার্স আল ইমরান ট্রেডার্সের মালিক খায়রুল আলমকে ১০ হাজার টাকাসহ দুই ব্যবসায়ীকে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন রানীশংকৈলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা।

    রানীশংকৈল উপজেলার কাতিহার হাট এলাকার সার ব্যবসায়ী আনছার আলী বলেন, অন্য জায়গা থেকে বেশি দামে সার কিনে এনে এখানে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, এখন সারের কোনো ঘাটতি নেই। এরপরও কোথাও কোথাও সংকটের অজুহাতে বেশি দামে সার বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রির জন্য তাঁদের তদারকি অব্যাহত রয়েছে।

    এ বিষয়ে বিসিআইসির ডিলারদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান বলেন, তাঁদের সমিতির সদস্যরা সরকার নির্ধারিত দামের বাড়তি দামে সার বিক্রি করছেন না। অনেক জায়গায় অনুমোদনহীন কিছু ব্যবসায়ী জেলার বাইরে থেকে সার সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রি করে থাকতে পারেন। এর দায় তাঁরা নেবেন না।

    ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত দামের বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ আসছে। যেখানেই অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানেই অভিযান চলছে।

  • রানীশংকৈলে বিদ্যুৎ শকে অটোভ্যান চালকের মৃত্যু।

    রানীশংকৈলে বিদ্যুৎ শকে অটোভ্যান চালকের মৃত্যু।

     

    আসাদুজ্জামান (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ

    ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার আমজুয়ান-ডামকাটলি গ্রামে মঙ্গলবার ১৯ অক্টোবর সকালে বিদ্যুৎ শকে সাদ্দাম হোসেন(৩০) নামের এক অটোভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে । দুই সন্তানের জনক সাদ্দাম হোসেন ওই গ্রামের দবিরুল ইসলামের ছেলে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সোমবার দিবাগত রাতে সাদ্দাম হোসেন তার বাড়িতে নিজের অটোভ্যান বিদ্যুৎ চার্জে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে বৃষ্টিপাতের কারনে অটোভ্যানের বডি বিদ্যুতায়িত হয়ে।ঘটনার দিন সকালে সে গাড়িটির চার্জার খুলতে গেলে বিদ্যুৎ শক লেগে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

    এ বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার ওসি( তদন্ত) আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, খবরটি আগে পাওয়া যায়নি,তবে এখন এর খোঁজখবর নিচ্ছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ বর্মনও এ খবর এখনো পাননি বলে জানান তিনি।সাদ্দামের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।