Tag: নদী

  • পাউবোর অবহেলায় তুরাগ নদীর জল পথ মৃতপ্রায়।

    পাউবোর অবহেলায় তুরাগ নদীর জল পথ মৃতপ্রায়।

    স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশের ঢাকা ও গাজীপুর জেলার অংশ নিয়ে তুরাগ নদীর বিস্তৃতি।তুরাগের দৈর্ঘ্য ৬২ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৮২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।
    বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক তুরাগ নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ২৫। এটি ঢাকা শহরের সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া ৪টি নদীর মধ্যে ১টি। এই নদীর গভীরতা ১৩.৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন প্রায় ১ হাজার ২১ বর্গ কিমি।
    একসময় এই তুরাগ নদীকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক অপার কর্মযজ্ঞ থাকলেও আজ তা প্রায় নেই বললেই চলে।নদীর দুই পাশ অবৈধ দখল,যত্রতত্র মনুষ্য বর্জ্য, শিল্প কারখানার দূষিত পানি ও বর্জ্য মাছে ভরা একসময়কার এ নদীকে আজ করেছে মাছ শুন্য।তুরাগের বিস্তৃত নৌপথ ব্যবহার করে একসময় হাজার হাজার মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য থাকলেও আজ সময়ের পরিক্রমায় দূষিত নদীতে জায়গায় জায়গায় পলি জমে নাব্যতা কমে নৌরুটটি হয়েছে পুরোপুরি বন্ধের উপক্রম।
    বিশাল এই নৌরুটের গাজীপুরের কড্ডা থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত নৌরুটের আশুলিয়া বাজার,তৈয়বপুর, নর্থ টাউন,ধনঞ্জয়খালী,কাশিমপুর জেলেপাড়া,মাইমুন টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন জায়গায় ডুবো চরের সৃষ্টি হয়ে পণ্যবাহী নৌযান,বাল্কহেডসমূহ চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে বিপত্তির। এ বছর শুষ্ক মৌসুম শুরুর পর থেকেই বারবার নৌরুটের বিভিন্ন অংশে বাল্কহেড ও পণ্যবাহী নৌযান আটকে থাকার খবর প্রচার হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সাধারণ যাত্রী থেকে নৌযান চালক এমনকি ইজারাদারসহ সকলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ জানানোর পরও নদীর বুকে জেগে উঠা ডুবোচর গুলোকে ড্রেজিং বা খননের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় নি।ফলে এ পথটি এখন বাল্কহেড ও বড় নৌযানের জন্য চলাচলের প্রায় অযোগ্য।অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে যেসব নৌযান এ পথে চলছে তারাও মাঝেমধ্যেই দিনের পর দিন বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকছে।
    এ যেমন গত ৪ দিন ধরে এম.ভি হামিম-২ এবং সাইফুল এন্ড শান্ত নামের দুটি বাল্কহেড আটকে আছে নদীর আশুলিয়া বাজার ও জেলেপাড়া অংশে।৪ দিনে হাজার হাজার টাকা লসে থেকে আফসোসের সুরে বাল্কহেড মাষ্টার আবেদ বললেন,’আমরা এই নদীপথটিতে মাঝেমধ্যেই আটকে যাচ্ছি।আর্থিক ক্ষতির মুখে থেকেও এ পথটি ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।কিন্তু আয়ের অনিশ্চয়তার কারণে গত ৪ দিন আটকে থাকার পর বাল্কহেডের দুজন কর্মচারী চাকুরী ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে রেখেছি ওদের।চেষ্টা করছি নদীর এ অংশ থেকে বের হওয়ার।’
    এ বিষয়ে এ নৌরুটের ইজারাদার মৃধা জুয়েল রানা বলেন,’আমার ইজারা নেয়ার শুরু থেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।এ সমস্যাগুলোর সমাধান চেয়ে বিআইডব্লিউটিএকে বারবার লিখিতভাবে জানালেও নাব্যতা সংকটসহ অন্যান্য সমস্যাগুলোর সমাধানে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।’
  • কানাইঘাটে পূর্বশক্রতার জেরে হত্যা সুরমা নদীর চরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার।

    কানাইঘাটে পূর্বশক্রতার জেরে হত্যা সুরমা নদীর চরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার।

    কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ

    সিলেটের কানাইঘাটে আবারো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সালিক আহমদ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে লাশ সুরমা নদীর বালুচরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
    গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সাতবাঁক ইউনিয়নের লোভারমুখ বাজার থেকে নদী পার হয়ে বাড়ি ফেরার পথে হত্যাকান্ডের স্বীকার হন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষীপুর (মনিপুর) গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান ছেলে সালিক আহমদ। থানায় লাশ নিয়ে আসার সালিকের স্ত্রী ও ৭ ছেলে-মেয়েদের বার বার কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে খুনীদের ফাঁসির দাবী করেছেন।
    নিহতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাতে লোভারমুখ বাজার থেকে কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছিলেন সালিক আহমদ। স্থানীয় চরিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের নৌকা দিয়ে সুরমা নদী পার হয়ে বাড়িতে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা ৮/৯ জন দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সালিক আহমদকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে লাশ নদীর বালুচরে ফেলে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌকার মালিক ফয়জুর রহমান গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তবে এ নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
    নিহতের বড় ভাই আব্দুল খালিক সহ স্বজনরা জানান, অনুমান ২ মাস পূর্বে নিহত সালিকের ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে মাঠে গরু চরানো নিয়ে একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সায়েল আহমদের সাথে মারামারি হলে সায়েলের পরিবারের লোকজন জাহাঙ্গীরকে মারপিট করে। এতে তার পিতা সালিক আহমদ কানাইঘাট থানায় সায়েল আহমদ ও তার পিতা ইসলাম উদ্দিন সহ কয়েকজনকে আসামী করে অভিযোগ দেন।

    এ নিয়ে গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে সালিশ বিচার বসলে সালিশেও ইসলাম উদ্দিন গংরা সালিক আহমদের হামলার চেষ্টা করে। হামলার ঘটনায় আবারো থানায় সালিক আহমদ অভিযোগ দেন। কেন থানায় অভিযোগ দেয়া হলো এ নিয়ে ইসলাম উদ্দিন সহ তার আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের কতিপয় মাতব্বররা সালিক আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সমাজচ্যুত ও গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ সহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন। বিষয়টি সামাজিক ভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য সালিক আহমদ পাশর্^বর্তী সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া গ্রামের মুরব্বীয়ানদের স্মরনাপন্ন হলে তার প্রতিপক্ষ লোকজন আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এ ঘটনার জের ধরে প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির ইন্ধনে ও মদদে ইসলাম উদ্দিন, তার ভাই আশিক উদ্দিন গংরা সালিক আহমদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বলেন, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত সালিক আহমদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুনেছি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।

  • রামপালে চারদিন ধরে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার।

    রামপালে চারদিন ধরে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার।

    রামপাল(বাগেরহাট)প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রামপালে গত চারদিন ধরে নিখোঁজ হওয়া শিশু মোঃ আবু তাহলা (৪) শিশুর মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

    সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে দাউদখালী নদীর সগুনা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় মোঃ আজিজ শেখের জাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু আবু তালহা উপজেলার পার গোবিন্দপুর এলাকার মোঃ তারেক শেখ ও সাদিয়া বেগম দম্পতির সন্তান।

    শিশুটি গত চারদিন আগে তার বাড়ি থেকে ফয়লা বাজারে আসতে গিয়ে পথিমধ্যে হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তার সন্ধান পায়না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শিশুটি হারিয়ে গিয়েছে বলে একাধিক পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে শিশুর বাবা রামপাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

    স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ১২টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালে মাছ ধরার জাল দেখা যায় একটি বাচ্চার মরদেহ। পরবর্তীতে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে নিখোঁজ হওয়া তালহার পরিবারকে জানায়, তারা এসে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি তালহার বলে শনাক্ত করে।

    এ বিষয়ে রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা জানান, বাইনতলা ইউনিয়নের দাউদখালী নদী থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

  • রাণীশংকৈল কুলিক নদীতে বস্ত্রহীন নারীর মরদেহ উদ্ধার।

    রাণীশংকৈল কুলিক নদীতে বস্ত্রহীন নারীর মরদেহ উদ্ধার।

    ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে নদী থেকে বস্ত্রহীন অবস্থায় রেজিয়া (৬০) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য; চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

    সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বাচোঁর ইউনিয়নের কুলিক নদীর বাকশা সুন্দরপুর এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

    নিহত রেজিয়া একই উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই সাতঘরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের স্ত্রী।

    পুলিশ জানায়, সকালে স্থানীয়রা কুলিক নদীতে ওই মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। বস্ত্রহীন থাকায় মরদেহ নিয়ে নানাবিধ রহস্যও দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাকে মেরে ফেলে দিয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে। এমন ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। আর আত্মহত্যা করলেও শরীরে কাপড় পরিধানের কথা। কিন্তু কোনো কাপড় ছিল না। এখানে খুব বড় কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।

    নিহত রেজিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম জানায়,  তার মা দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি  বাড়ি হতে রোববার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। মা বাড়িতে না ফেরাই তাকে আমরা অনেক জায়গায় খোজাখুজি করেছি কিন্তু পাইনি। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে কুলিক নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মায়ের মরদেহ স্থানীয় এক কৃষক নদীর পাড়ে ধান কাটতে গিয়ে দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে নদী থেকে মরদেহ টি উদ্ধার করে।

    এ বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়ন্ত কুমার সাহা বলেন, পারিবারিক কোন অভিযোগ না থাকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বরাবর লাশ দাফনের অনুমতির জন্য আবেদন দেওয়া হয়েছে।অনুমতি পেলে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে

    এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে পুলিশ ওই নারীর বস্ত্রহীনতার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

  • উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি দুর্ভোগে মানুষ, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে।

    উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি দুর্ভোগে মানুষ, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে।

    নীলফামারীর ডিমলায় উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বসত ভিটায় পানি প্রবেশ করায়  দূর্ভোগে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ভোগান্তির শেষ নেই।
    রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তিস্তা ব্রীজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সকাল ৯টায় ৩ সেন্টমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্রীজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।
    পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত শনিবার সকাল ৯ টায় তিস্তা পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় বিপদসীমা অতিক্রম করে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। তবে রবিবার সকাল ৯টায় পানি তিন সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের নীলফামারী ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানির বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।
    এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরবর্তী উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করে। পরিবার গুলোর বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তির শঙ্কায় রয়েছেন এসব নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ সহস্ত্রাধিক মানুষজন। এছাড়াও এসব গ্রামের জমির আমন ধান ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। তবে বর্তমানে পানি হ্রাস পাওয়ায় সেই শঙ্কা কাটবে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
    পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আতিকুর রহমান বলেন, গত চার দিন ধরে  টানা মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শনিবার বেলা ১২টার পর থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার পাঁচ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ১২টায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করে সকাল ৬টায় পর্যন্ত বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় কমে বর্তমানে বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্রীজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নদীর পানি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।
    ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেজবাহুর রহমান বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানদেরকে বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। আগামীকাল ত্রাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।
  • লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু।

    লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু।

    রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ

    রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা নদীতে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল সোয়া ৭টার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

    নিহত যুবক মানিকগঞ্জ শিবালয় উপজেলার শিবালয় ৩ নং ট্রাক টার্মিনালের পাশে আসগর আলী শেখে’র ছেলে মো. ফিরোজ শেখ (২৮)। সে সেলফি পরিবহনের সহকারীর কাজ করতেন।

    লঞ্চঘাটে থাকা স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ সকালে সোয়া ৭টার দিকে লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যায়। তখন আশেপাশের লোকজনকে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ কে খবর দেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার পর গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও আরিচার ডুবুরি দল এসে ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে।

    নিহত যুবকের পিতা আজগর আলী শেখ বলেন, আমার ছেলের ছোটবেলা থেকেই মৃগী রোগের সমস্যা ছিল। গোয়ালন্দে গতকাল রাতে আমার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সকালে বাড়ী ফেরার সময় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের পন্টুনে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করার সময় মৃগী রোগ উঠলে নদীতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি ধারনা করেন।

    গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদ পেয়ে দ্রুত লঞ্চঘাটের ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘন্টা ব্যাপী অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে ৯ টার দিকে উদ্ধার করে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

    দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের এসআই মো. ফরিদুজ্জামান জানান, আমরা সোয়া ৭টার দিকে সংবাদ পাই লঞ্চঘাটে পন্টুন থেকে এক যুবক নদীতে পড়ে গেছে। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ফায়ার স্টেশনকে জানাই। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে তাকে উদ্ধার করে। মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট শেষ হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

  • গৃহবধূর মরদেহ বড়লেখায় সোনাই নদী থেকে উদ্ধার।

    গৃহবধূর মরদেহ বড়লেখায় সোনাই নদী থেকে উদ্ধার।

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৌলভীবাজারে বড়লেখায় সোনাই নদী থেকে স্বপ্না দাস (২৯) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ইং, দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত স্বপ্না দাস বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার পানিসাওয়া গ্রামের অসীম দাসের স্ত্রী।
    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বপ্না দাস মঙ্গলবার সকালে কাপড় ধুতে সোনাই নদীর ঘাটে যান। এরপর তিনি আর বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা খোঁজ নিতে নদীতে গিয়ে তার মরদেহ ভাসতে দেখেন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
    স্বপ্নার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, স্বপ্না সাঁতার জানতেন না। নদীতে কাপড় ধুতে গিয়ে হয়ত তিনি ডুবে মারা গেছেন।
    বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।
  • রাণীশংকৈলে ‘কুলিক’ নদী রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন।

    রাণীশংকৈলে ‘কুলিক’ নদী রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন।

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
    ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ‘কুলিক’ নদী। এটি বাংলাদেশের উত্তরাংশের ঠাকুরগাঁও উপজেলা ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বিল এলাকা থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশে হরিপুর উপজেলায় বাংলাদেশ অংশে পড়েছে।
    বাংলাদেশের প্রবাহপথে বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলায় রয়েছে। এছাড়াও নদীটি বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। রাজা টংকনাথের রাজপ্রাসাদ এই নদীর তীরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। যার দৈর্ঘ্য বাংলাদেশ অংশে ৬.৩৬ কি মি এবং ভারতের অংশে ৭৫.৬৪ কি মি। নদীটি ভুটডাঙ্গী এলাকায় প্রস্থ ১০০ মি এবং সেখানে এর গভীরতা ৩০ মি ও অববাহিকার আয়তন ১৫০ বর্গ কি মি।
    একসময় এই নদীতে নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার চললেও বর্তমানে এগুলো চলাচলের কোন দৃশ্য চোখে পড়ে না। সময়ের আবর্তনে একসময়ের চিরযৌবনা নদীটি হারিয়ে ফেলেছে তার স্বরূপ ও সৌন্দর্য।
    কুলিক নদীর মূল ধারাকে দখলমুক্ত করা এবং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে শনিবার (৯ মার্চ) সকালে রাণীশংকৈল উপজেলা পরিষদের মূল ফটকে কুলিক নদী সুরক্ষা কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
    এতে কুলিক নদী সুরক্ষা কমিটির আহবায়ক রাণীশংকৈল ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আ.লীগ সভাপতি অধ্যাপক সইদুল হক, কুলিক নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান শুভ, সাবেক পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিউল ইসলাম (ভিপি) প্রেসক্লাব সভাপতি মোবারক আলী, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, সহ-সভপতি হুমায়ুন কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সম্পাদক আরথান আলী, যুগ্ন সম্পাদক জাকারিয়া হাবিব ডন, ছাত্রলীগ নেতা তামীম হোসেন প্রমুখ।
    এসময় মানববন্ধনে বক্তারা দাবি জানিয়ে বলেন, রাণীশংকৈল পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ‘কুলিক’ নদীতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে খননকার্য পরিচালনা করে নদীর গভীরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে, নদীর দুই পাড়ের ভাঙ্গন রোধে ব্লকপাথর দিয়ে বাধাঁই করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, কুলিক নদীর দুই পাড়ে পর্যাপ্ত বৃক্ষ রোপন করার মাধ্যমে বনায়ন কার্যক্রম সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা, নদীর দুই পাড়ের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে নদীর সৌন্দর্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কুলিক নদীকে পর্যটক বান্ধব নদীতে রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন, কুলিক নদীর পানিকে পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহন করা, পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ কুলিক নদীতে ফেলা হইতে বিরত রাখতে হবে।
    যেহেতু বাংলাদেশের নদ-নদী সমূহ দেশের জাতীয় সম্পন্ন এবং নদীর অবৈধ দখল, পানি ও পরিবেশ দূষন, শিল্প কারখানা কর্তৃক সৃষ্ট নদী দূষন, অবৈধ অবকাঠামো নির্মান ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার ও নদীর যথাযথ রক্ষনাবেক্ষণ নিশ্চিতকল্পে বিধি বিধান রয়েছে। এটি এখন রাণীশংকৈল বাসীর জন্য সময়ের দাবী বলেও বক্তারা জানান।
    ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা আরও  বলেন, কুলিক নদীর পানিকে পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহন করতে হবে। এবং কুলিক নদীকে অতিথি পাখির নিরাপদ অশ্রয়স্থল অনিশ্চিত করতে হবে।
  • টাংগন নদীর পার ঘেষে নির্মান হচ্ছে রিসোর্ট নদীর গতিপথ পরিবর্তনের শংকা।

    টাংগন নদীর পার ঘেষে নির্মান হচ্ছে রিসোর্ট নদীর গতিপথ পরিবর্তনের শংকা।

    আনোয়ার হোসেন আকাশ,(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
    ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন নদীর গতিপথ বন্ধ করে রিসোর্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসি সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকসহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তারই প্রেক্ষিত প্রশাসনিক ভাবে একটি গঠিত কমিটির শঙ্কা রিসোর্টি নির্মান হলে ব্রীজের উভয় পাশে সাতটি স্প্যানের মুখ বন্ধসহ নদীর গতিপথ পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্নস্থানে ভাংগন দেখা দিবে।
    লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফেসরাডাঙ্গী ব্রীজের নিচের অনেকটা অংশে মাটি ভরাট করে ব্যাক্তি উদ্যোগে শ্বেতপদ্ম রিসোর্ট লিমিটেড নামে একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। যা সম্পুর্ন জমি রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের বলে দাবি উদ্যোগতাদের।
    রিসোর্টটি রক্ষায় অনেকটা তরিঘরি করে বাঁধ নির্মাণের জন্য নিজেরাই ব্লক ও বাঁধ তৈরি করছেন। এতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে পানির চাপ বাড়লে তা উপচে আশেপাশের কৃষি জমির ফসল নস্টের আশংকা করছেন কৃষকরা। এতে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করেছেন তারা।
    জানা গেছে, টাংগন নদীর উপড় ফেসরাডাঙ্গী ব্রীজ সংলগ্ন ৯ একর জমির উপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্যক্তি মালিকানা উদ্যোগে এ রিসোর্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
    আর সেকারনে এলাকার জমি, ফসল, বসতভিটা রক্ষার দাবি জানিয়ে স্থানীয়রা গত ০৬ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ণ বোর্ড,উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডিসহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
    অন্যদিকে প্রকল্প শুরুর আগে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে নদীর সীমানা মাপযোগে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করেছিলেন রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমানের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
    কয়েকদিন পর ওই কমিটি জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি প্রতিবেদনও দাখিল করেন। কিন্তু কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার আগেই রিসোর্ট নির্মানের কাজ শুরু করেন উদ্যোতারা।
    গঠিত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ যেভাবে মাটি ভরাট করেছেন তাতে ফেসরাডাঙ্গী ব্রিজের বারোটি স্প্যানের মধ্যে উভয় পাশের সাতটি স্প্যানের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে নদীর তীরে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
    স্থানীয় কৃষক গিয়াস উদ্দিন,হামিদুর রহমান, ফজির উদ্দিনসহ অনেকে জানান, নদীর উপর রিসোর্ট নির্মান হলে বন্যার সময় কৃষি জমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে তবে মানুষের ক্ষতি করে নয়। গরীব মানুষের ঘরবাড়ি ও কৃষি জমির কথাও ভাবতে হবে। অনেকেই নিজ জমিতে নদীর ধারেই পুর্বপুরুষের ভিটে মাটিতে বসবাস করছে। এমনিতেই বর্ষায় টাঙ্গন নদী ফুলে ফেপে উঠে। এমন অবস্থায় নদীর গতিপথে বাঁধা সৃষ্টি করা হলে গোটা গ্রাম নদীতে চলে যাবে। বেকার হয়ে পরবে এলাকার কৃষক। ভিটে ছাড়া হবে কয়েক’শ পরিবার। এ অবস্থায় রিসোর্টটি নির্মানের আগেই জেলা প্রশাসনসহ সরকারের হস্তক্ষেপ চান স্থানীয়রা।
    এ বিষয়ে শ্বেতপদ্ম রিসোর্ট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন কামালের দাবী নদী তাদের জমির উপর দিয়ে বয়ে গেছে। তারা নিজস্ব জমিতে রিসোর্ট নির্মান করছেন। নদীর জমি ভরাট করা হয়নি বরং তাদের জমি ভরাটের কারণে ব্রিজটি রক্ষা পাবে বলে জানান তিনি।
    পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম যাকারিয়া জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
    এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান জানান, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সংশ্লিস্ট দপ্তরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দাখিলকৃত প্রতিবেদন দেখে দ্রুতই ব্যবস্থায় উদ্যোগ নেয়া হবে।
  • সানন্দবাড়ীতে অসময়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন আতঙ্কে নদী পারের মানুষ।

    সানন্দবাড়ীতে অসময়ে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন আতঙ্কে নদী পারের মানুষ।

    ফরিদুল ইসলাম, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি: বর্ষায় নদীভাঙ্গন এ দেশের এক চিরাচরিত রূপ। এ সময় নদীপারের মানুষ আতঙ্কে থাকে, কখন জানি নদীর করাল গ্রাস কেড়ে নেবে তাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ সর্বস্ব। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নদীভাঙ্গনের সেই চিরাচরিত রূপ অনেকটাই বদলে গেছে। শুষ্ক মৌসুমেও এখন নদীভাঙ্গনের আতঙ্ক মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়।
    জাতীয় দৈনিক গণকন্ঠ সহ বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে আবার তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের ভাঙ্গনে শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্তত ৭০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনঝুঁকিতে আছে স্কুল, কলেজ, বাজার, মসজিদ, মাদরাসা, রাস্তাসহ শতাধিক স্থাপনা।
    মাঘ মাস চলছে। এই সময়ে এমন ভাঙ্গন আগে কখনো দেখেননি বলে জানিয়েছেন ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বয়স্ক ব্যক্তিরাও। জানা যায়, ভাঙ্গনকবলিত সানন্দবাড়ী এলাকাটি অতি প্রাচীন এক জনপদ। সানন্দবাড়ী বাজারটি জেলার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ বাজার এবং এই বাজারের ইজারামূল্যও প্রায় দেড় কোটি টাকা। যা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
    ভাঙ্গনের খুব কাছাকাছি রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই বাজারটি। দ্রুত ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা না গেলে বাজারের অস্তিত্বই হারিয়ে যেতে পারে। এখানে একটি ডিগ্রি কলেজ, বেশ কয়েকটি স্কুল, মাদরাসাসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। ভাঙ্গনপ্রবণ এই এলাকাটিতে কয়েক মাস আগে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার প্রবল স্রোতে সেসব জিও ব্যাগ ভেসে গেছে।
    দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাঙ্গন চললেও তা রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। পাউবো সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গনকবলিত ৯০০মিটার এলাকায় অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলে তীর প্রতিরক্ষার এই কাজের জন্য ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি প্রস্তাব মহাপরিচালকের দপ্তরের মাধ্যমে অর্থ পরিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ পাওয়া গেলেই কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া পাঁচ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের জন্যও কাগজপত্র জমা দেওয়া আছে, কিন্তু এর আগেই বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটে যাবে কি না, তা-ই বা কে জানে!
    বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়াই বন্যা ও নদীভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ। কাজেই এ সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য আমাদের নদীগুলো খনন করার বিকল্প নেই, কিন্তু সেটি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। এর আগে সানন্দবাড়ী এলাকাটিকে অব্যাহত ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।