লক্ষীপুর বাহুবলে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা অনশন করতে এসে প্রেমিকের মায়ের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
২৬ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ৪নং চররুহিতা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে কাঞ্চনি বাজারের সাথে ছাগল পোড়া নতুন বাড়িতে আব্দুল গনির দ্বিতীয় মেয়ে হালিমা সাথে এ ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগি হালিমা আক্তার জানায়, বাড়ীর পাশের জাহাঙ্গীর ছেলে এসকাবেটর চালক সাকিল সাথে ৯ মাসের প্রেমের সম্পর্ক, সে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে আমি তাকে বিয়ের চাপ দিলে সে আমাকে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করে।পরে বাধ্য হয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শাকিল বাড়িতে আসলে তার মা আমাকে মারধোর করে আমার মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগি মা সাহেরা জানান, আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে তার সাথে দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়। আমরা গরীব মানুষ শাকিল এর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে না হলে সে আত্নহত্যার ও হুমকি দেয়।
শাকিল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাহিরে দাড়িয়ে আছে প্রেমিকা। হাতে কাটাছেড়ার দাগ,এ সময় সে সাংবাদিকদের জানায় সে নবীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্রী নির্যাতনের শিকার ভুক্তভো
সাকিল তাকে বিয়ে না করলে সে আত্নহত্যারও হুমকি দেয়।
এসময় অভিযুক্ত সাকিলের মা এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাহার বলেন, বিষয়টি নিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যার্থ হয়েছি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, জরুরী ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাকিল কে গ্রেফতার করেছে সেই ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুইদিন শাকিলের নিজ বাড়িতে রেখেছে এ ব্যাপারে সুস্থ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি এলাকা দিয়ে আশির দশকে বিদ্যুতের লাইন টানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। আর বাকপ্রতিবন্ধী দিনমজুর ফয়জুর রহমান ঘর নির্মাণ করেন চার থেকে পাঁচ বছর আগে। বিদ্যুতে ১১ হাজার ভোল্টের সঞ্চালন লাইনের নিচে ঘর নির্মাণের সময় বাধা দেয়নি মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
বৈদ্যুতিক তারে নিরাপত্তার জন্য কোনো রাবারও যুক্ত করেনি তারা। ফলে গত মঙ্গলবার রাতে ঘটে মর্মন্তুদ ঘটনা। বজ্রপাতসহ ঝড়বৃষ্টির সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান ফয়জুরসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য। এ ঘটনার জন্য স্থানীয় অনেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অবহেলাকে দুষছেন।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া পরিবারের একমাত্র সদস্য দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সোনিয়া সুলতানাও গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যায়। ফলে পরিবারের শেষ প্রদীপটিও নিভে গেল। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সালাম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘরের ওপর দিয়ে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন গেলেও ফয়জুরের বসতের ভেতর কোনোদিন জ্বলেনি বিদ্যুতের আলো। সম্প্রতি ঘরের মধ্যে ওয়ারিংয়ের কাজ শেষ করে সংযোগের জন্য আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে আলোকিত ঘর আর দেখতে পারেননি তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ মৌলভীবাজার জোনাল অফিসের ডিজিএম সোহেল রানা জানান, তাদের লাইনটি আশির দশকে টানা হয়। ২০২০ সালের দিকে লাইনের নিচে ঘর তৈরি করেন ফয়জুর। এক সময় সেখানে কাজ করতে গিয়ে তারা জায়গার মালিকপক্ষের বাধার সম্মুখীন হন বলে দাবি করেন। ঘর তৈরির অনেক আগে থেকে লাইন ছিল দাবি করে দায় এড়াতে চান তিনি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ফয়জুরের বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও লাইনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ঘরের পাশের দুটি খুঁটির দূরত্ব অনেক বেশি। তারে অনেকগুলো জোড়া রয়েছে। যে কোনো সময় হালকা বাতাসে এসব তারে বিজলির মতো চমকায়। আগুনের মতো এই বিজলি দেখে সবাই ভয় পেত। অনেকবার পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের বলার পরও তারের নিচে নেট বা রাবার দিয়ে আবৃত করা হয়নি বলে জানান তিনি।
নওগাঁ জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মুহাম্মদ রাশিদুল হক পিপিএম মান্দা থানা বার্ষিক পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জনাব মতিয়ার রহমান,সহকারী পুলিশ সুপার, মান্দা সার্কেল (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) এবং অফিসার ইনচার্জ মান্দা থানা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার মহোদয় পরিদর্শনকালে থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিক রাখা, মামলা তদন্ত, প্রশাসনিক কার্যক্রম, অনলাইন জিডি, পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য সকল পুলিশ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং গাছের চারা রোপণ করেন।
সম্মানিত পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশের কল্যাণ, বিট পুলিশিং, টিএ বিল, সরকারি গাড়ি ব্যবহার, নিয়ম মেনে পোশাক পরিধান করা, আইনানুগ নিয়ম নীতি অনুসরন করার নির্দেশনাসহ থানা কম্পাউন্ড পরিষ্কার রাখা, থানা ব্যারাক ও আশপাশ এলাকা পরিষ্কার রাখা সহ থানায় পতিত অনাবাদি জমিতে নিয়মিতভাবে শাকসবজি চাষ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
সরকারের টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে উপজেলা পাট অধিদপ্তর অফিস চত্বরে বিনামূল্য পাট বীজ, রাসায়নিক সার বিতরণের জন্য প্রণোদনা কার্যক্রমের উদ্ধোধন অনুষ্ঠিত হয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে খরিপ-১ মৌসুমের (২০২৩-২৪ অর্থবছর) কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় পাটের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকের উৎসাহ প্রদানের জন্য বিনামূল্যে রাসায়নিক সার পাট বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
এ সময় রানীশংকৈল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহারিয়ার আজম মুন্না, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী বেগম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার মালাকার, উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ও সুবিধাভোগী কৃষকেরাও উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, কৃষকের নানা দিক নির্দেশনামূলক কথা বলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সাদেকুল ইসলাম
কৃষি কর্মকর্তাশহিদুল ইসলাম জানান,এ কর্মসূচির আওতায় রানীশংকৈল উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ জন কৃষকের মাঝে প্রত্যেককে ১কেজি করে পাট বীজ, ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩কেজি টিএসপি, ৩ কেজি এমওপি প্রদান করা হবে।
উল্লাপাড়ার নব নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। রমজান মাসে এটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থী আসছেন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে উদ্বোধন করা হয় উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ। ১৯৮৩ সালে ইটের দেয়াল ও ছাদে নির্মিত হয় মসজিদটি। নতুন এই মসজিদ নির্মাণ নিয়ে কথা হয় মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি জানান, পুরাতন মসজিদের জরাজীর্ণ অবস্থা এবং মুসল্লিদের জায়গা সংকট হওয়ায় তৎকালীন ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেনের কাছে জানানো হয় এবং একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের কথা বলা হয়। পরে ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেন উদ্যোগী হয়ে চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তৈরি করেন। প্রায় ১ বছর ইট, পাথরে বিভিন্ন কারুকার্য করে ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ৪ হাজার স্কয়ারফিট মসজিদের দেয়ালে কার্লিওগ্রাফী যেন সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণ শৈলী, রং ও লাইটিং দূর থেকেই কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। নির্মাণের পর থেকেই প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন হাজারো দর্শনার্থী।
অসাধারণ লাইটিং ও মসজিদের মোহনীয় সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। মসজিদ দেখা শেষে মুগ্ধতার আবেশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও দর্শনার্থীরা। দিনের আলো, সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহুর্ত ও রাতের অন্ধকার ভিন্নরকম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ। তবে সন্ধ্যার পর মসজিদের লাইট জ্বালানো হলে ফুটে ওঠে এর দ্যূতি ছড়ানো সৌন্দর্য। এর সামনেই রয়েছে বাহারী ফুলের বাগান, ফুলের সৌন্দর্য আর সুঘ্রাণ মুগ্ধ করছে সবাইকে। এসি ব্যবহার করা হয়নি তবে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় নির্মিত মসজিদে গ্রীষ্মকালে সারাক্ষণ থাকে ঠান্ডা আবহাওয়া। শীতকালে গরম আবহাওয়া বিরাজমান। মসজিদটিতে রয়েছে ১ হাজার মুসল্লির একসাথে নামাজের ব্যবস্থা এছাড়াও নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের নিচতলায় রয়েছে ইসলামিক লাইব্রেরি, আরবি ভাষা চর্চা কেন্দ্র।
মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা। মসজিদে নামাজের জন্য একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও ১ জন খাদেম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের খাদেম নুরুজ্জামান জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো। কিন্তু বর্তমানে এই নতুন মসজিদ যেমনটা নান্দনিক তেমনটি নামাজের জন্য আরামদায়ক। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে মসজিদ দেখার জন্য। রমজান মাসে এখানে কুরআন তেলওয়াত হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার মোঃ হাসান আলী জানান, উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের অসাধারণ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ। এখানে নামাজ পড়ে মনে অনেক প্রশান্তি পাই। এখান থেকে ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।
মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ যিনি নিয়েছিলেন তৎকালীন ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো ও জায়গা সংকট ছিলো। উল্লাপাড়ার স্থানীয় মুসল্লিদের অনুরোধে নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ এক বছর নির্মাণ কাজ করে সম্পূর্ণ হয়েছে। এটির নঁকশা ইউএনও নিজেই করেছেন বলে জানান তিনি।
পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার লস্করপুরে কসমেটিকসের গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২ টার সময় শহরের লস্করপুরের খাঁ পাড়ায় অবস্থিত স্কয়ারের কসেমটিকস গোডাউনে এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
পাবনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফুল আহসান ভূঁঞা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান দুপুর ১২ টার সময় আগুন লাগে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আগুন নিভানোর কাজ শুরু করে। এ সময় শহরের ৫টি ইউনিট, আটঘরিয়ার একটি ও সাঁথিয়ার একটি ইউনিট আগুন নেভাতে যোগ দেয়। সব মিলিয়ে ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বিশেষ অভিযানে বিকাশ প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ইং, দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান বিপিএম, পিপিএম (বার) প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গতকাল ২৬ মার্চ ২০২৪ইং, বিকেলে মৌলভীবাজার ডিবির অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে মৌলভীবাজার পৌরসভার সৈয়ারপুর এলাকার লন্ডনী হারুন মিয়ার মালিকাধীন হারুন মঞ্জিলের ৬ তলার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিকাশ প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনসহ মোট ২১টি সচল মোবাইল সেট এবং নগদ ৬,৩৯০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
এছাড়া তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের উপবৃত্তিভোগী শিক্ষার্থী এবং বয়স্কভাতা ভোগীদের মোবাইল নম্বরসহ ১২ পাতার একটি তালিকা জব্দ করা হয়েছে। যে তালিকা থেকে তারা ভিকটিমদের কল দিয়ে প্রতারণা করতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এই চক্র অনলাইনে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার বয়স্কভাতা ভোগী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের উপবৃত্তি ভাতাভোগী শিক্ষার্থীদের তালিকা ডাউনলোড করে সেখান থেকে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করত। পরবর্তীতে নিজেদেরকে বিকাশের হেড অফিসের স্টাফ পরিচয় দিয়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে কৌশলে তাদের কাছ থেকে OTP (ONE TIME PASSWORD) নিয়ে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা আত্মসাৎ করত।
তারা এই কাজের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এবং এই কাজকে তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত সবাই ফরিদপুর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে অথবা তাদের কাজের সুবিধার্থে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে এই প্রতারনা করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তাদের আরো সহযোগী আছে। আমরা তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদর্শন কুমার রায় (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সারোআর আলম, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশরাফুল ইসলাম-সহ প্রমুখ।
হবিগঞ্জের মাধবপুরে পৃথক দুইটি স্থানে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুই ব্যাক্তিকে অর্থদণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের সোয়াবই গ্রামে ও চৌমুহনী ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের দায়ে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী ধর্মঘর ইউনিয়নের সোয়াবই গ্রামের জহিরুল ইসলাম এর পুত্র নজরুল ইসলাম ও চৌমুহনী ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামের কামাল উদ্দিন এর পুত্র ফরাস উদ্দিন কে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রাহাত বিন কুতুব। এসময় মাধবপুর থানার পুলিশের একটি দল ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহায়তা করেন। সহকারী কমিশনার ভূমি মো রাহাত বিন কুতুব সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অবৈধ মাটি ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও তিন ভাই-বোনের পর এবার চলে গেলো শিশু সোনিয়া আক্তারও (১২)।
বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ইং, ভোরে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সোনিয়াকে নেওয়ার পর, কিন্তু আগেই মৃত্যু হওয়ায় আর ভর্তি করা হয়নি। এ নিয়ে এ ঘটনায় ওই পরিবারের ৬ জনেরই মৃত্যু হলো। সোনিয়ার মৃত্যুতে জুড়ীর বাকপ্রতিবন্ধী দিনমজুর ফয়জুর রহমানের পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না। মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ইং, দিনভর নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিল সোনিয়া। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। হার্টেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত ১০টায় স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামের ভাঙ্গার পাড় এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- টেলাগাড়ি চালক মোঃ ফয়জুর রহমান (৫২), তার স্ত্রী শিরিন বেগম (৪৫), তাদের মেয়ে সামিয়া (১৬), সাবিনা (১৩) ও ছেলে সায়েম উদ্দিন (৮)। এ ঘটনায় মৃত ভেবে ফয়জুর-শিরি দম্পতির আরেক মেয়ে সোনিয়া আক্তারকে (১২) রাখা হয়েছিল মরদেহের সারিতে। ঘণ্টাখানেক পর সোনিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস বুঝতে পেরে দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মৌলভীবাজার জেলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতালে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাকে দিনভর আইসিইউতে রাখা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট থেকে সোনিয়াকে পাঠানো হয়েছিল প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ঢাকা মেডিকেল থেকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়, এখানে ভর্তি করার আগেই মৃত্যু হওয়ায় আর ভর্তি করা হয়নি।
সোনিয়া স্থানীয় ইন্তাজ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার মারা যাওয়া বোন সামিয়া নবম শ্রেণি ও সাবিনা সপ্তম শ্রেণি ও ভাই সায়েম উদ্দিন দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় হাজী ইনজাদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তার বাবা-মা আর ভাই-বোনদের জানাজা হয়। পরে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। সোনিয়াকেও সেখানেই দাফন করা হবে বলে তার মামা আজির উদ্দিন জানিয়েছেন।
সোনিয়ার মামা আজির উদ্দিন বলেন, সোনিয়াদের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিটের। সেহরি খেয়ে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েছে তখনই এ ঘটনা ঘটেছে। সোনিয়াদের ঘরের পাশেই মসজিদ। প্রথমে মসজিদের লোকজন আগুন দেখে ডাকাডাকি শুরু করেন। খবর পেয়ে আমরাসহ আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না।
আজির উদ্দিন বলেন, পেশায় দিনমজুর ফয়জুর রহমানের জায়গা জমি কিছুই ছিল না। অন্যের জমিতে ঘর তুলে তিন মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। সেই ঘরে বিদ্যুৎ নেওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না তার। সোলার প্যানেল ব্যবহার করতেন তিনি। কিন্তু সেই বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে একসঙ্গে ৬ জনের মৃত্যু হলো।
আজির উদ্দিন আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ঝড়-বৃষ্টির সময় বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে টিনের চালের ওপর পড়েছিল। সেহরি খাওয়ার পর যখন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তখনই এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে এসে বিদ্যুৎ অফিসকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলেন।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ড।
অন্যদিকে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নজরুল ইসলাম মোল্লাকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতি। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন সহকারী প্রকৈশলী দেলওয়ার হোসেন ও এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর মুরাদ হোসেন।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার রাতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঝড়বৃষ্টি হয়। এ কারণে রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়। ভোর ৫টার সময় আবার চালু করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড় থেকে কাঁচা মরিচ দ্বারা বিশেষ কায়দায় লুকানো আট কেজি গাঁজা সহ রফিকুল ইসলাম(৩৭)কে আটক করেছে রামগড় থানা পুলিশ।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এক লিখিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, রামগড় থানার চৌকস আভিযানিক দল রামগড় থানা এলাকায় নিয়মিত মাদক উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের ০৭নং ওয়ার্ড পশ্চিম বলিপাড়া বাজারস্থ নুর উল্ল্যাহ এর পান দোকানের সামনে থেকে মোঃ রফিকুল ইসলাম(৩৭) কে ০২টি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তায় ০৮ কেজি গাঁজা সহ আটক করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তী দিঘীনালা উপজেলার মেরুং ইউপির ৪নং ওয়ার্ড বাঁচা মেরুং এলাকার মৃত ওমর আলী’র ছেলে রফিকুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করতঃ আসামীকে বিধি মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।