Author: admin

  • উত্তরবঙ্গের বাজারে চড়া দাম পেতে পঁচানো সুপারীতে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত রং।

    উত্তরবঙ্গের বাজারে চড়া দাম পেতে পঁচানো সুপারীতে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত রং।

    লক্ষ্মীপুর প্রশাসনের নাকের ডগায় পঁচানো সুপারিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দেদারছে মেশানো হচ্ছে রং ও ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিষাক্ত হাইডোজ। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পঁচানো সুপারিতে বিষাক্ত হাইড্রোজ মেশানোর চিত্র জেলা সদরসহ রায়পুর রামগঞ্জ কমলনগর-রামগতিতে দেখা যায় প্রতিদিন।

    লক্ষ্মীপুর থেকে এ বিষাক্ত সুপারি যাচ্ছে দেশের উত্তরাঞ্চল নীলফামারী, সৈয়দপুর, রংপুর দিনাজপুর সিলেট নওগাঁসহ ১৬ টি বিভিন্ন জেলা-উপজেলার আড়তে। প্রতি মৌসুমে ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার হাইড্রোজ মিশ্রিত বিষাক্ত কাঁচা সুপারি উত্তরের ১৬ জেলার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে উত্তরাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষ এ বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত সুপারি খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে।

    সবচেয়ে বেশি সুপারী উৎপাদন হয় রায়পুর উপজেলায়। উপজেলার সর্বত্রই প্রকাশ্যেই জনসমাগমস্থলে পঁচানো হয় সুপারি। আর এই পচা সুপারির উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পানিতে মেশানো হয় ও বিষাক্ত। খোলা স্থানে পচা সুপারির রং ও বিষাক্ত হাইডোজ মিশ্রনের সময় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তকে বারবার ফোন দিলেও মোবাইল রিসিভ করেন না।

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সুপারি খেলে লিভার ও কিডনি বিকল বা ক্যানসারের মতো ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এ বিষাক্ত সুপারির সরবরাহ বন্ধে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করে স্থানীয় সচেতন মহল।

    লক্ষ্মীপুর সদরের চররুহিতা ইউনিয়নের স্থানীয় কয়েকজন সুপারি ব্যাপারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পাইকারি সুপারির আড়ত হচ্ছে সৈয়দপুর। ওই আড়তের ব্যবসায়ীরা আমাদের লক্ষীপুর থেকে সিংহভাগ সুপারি ক্রয় করে থাকেন। এছাড়াও বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, পঞ্চগড়, চিলাহাটি থেকে পানিতে পঁচা সুপারি কিনে নেন ব্যবসায়ীরা।

    জানা গেছে এসব সুপারি আড়ত থেকে পাশের প্রায় ১৬টি জেলার ব্যবসায়ীরা এ পঁচা সুপারি কিনে নিজ নিজ এলাকায় সরবরাহ করেন।

    কয়েকজন পাইকারি সুপারি ব্যবসায়ী বলেন, এখানকার আড়তদারের কাঁচা সুপারিগুলো যায় উত্তরাঞ্চলের সব জেলার বাজারে। তুলনামূলক সস্তা দরের কারণে খুচরা ব্যবসায়ীদের এ সুপারির প্রতি আগ্রহ বেশি। শুকনা সুপারি তিন মাস পাওয়া যায়। এরপর পুরো বছরই কাঁচা সুপারির ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে হাইড্রোস মিশ্রিত করে বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা সুপারি পাঠালে পানি পঁচার বিকট গন্ধ থাকে না। রংটাও ভালো থাকে। পাশাপাশি এটি সহজে নষ্ট হয় না।

    আরিফ নামের এক পাইকারি সুপারি ব্যবসায়ী বলেন, এক বস্তা সুপারির দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা। ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার সুপারি পুরো মৌসুমে আমদানি-রপ্তানি হয়।

    পানিতে পঁচা সুপারি নিয়ে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের এলাকার পান দোকানদার তৈয়ব আলী ও আকবর বলেন, ‘শতকরা ৮০ জন পানসেবী এ কাঁচা সুপারিতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে কাঁচা সুপারি বিক্রয় করছি। তবে এতে ক্ষতির কথা না জানলেও হাইড্রোজ মিশানোর কথা স্বীকার করেন পান দোকানিরা।থ

    এমন বিষাক্ত কেমিক্যাল, ক্ষতিকর রং ও হাইড্রোজ মিশিয়ে পঁচা সুপারীকে চকচকে লাল আকর্ষণীয় করে তোলার দৃশ্য লক্ষ্মীপুর জেলার আনাচে-কানাচে প্রতিদিনই দেখতে পাওয়া যায়। স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে কয়েকজনের সাথে আলাপকালে জানা যায়।

    বিষাক্ত কেমিক্যাল, ক্ষতিকারক রং ও হাইড্রোজ মিশ্রনের সময় বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করানো হলে তিনি পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডের ছিটন বাড়ির পাশে পঁচা সুপারির গুদামে ‘বারেক বেপারীথ নামের এক বড় ব্যবসায়ী ও তার লোকজনকে সুপারি রং করা অবস্থায় দেখতে পান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম ওই ব্যবসায়ীকে সুপারিতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জেলা সিভিল সার্জন বরাবর -‘এই রং, কেমিক্যাল ও হাইড্রোজ মানব দেহের কোন ক্ষতি করে কিনাথ এই মর্মে আবেদন করেছেন বলে একটি কাগজ দেখান। এখনো আবেদনের কোন রেজাল্ট হাতে না আসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম কোন বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।

    তবে লক্ষ্মীপুরে দাদনে সুপারি পঁচানো বড় বড় ব্যাপারী হলো সদর পৌরসভা ১৫ নং ওয়ার্ডের ছিটন বাড়ির আব্দুল বারেক ও একই এলাকার করিম খাঁ ব্যাপারী, দালাল বাজার ইউনিয়নের চন্দন গাজী বাড়ীর সেলিম বেপারী, মিলগেট এলাকার হানিফ বেপারী, কাঞ্চনী বাজারের জহিরুল ইসলাম, দাসপাড়া এলাকার মানিক ব্যাপারী, জকসিন বাজারের শফিক ও সোহেল, মিয়ার রাস্তার মাথার মোমিন বেপারী, ভবানীগঞ্জের সেলিম বেপারী, সীতা ডাক্তার গোঁজার ছুট্টু বেপারী রামগঞ্জ উপজেলার মোরশেদ বেপারী, রফিক বেপারী ও রাশেদ বেপারী, রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ বাজারের শাহ আলম মিজি, আলাউদ্দিন বেপারীসহ ছোটখাটো আরো সুপারি ব্যাপারীরা প্রতি মৌসুমে সুপারি পঁচিয়ে তা বিষাক্ত কেমিক্যাল, ক্ষতিকর রং ও ক্যান্সার সৃষ্টিকারীকার হাইড্রোজ মিশিয়ে সুপারিকে চকচকে আকর্ষণীয় লাল রঙ কর তুলছে।

    এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাসুম বলেন, খাদ্যে ভেজালের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাই ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এসিল্যান্ড আক্তার জাহান সাথীকে ফোনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে পঁচানো সুপারিতে রং ও বিষাক্ত হাইড্রোজ মেশানোর বিষয়টি অবগত করালেন তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

    জেলা সিভিল সার্জন আব্দুল গফফার বলেন- হাইড্রোজ হচ্ছে একটি বিষাক্ত কেমিক্যাল। এর প্রভাবে কিডনি, লিভারের ক্ষতিসহ শরীরের যেকোনো স্থানে ক্যানসার হতে পারে। এ সুপারি খাওয়া লোকদের ঠোঁটের দুই কোণে সাদা ঘা দেখা যায়। তাই এ সুপারি বন্ধে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

    তিনি আরো বলেন-কোনো ক্ষতিকারক কেমিক্যাল রং বা হাইড্রোজ মিশিয়ে সুপারি রং করা যাবে না। যদি কোনো অসাধু ব্যবসায়ী এ অবৈধ কাজ করে তাকে শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।

  • করোনায় শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প মহাসঙ্কটে-ভোরের কণ্ঠ

    করোনায় শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প মহাসঙ্কটে-ভোরের কণ্ঠ

    করোনার ক্রান্তিকালে সৃষ্ট প্রকট পুঁজি সংকট, রং, সুতার অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, উৎপাদন বন্ধ ও উৎপাদিত তাঁতবস্ত্র বিক্রি না হওয়ায় দেশের তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প মহাসংকটে পড়েছে। গেলো বছর লকডাউনের শুরুতে শাহজাদপুরের সব তাঁত কারখানা আর কাপড়ের হাট টানা ৪/৫ মাস বন্ধ ছিলো ও পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী বন্যার কবলে ক্ষতিগ্রস্থ তাঁতীরা পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক লোকসানের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়ে ।

    সেই ক্ষতি আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ের ভরা মৌসুমে এরই মধ্যে ফের লকডাউনে পড়ে শাহজাদপুরের প্রায় ১ লাখ তাঁতী ও শ্রমিকেরা তাদের জীবন জীবীকার প্রশ্নে চোখেমুখে রীতিমতো সর্ষের ফুল দেখছে। গেলো বছর ঈদ, পহেলা বৈশাখ ও পুঁজায় এবং চলতি বছরেও পহেলা বৈশাখ ও আসন্ন রমজানের ঈদকে উপলক্ষ করে তাঁতবস্ত্রের বেচাকেনায় মারাত্বক ধ্বস নামায় কোমড় ভেঙ্গে গেছে এলাকার সিংহভাগ তাঁতী ও মহাজনদের। তাঁতসমৃদ্ধ শাহজাদপুরসহ সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত তাঁতবস্ত্র দেশে তাঁতবস্ত্রের চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করে আসলেও করোনার প্রভাবে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

    করোনার ক্রান্তিকালের আগেও শাহজাদপুরের তাঁতপল্লীতে তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছার ব্যাপক চাহিদা ছিলো দেশবিদেশ জুড়ে। এখন নেই আর সেই চাহিদা ও কদর। নেই তাঁতপল্লীর খট্খট্ শব্দ আর লাখ লাখ তাঁতী ও শ্রমিকের কর্ম প্রাণচাঞ্চল্যতা।

    পুঁজি সংকট কাটিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ কুটিরশিল্প তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আর রুটিরুজি নিশ্চিতে এখনই সরকারের কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ তাঁতী ও শ্রমিকেরা।

    স্থানীয় তাঁতী ও মহাজনেরা জানায়, দেশের তাঁতশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রায় ৩ লাখ তাঁতী ও শ্রমিকের বসবাস। বছরখানেক আগেও শাহজাদপুরের তাঁতপল্লীতে প্রায় ১ লাখ পাওয়ার লুম ও ৫০ হাজার হ্যান্ডলুম সচল থাকলেও করোনাসহ নানা সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৮০ হাজার তাঁত। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখ তাঁতী ও শ্রমিক। অন্য কোন কাজ না জানায় বেকার এসব তাঁতী ও শ্রমিকেরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে।

    পুঁজি হারানো তাঁতীদের অনেকেই পরবর্তীতে ধারদেনা ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তাদের সব প্রচেষ্টা বিফলেই রয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, তুলার দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সকাল-বিকাল সব কাউন্টের সুতার দাম বাড়াচ্ছে অসাধু সূতা ব্যবসায়ীরা। উচ্চ মূল্যে রং সুতা কিনে কাপড় বানালেও হাটের পাইকারেরা তা বেশি দামে কিনতে নারাজ। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকায় ইতিমধ্যেই পুঁজি হারিয়ে পথে বসে গেছে অনেকেই। লোকসানের ভার সইতে না পেরে আবার অনেকেই অন্য পেশায় ঝুঁকছে। অনেকে আবার রিক্সা-ভ্যান চালনাসহ নানা পেশায় আত্মনিয়োগ করেছে।

    এলাকার বেশ কয়েকজন প্রান্তিক তাঁতী আক্ষেপ প্রকাশ করে জানান, ‘দীর্ঘ সময় ধরে শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প মহাসংকটে রয়েছে। একদিকে, কাচাঁমালের দাম বৃদ্ধি ও অন্যদিকে, উৎপাদিত তাঁতবস্ত্র হাটে বিক্রি না হওয়ায় পুঁজি ভেঙ্গে খরচ করতে করতে পুঁজিশূণ্য হয়ে পড়েছে এলাকার সিংহভাগ তাঁতী ও মহাজন। ফলে বাধ্য হয়ে তারা একের পর এক তাঁত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এরই মধ্যে কিছু তাঁতী ব্যাংক ঋণ ও ধারদেনা করে পুনরায় তাঁত সচল করলেও উৎপাদিত বস্ত্র বিক্রি করতে না পেয়ে দিনের পর দিন ঋণের অথৈ সাগরে নিমজ্জিত হয়ে প্রতিনিয়ত হাঁ-হুতাশ করছেন। দেশের সর্ববৃহৎ কুটিরশিল্প ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প রক্ষায় কেউ দাঁড়াচ্ছে না তাদের পাশে।থ

    স্থানীয় তাঁত শ্রমিকেরা জানান, ‘কাপড়ের হাটে ক্রেতা না থাকায় মহাজন কাপড় বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে দিনেদিনে তাঁত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আগে সপ্তাহে ৭ দিনই কাপড় বুঁনতে পারলেও করোনার ক্রান্তিকালে তদস্থলে সপ্তাহে ৩ দিন কাজ করতে পারছে শ্রমিকেরা। তাও আবার একবেলা কাজ থাকলে অন্য বেলায়ই তা বন্ধ থাকে।

    এত কিছুর পরও তাদের মতো চির অবহেলিত, চির পতিত, চির অপাংক্তেয়, যাদের বুক ফাটলেও মুখ ফোঁটেনা, যাদের বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে; এমন হাজার হাজার তাঁত শ্রমিকদের মজুরিও আগের চেয়ে কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এলাকার প্রায় অর্ধলাখ তাঁত শ্রমিক খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে।

    স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে খেঁাজ নিয়ে এবং তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে প্রতি সপ্তাহের চার দিন (দিনরাত দুথদিন করে) কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারী পাইকারেরা এ দুথহাটে এসে শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা কিনে থাকেন।

    সেইসাাথে শাহজাদপুরের তাঁতপল্লীতে উৎপাদিত তাঁতবস্ত্রের একটা বৃহৎ অংশ প্রতি হাটেই ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। প্রতি হাটে ব্যাংক ও নগদসহ প্রায় ৩/৪ থশ কোটি টাকার লেনদেন হলেও করোনার ক্রান্তিকালে তা প্রায় ৭০ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। আর লকডাউনে পুরোপুরি লেনদেন বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে খেলাপী ঋণের সংখ্যাও বেড়েছে।

    উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শাহজাদপুর কাপড়ের হাটের তাঁতবস্ত্র উৎপাদক ও বিক্রেতা আকন্দ টেক্সটাইলের মালিক লিটক আকন্দ বলেন, ‘রং সুতার দাম অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁতবস্ত্রের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু উৎপাদিন বস্ত্রের দাম বাড়েনি। হাটে নেই কোনরকম কেনাবেচা। তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ের ভরা মৌসুমে কেনাবেচায় এত করুণ দশা জীবদ্দশায় দেখিনি।

    শাহজাদপুর উপজেলা তাঁত শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আল মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, ‘করোনার পর থেকে সব পেশাজীবীদের পাশেই সরকারকে দাঁড়াতে দেখা গেলেও শাহজাদপুরে কর্মরত প্রায় ৭০/৮০ হাজার শ্রমিকের পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। তাঁতী মহাজনেরা সপ্তাহে ৭ দিনের পরিবর্তে ২/৩ দিন পরপর শ্রমিকদের কাজে নিচ্ছে। তারও একবেলা কাজ করতে দিচ্ছে শ্রমিকদের।

    এর পরেও ‘মরার ওপর খাড়ার ঘাথ এর মতো শ্রমিকদের মজুরিও কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে শ্রমিকেরা তাদের পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে অতিকষ্টে প্রতিটি দিন কাটাচ্ছে। তাঁতী মহাজন বাঁচলে শ্রমিক বাঁচবে, তাই তাঁতী মহাজনদের বাঁচাতে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার কোন বিকল্প নাই।থ

    শাহজাদপুর পাওয়ারলুম এসোসিয়েশনের আহবায়ক তাঁতী মহাজন হাজী নজরুল ইসলাম আক্ষেপের সাথে জানান, ‘রং সুতার দাম বাড়লেও সে অনুপাতে কাপড়ের দাম বাড়েনি। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে লোকসানে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে শ্রমিকদের মজুরি ঠিকমতো দিতে পারছি না। তাঁতীদের চরম এ দুরাবস্থা থেকে উত্তরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার বিকল্প আছে বলে মনে করছি না।

    শাহজাদপুর ইয়ার্ণ মাচেন্টস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় সূতা ব্যবসায়ী হাজী হায়দার আলী বলেন,‘তুলার দাম বৃদ্ধির অনুপাতে মিলাররা সুতার দাম বাড়ালেও নারায়নগঞ্জের কিছু অসাধু সুতা ব্যবসায়ীরা সে অনুপাতে দাম না বাড়িয়ে ইচ্ছেমতো অস্বাভাবিক মাত্রায় কয়েকগুণে বৃদ্ধি করায় সুতার বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দ্রুত এটা স্থিতিশীল করা না গেলে এ শিল্পের বিপর্যয় কোন ভাবেই রোধ করা যাবে না।

    শাহজাদপুর ইয়ার্ণ মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক হাজী রমজান আলী বলেন, ‘রং সুতার দাম বৃদ্ধিতে শাহজাদপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।থ

    শাহজাদপুর বিসিক তাঁতবোর্ডের লিয়াঁজো অফিসার আনিছুর রহমান জানান,‘১থশ ৩০ জন প্রান্তিক তাঁতীর মাঝে সহজশর্তে ২৫ কোটি টাকার ঘুর্ণয়মান ঋণ দেয়া হয়েছে। করোনা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য সকল প্রান্তিক তাঁতীদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করে তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে কোন নির্দেশনা আসেনি।থ

    শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বলেন, ‘তাঁতীদের মাঝে সহজশর্তে ঋণ দেয়া হয়েছে। তাঁতশিল্পকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে তাঁতবস্ত্রের বিশ্ববাজার সৃষ্টির বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে। এ শিল্পকে রক্ষায় থ্রি-পিছের পরিবর্তে তাঁতবস্ত্র পরিধানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। চোরাইপথে আসা ভারতীয় কাপড় যেন দেশীয় তাঁতশিল্পকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করতে না পারে সেজন্য ইতিপূর্বেও অভিযান চালানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও চালানো হবে।

    বাংলাদেশ স্পেশালাইজ পাওয়ারলুম ইন্ড্রাট্রিজ এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ও সিরাজগঞ্জ জেলা তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব হায়দার আলী জানান, ‘করোনার ক্রান্তিকালে শাহজাদপুরে প্রায় ৮০ হাজার তাঁত বন্ধ হয়ে ১ লাখ তাঁতী ও শ্রমিক বেকার হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। দীর্ঘসময় ধরে এ সংকট চলমান থাকায় ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ তাঁতবোর্ড শাহজাদপুরের বিসিক সেন্টার থেকে ক্ষতিগ্রস্থ লক্ষাধিক তাঁতীদের কথা মাথায় না রেখে মাত্র ১৩০ জনের মাঝে ২৫ কোটি টাকার সহজশর্তে ঘুর্ণিয়মান ঋণ দেয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগণ্য হওয়ায় তাঁতীদের তা তেমন কোন কাজেই আসছে না।

    ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পে চলমান মহাসংকট নিরসনপূর্বক  তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য ফেরাতে পুঁজি  সংকট কাটিয়ে  বেকার ও ক্ষতিগ্রস্থ তাঁতী ও শ্রমিকদের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে ২ হাজার কোটি টাকার সহজশর্তে মুনাফাবিহীন ঋণ সুবিধা দেয়া হলে তাঁতীরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ও তাঁতশিল্প ফিরে পাবে হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব।

    প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সর্ববৃহৎ কুটিরশিল্প ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পকে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষায় এ বিষয়ে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে এলাকার তাঁতীরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছ।

  • শিবগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণঃ ধর্ষক আটক-ভোরের কণ্ঠ।

    শিবগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণঃ ধর্ষক আটক-ভোরের কণ্ঠ।

    বগুড়ার শিবগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় ধর্ষিতার পরিবারের শিবগঞ্জ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষক ইউসুফ আলী(২৫)কে আটক করেন।

    শিবগঞ্জ থানা মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মেঘাখোর্দ্দ দক্ষিণপাড়া গ্রামের স্কুল পড়ুয়া ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী নানার বাড়ি মোকামতলা ইউনিয়নের সাতআনা চাকলমা গ্রামে নানার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করত।

    সাম্প্রতিক করোনার জন্য স্কুলবন্ধ থাকায় মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর বাবার বাড়ি থেকে সে প্রাইভেট পড়ার জন্য যাতায়াত করে। এরই ধারাবাহিকতায় মেঘাখোর্দ্দ দক্ষিণপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের লম্পট ছেলে ইউসুফ আলী (২৫) স্কুল পড়ুয়া মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর রাতের অন্ধকারে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে একই ভাবে বেশ কয়েক দিন ধর্ষণ করে।

    মেয়েটি নিজের সতিত্ত হারিয়ে ইউসুফকে বিয়ের করার কথা বলায় তাল বাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে মেয়েটি বিষয়গুলো তার পরিবারকে খুলে বলে।

    এ বিষয় নিশ্চিত করে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান সোমবার রাতে ভিকটিম তার বাবাকে সাথে নিয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন।অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ধর্ষক ইউসুফকে ওই রাতেই আটক করে।তার বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা রুজু করে জেলহাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া করেন।

  • কুয়াকাটায় ধান ক্ষেত থেকে ড্রোন ক্যামেরা উদ্ধার-ভোরের কণ্ঠ।

    কুয়াকাটায় ধান ক্ষেত থেকে ড্রোন ক্যামেরা উদ্ধার-ভোরের কণ্ঠ।

    পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির একটি ড্রোন ক্যামেরা উদ্ধার করেছে মহিপুর থানা পুলিশ। সোমবার বিকেলে ড্রোনটি লতাচাপলী ইউনিয়নের লক্ষীপাড়া গ্রামের ধান ক্ষেতে পরে থাকতে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লাকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তিনি সেটিকে উদ্ধার করে মহিপুর থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেন।

    এদিকে উদ্ধারকৃত ড্রোন ক্যামেরার মালিকানা দাবি করছে পায়রা বন্দরে কর্মরত বেলজিয়ামের নাগরিক মাইকেল। গভীর সমুদ্রে জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য ড্রোনটি ব্যবহার করা হতো। ড্রোনটি পরীক্ষামূলক ভাবে উড়ানোর সময় যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্যত্র চলে যায়। উদ্ধারকৃত ড্রোনের মালিকানা দাবির জন্য যথেষ্ট প্রমাণ তার কাছে আছে। ড্রোনটির ওজন প্রায় ২ কেজি।

    এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ড্রোনটির ব্যাপারে আমরা খতিয়ে দেখছি এবং এর ভিতরে থাকা মেমোরী কার্ডের সকল কিছু খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশের সাইবার এক্সপার্টদের কাছে পাঠানো হবে। এটি কি কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল সে ব্যাপারেও আমরা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

  • করোনার ক্রান্তিকালে শাহজাদপুরের কৃষক উৎসবের আমেজে ধান কাটছে-ভোরের কণ্ঠ।

    করোনার ক্রান্তিকালে শাহজাদপুরের কৃষক উৎসবের আমেজে ধান কাটছে-ভোরের কণ্ঠ।

    করোনার ক্রান্তিকালেও খোশ মেজাজে ধান কাটতে শুরু করেছেন শাহজাদপুরের কৃষকেরা। চলতি বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে না আসায় শাহজাদপুরে বোরো ধানের ফলন অতীতের তুলনায় বেশ ভালো হয়েছে ।

    ইতিমধ্যেই নদী তীরবর্তী নীচু স্থানে ও বিভিন্ন নীচু নালায় রোপিত স্থানীয় বোরো জাতের ধান (আগুর ধান) পেঁকে যাওয়ায় কৃষকেরা করোনার ক্রান্তিকালের মধ্যেও হাঁসি খুশি মনে ধান কাটতে শুরু করেছেন। এবার ধানের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন।

    শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর শাহজাদপুর পৌর এলাকাসহ ১৩টি ইউনিয়নে মোট ২২ হাজার ৮’শ ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে কৃষকেরা। ইতিমধ্যেই বোরো স্থানীয় জাতের ধান পেঁকে যাওয়ায় তা কাটা শুরু হয়েছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে উফসী জাতের ধানও পেঁকে যাবে এবং ১ সপ্তাহ পর কৃষকেরা পুরোদমে ধান কাটার কাজে লেগে যাবেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ধান রোপন থেকে কৃষকের ঘরে তোলা পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেয়াসহ নানা ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে।

    শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের চর-নরিনা গ্রামের কৃষক শাহীনূর রহমানসহ বেশ কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক জানান, ‘চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও চলতি বোরো মৌসুমে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেয়ায় স্থানীয় বোরো জাতের ধানের ফলনও খুব ভালো হয়েছে । ইতিমধ্যে এসব ধান পেঁকেও গেছে। লকডাউনে কৃষকদের হাতে তেমন কোন কাজ নেই। তাই শ্রমিকদের সাথেপাশে রেখে কৃষকেরাও উৎসবের আমেজে ধান কাটছেন।

    শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুস সালাম জানান, ‘দুর্যোগমুক্ত আবহাওয়ার কারণে এবার ধানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ফলনও অতীতের চেয়ে বেশ ভালো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এভাবেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ধানের বাম্পার ফলন নিয়ে কৃষকেরা যে স্বপ্ন বুকে লালন করেছেন, তাদের  সেই স্বপ্ন ও বুকভরা আশা এবার বাস্তবে রূপ নেবে। এতে কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবেও বেশ লাভবান হবেন।

  • কলাপাড়ায় সাত ব্যবসায়ী ও এক পথচারীকে অর্থদন্ড-ভোরের কণ্ঠ।

    কলাপাড়ায় সাত ব্যবসায়ী ও এক পথচারীকে অর্থদন্ড-ভোরের কণ্ঠ।

    পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় লকডাউন উপেক্ষা করে দোকান খোলা রাখার দায়ে ৭ব্যবসায়ীকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় মুভমেন্ট পাস ছাড়া বিনা কারনে ঘরের বাইরে বের হওয়ার দায়ে ১ জনকে ১ শত  টাকা জরিমানা করা হয়।

    ২০এপ্রিল মঙ্গলবার  ১১ ঘটিকা হতে ১২.৩০ ঘটিকায় পৌর শহরের নতুন বাজার, সদর রোড ও কঁাচা বাজার এলাকায় এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল।

    ভ্রাম্যমান আদালতে বেঞ্চ সহকারী উবাচু জানান, দোকান খোলা রাখার দায়ে পৌর শহরের সদর রোডে বিসমিল্লাহ্ বেকারী মোঃ আল মামুনকে ৮ হাজার টাকা, নতুন বাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মোঃ আমিনুল ইসলামকে ১ হাজার পাঁচশত টাকা, গ্লাস’র দোকান স্বজলকে ১ হাজার পাঁচশত টাকা, প্লাষ্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী আহ্সানকে ১ হাজার টাকা,কাঁচামালের দোকানী মোঃ দেলোয়ার মুসুল্লী, মোঃ এরশাদুল ও অটল পাল উভয়কে ১ হাজার টাকা করে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিনা কারনে ঘরের বাইরে বের হওয়ায় মোঃ মিজানকে ১ শত টাকার জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত।

    উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎ বন্ধু মন্ডল জানান, সংক্রমন রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রন ও নির্মুল আইন ২০১৮ এর ২৪ (১) ধারা লঙ্গনে ২৪ (২) ধারা মতে ৩ ব্যবসায়ী এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ এর ৩৭ ধরায় ১ ব্যবসায়ী ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধরায় ৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে।

    এছাড়া দন্ড বিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ১ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। এসময় তিনি নিজেই হ্যান্ড মাইকে কোভিট-১৯  করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হতে রক্ষা পেতে জনসাধারণকে সচেতন করে বলেন ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে ।

  • মিক্সিং প্লান্টের বিষাক্ত ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ জনসাধারণ নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল- ভোরের কণ্ঠ।

    মিক্সিং প্লান্টের বিষাক্ত ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ জনসাধারণ নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল- ভোরের কণ্ঠ।

    দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের দামারমোড় এলাকায় বিটুমিন মিক্সিং প্লান্টের বিষাক্ত ধেঁায়া, ধুলাবালি ও বিটুমিন পোড়ানোর দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে ঐ এলাকার পথচারীসহ গ্রামবাসীদের।

    এতে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন ব্যবসায়ী, পথচারী ও এলাকার বাসিন্দারা। পৌর শহরসহ উপজেলার পাশপাশে এমন কর্মকাণ্ড চললেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নীরবেই থেকে যায় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে প্রতিকার করেও দুর্ভোগ না কমায় ফুঁসছে এলাকাবাসী।

    অপরদিকে প্লান্টের বিষাক্ত ধেঁায়া, ধুলাবালি ও বিটুমিন পোড়ানোর ধেঁায়া-এ্যাশ পড়ে পাশের জমির ধানের গাছ পুড়ে গেছে। কালো ও ফ্যাকাসে হয়ে গেছে সবুজ ধানের ক্ষেত।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার চিন্তামন থেকে দেশ মা হাট সড়কের সম্প্রসারণ কাজ চলছে। ওই সড়কের নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে দামারমোড় বাজারের ৩০০ গজ পূর্ব প্রান্তে ফসলি জমির পাশে। সেখানেই বিটুমিন পোড়ানো ও মিক্সিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। পরে মিক্সিং পাথর ট্রলিতে করে দেশ মা হাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেই রাস্তার কাজের ঠিকাদার জয়পুরহাটের ইফান এন্টার প্রাইজ বলে জানায় উপজেলা প্রকৌশল অফিস। দিনভর বিটুমিন মিক্সিং প্লাান্টের ধেঁায়া ও ধুলাবালিতে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়া দায়। সেই ধেঁায়া ও ধুলাবালি আশপাশের ফসলি জমিসহ বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে উড়ে পড়ছে।

    তবে সেইসব মেশিনের ছবি নিতে গেলে সাংবাদিককে পড়তে হয় রোষাণলের মুখে। হঠাৎ করেই ঠিকাদারের কেয়ারটেকার চড়াও হয়ে সাংবাদিককে বলে, ছবি তুললেন ক্যান মেশিনের, ছবি তুলতে অনুমতি নিয়েছেন? এখান থেকে চুপচাপ চলে যান।

    উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের দামারমোড় এলাকাবাসী তৌহিদুজ্জামান রাসেল, ভ্যানচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, চিন্তামন থেকে দেশমা হাট সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য দামারমোড় বাজারের তিন’শ গজের মধ্যেই দামাড়মোড়-পুখুরী সড়কের ওপর বিটুমিন মিক্সিং প্লান্ট মেশিন বসানোসহ নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। সড়ক সম্প্রসারণ করতে বিটুমিন পোড়ানোসহ মিস্কিং প্লান্ট সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু রাখা হয়। তখন প্লান্টের বিষাক্ত ধেঁায়া, পাথরের ধুলাবালি ও বিটুমিন পোড়ানোর গন্ধে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল তো দুরের কথা বাজারেও ঠিকমতো থাকা যায় না। কিন্তু এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে দুর্ভোগে পড়লেও প্রতিবাদ করতে ভয় পায় সবাই। তাই ওই রাস্তার মানুষগুলো বেশি অর্থ ব্যয় করে আটপুখুরহাট দিয়ে ঘুরে জরুরী কাজ সারছেন। উপজেলার পাশপাশে এমন কর্মকাণ্ড চললেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নীরবেই থেকে যায়।

    এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি তার পরিচয় গোপন করে এড়িয়ে যান।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, বিটুমিনের ধেঁায়ায় গন্ধে ও ধুলাবালির কারণে দম বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এর প্রতিবাদ করলে এলাকায় থাকা যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে যাবে।

    ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক মোতাহার হোসেন বলেন, ওই নির্মাণকাজের কালো ধেঁায়া ও ধুলাবালিতে আমার জমির ফসল প্রায় কালচে হয়ে এসেছ। সেগুলোতে আর ধানের শীষও গজায়নি। তবে ঠিকাদার আমার জমির নষ্ট হওয়া ফসলের কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

    সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সড়ক সম্প্রসারণ কাজ চলছে। ওই ধেঁায়া ও  ধুলাবালিতে সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও এলাকার স্বার্থে সবকিছুই মেনে নিতে হবে।

    ফুলবাড়ী উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন,ওই রাস্তার ঠিকাদারের নাম্বার আমার কাছে নেই। তবে ওই রাস্তার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আরো অল্প কিছু কাজ করলেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।

    ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী এফএএম রায়হানুল কবির বলেন, এতোকিছু ভাবলে তো সড়কের কার্পেটিং কাজ বন্ধ রাখতে হবে। আপনি যান হাইওয়ের কাজ চলছে, সেখানে দেখেন কিভাবে কাজ করা হচ্ছে।

    ফুলবাড়ী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, আমার কাছে কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমির সফল নষ্ট হওয়ার কোনপ্রকার লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ আসেনি।

    ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। এখনি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলছি।

     

  • ফুলবাড়ীতে রমজান উপলক্ষ্যে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে বেগুনের দাম-ভোরের কণ্ঠ।

    ফুলবাড়ীতে রমজান উপলক্ষ্যে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে বেগুনের দাম-ভোরের কণ্ঠ।

    দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার গ্রামাঞ্চলে শাক-সবজির ব্যাপক চাষাবাদ হলেও রমজানে হাট বাজারে হঠাৎ বেড়েছে বেগুনের দাম।

    সবজি বিক্রেতারা বলেন, রমজান শুরুর আগে ফুলবাড়ীতে হাট বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হতো ১০ থেকে ১৫ টাকায় । রমজান শুরুর পর সেই বেগুনের দাম হঠাৎ বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে উঠেছে।

    ইফতার সামগ্রি বিক্রেতা ফয়সাল জানান,রমজান মাসে ইফতার সামগ্রির মধ্যে অন্যতম  বেগুনের চপ বা বেগুনি,এটি তৈরিতে আবশ্যকীয় সবজি বেগুন। এ কারনেই রমজান মাসে বেগুনের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সবজি দোকানীরা বেগুনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

    ফুলবাড়ী কাঁাচা বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহাজামাল বলেন,রমজান মাসে ইফতারীর জন্য বেগুনের চপ তৈরীর পাশাপাশী এই এলাকার বেগুন রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় চালানের কারণে বেগুনের দাম অনেকটা বেড়ে গেছে।

    এদিকে ক্রেতারা বলছেন,একেতো অর্থ সংকটের মধ্যদিয়ে করোনায় লকডাউনের মধ্যে রমজান পালন করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে, তার উপর বাজারে নিত্য পন্যের দাম বাড়লে কদিন পরে চলা মুশকিল হয়ে যাবে। এজন্য তারা স্থানীয় প্রশাসনের নিকট বাজার তদারকির আনুরোধ জানিয়েছেন।

  • বগুড়ায় কুখ্যাত মাদক সম্রাট জহুরুল ইয়াবা ও হেরোইনসহ আটক-ভোরের কণ্ঠ।

    বগুড়ায় কুখ্যাত মাদক সম্রাট জহুরুল ইয়াবা ও হেরোইনসহ আটক-ভোরের কণ্ঠ।

    বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানে মাদক বিরোধী অভিযানে এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট একাধিক মাদক মামলার আসামী ও চোর কে ইয়াবা ও হেরোইনসহ আটক করেছে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ।

    শিবগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় সোমবার (১৯এপ্রিল) রাত সোয়া ৯ টার দিকে এস আই স্বপন মিয়া, এ এস আই উজ্জ্বলসহ সংগীয় ফোর্স নিয়ে গড়-মহাস্থান শাল বাগানের দক্ষিণ পাশে পাঁকা রাস্তার উপর থেকে মহাস্থানের বানারশী গ্রামের কুখ্যাত মাদক সম্রাট ও চোর মৃত তোতা (মুন্সি’র) ছেলে জহুরুল ইসলাম (৪০) কে আটক করা হয়।

    এসময় তাঁর দেহ তল্লাশি করে লুঙ্গীর ডান কোচার ভাজে পলিথিনের ভিতরে বিশেষ কায়দায় রাখা ২০ পুড়িয়া হেরোইন ও ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

    ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। এলাকাবাসী জানান, মাদক ব্যবসায়ী জহুরুল সে শুধু এলাকায় মাদকই ছড়ায় না, সুযোগ বুঝে ঘরে ঢুকে মোবাইল ফোন, কাপড়- চুপড়, থালাবাসন, টাকা পয়সা’সহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে নিয়ে যায়। এই চুরি কাজে সে নিজে নেতৃত্বসহ তার বেশকিছু সহযোগী রয়েছে৷ তাঁর চুরির অত্যাচার বেড়ে যাওয়ায় এলাকাসী সর্বক্ষণ আতঙ্ককে থাকতো। জহুরুল আটকের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।

  • চৌহালী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন-ভোরের কণ্ঠ।

    চৌহালী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন-ভোরের কণ্ঠ।

    সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে । ১৮ এপ্রিল রবিবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনাইদ হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম (সেরাজ) এর যৌথ স্বাক্ষরিত প্যাডে নিশ্চিত করা হয়েছে।

    এ দিকে চৌহালী উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব জাহিদ মোল্যা,শামীম আহমদ, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর সরকারের থৌথ স্বাক্ষরিত চৌহালী উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়।
    এতে আহবায়ক মোঃ জাহিদ সিকদার, যুগ্নআহবায়ক মোঃ মোক্তার হোসেন, ফিরোজ মিয়া , মান্না সিকদার, মোঃ আব্দুল কাহার ,মোঃ আব্দুল মালেক , শরিফুল ইসলাম,হাসান আলী,দেলোয়ার হোসাইন ,মোঃ আলামিন , জাহাঙ্গীর আলম , সলেমান ও ছানোয়ার হোসেনকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয় ।