জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম বলেছেন, বাংলাদেশ বড় শক্তি হচ্ছে জনসম্পদ। ত্রাণনির্ভর মানুষ কখনো জনসম্পদে পরিণত হতে পারে না। দেশের মানুষ এখন নিজ নিজ উদ্যোগে স্বাবলম্বী হয়ে সম্পদে পরিণত হচ্ছে।
শনিবার (১২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জেলা পর্যায়ে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ বিষয়ক কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিশেষ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে না খেয়ে মারা যাবার মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই।
তারপরও কিছু মানুষ ত্রাণের জন্য সিরিয়াল দেয়। একটি উন্নয়নশীল দেশে মানুষকে ডেকে নিয়ে চাল-ডালের প্যাকেট তুলে দেয়া দৃষ্টিকটু লাগে।
এ সময় জেলার স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের প্রতি নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন,জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ।
উক্ত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম বিপিএম, সিভিল সার্জন ডাঃ রামপদ রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন সুলতানা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লুৎফর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (রাজস্ব) মোঃ মোবারক হোসেন, সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সাইফুল ইসলাম, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান,এন,এস, আই সিরাজগঞ্জের যুগ্ন-পরিচালক আবু তাহের মোঃ পারভেজ, জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শফীউল্লাহ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাহেদ আলী,জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনোয়ার পারভেজ, জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারি পরিচালক – মোঃ মতিউর রহমান,শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শফিউল আলম,সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক হেলাল আহমেদ, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা প্রমূখ। এ সময় জেলা প্রশাসন ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং সাংবাদিকবৃন্দ।
মতবিনিময় সভা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে হতে প্রধামন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ৮০ জন ব্যক্তির হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন- এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতার গোপ্টা মহাসড়কের পূর্ব পাশে চর-মনসা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে সরকারি বেড়ির খাল থেকে মাটি কেটে ভিটা করে টিন শেড ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া যায় ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, স্থানীয় খোকনেগো বাড়ির আলি আহম্মেদ এর ছেলে প্রভাবশালী মো. জহির ও তার শ্যালিকা রোকেয়া বেগম রাতের আঁধারে বেড়ির খালের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো),র জমি কোনো অনুমতি ছাড়া প্রভাব বিস্তার করে দখল করছেন । স্থানীয় মো. জহির ও তার শ্যালিকা রোকেয়া বেগম সরকারী আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে রাতের আধাঁরে সরকারি জমি দখল করে গত কয়েকদিন যাবৎ এ টিন শেড ঘর নির্মাণ করছেন ।
নাম না বলা স্থানীয় কয়েকজন লোক গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, জহির যখন সরকারি খাল থেকে মাটি কাটে তখন আমরা তাকে নিষেধ করি, কিন্তু, সে আমাদের কথা না শুনে মাটি কেটে সরকারি খালকে গর্ত করে ফেলেছে, এখন এ বর্ষা মৌসুমে মাটি কেটে খাল গর্ত করার কারণে রাস্তার পাড় ভেঙ্গে খালে পড়ে, এবং, খালের পাশে থাকা অন্যান্য ঘর বাড়িরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. জহির এর কাছে জানতে গেলে তিনি বলেন, এ জমিতে আমার আগে একটি ছোট টিন শেড ঘর ছিলো, পরে আমি সেটা ভেঙ্গে জায়গা বাড়িয়ে বড় করে নতুন ঘর নির্মাণ করি, টিন শেড ঘর করবো, মাটি আনবো কোত্থেকে? তাই সরকারি খাল থেকে মাটি কেটে ভিটা করেছি, ঘর এবং, মাটি কেটে ভিটা করার জন্য আমি কারোই কাছ থেকে কোনো অনুমতি আনিনি ।
পাউবো,র জমি হলে পাউবো,র সাথে বুঝবো, আপনার সমস্যা কি? এখানেই শেষ নই! কিছুক্ষণ পর তিনি সময় সংবাদ সাংবাদিককে ফোন করে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে, পরিশেষে সময় সংবাদ সাংবাদিককে ভক্ষক দিয়ে দমানোর জন্য শুরু হয় একের পর এক তালবাহানা।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ যদি অবৈধ ভাবে সরকারি সম্পত্তি দখল করে থাকে তাহলে আমরা তাকে প্রথমেই বাধা প্রধান করে থাকি, এরপরেই নোটিশ করে চিঠি দিয়ে তাকে ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে সব কিছু সরিয়ে নিতে বলা হয়, তার পরেই আমরা ভেঙ্গে ফেলার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
সুতরাং, অপরাধী যতই ক্ষমতাবান লোক হোক না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নই, অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে । সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি ।
সিরাজগঞ্জে নেসকোর নতুন স্মার্ট প্রিপেইট মিটার লাগানোর পর থেকে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
শনিবার (১২জুন) সিরাজগঞ্জ শহরের হৈমবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে উক্ত গনশুনানী সভায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপস্থিত থেকে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গনশুনানীতে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন, বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পক্ষে নব কুমার কর্মকার ।
আলোচনা করেন, উপজেলা পরিষদের ভ্যাইস চেয়াম্যান এস, এম, নাছিম রেজা নূর দিপু, এস এম. আসাদুজ্জামান সোহেল. অ্যাডভোকেট মাহবুব -ই- খোদা টুটুল, আবু এহিয়া খান সহ বিভিন্ন গ্রাহক বৃন্দ।
সভা শেষে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট এক বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি. সিরাজগঞ্জ গঠন করা হয়।আগামী ২০জুন এই সমস্যা সমাধানের লক্ষে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়।
রাজবাড়ীর সদর উপজেলার রেলগেট এলাকা থেকে সাবিনা খাতুন নামের এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের দুই কেজি গাঁজাসহ আটক করা হয়েছে।সে দীর্ঘদিন যাবৎ হলো এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।আটককৃত সাবিনা খাতুন কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার সোনাইকুন্ডি গ্রামের সাহাজুল ইসলামের স্ত্রী।
রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার এম এম শাকিল উজ্জামানের নির্দেশনায় এস আই (নিঃ) হিরন কুমার বিশ্বাস সহ তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করেন।
এ বিষয়ে আমার জমিন পত্রিকার রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদকে এস আই হিরণ কুমার বিশ্বাস এ ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত নারী মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক বিক্রয় ও বহনের দায়ে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানায় বিচারাধীন আরোও মামলা রয়েছে ।
কর্তৃপক্ষর আশ্বাসে এবং বর্তমান দেশে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের কারনে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আন্দোলন পরিচালনা কমিটির শ্রমিক সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনসহ অন্দোলন সাময়িক ভাবে স্থগিত করেছেন।
আন্দেলিনে ঘোষিতো কর্মসুচির অংশ হিসেবে শনিবার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আন্দোলন পরিচালনা কমিটির ডাকে ১৫৪ জন শ্রমিকদের নিয়োগের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাদেরকে আশ্বস্ত করার কারণে সংগঠনের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সাঈদসহ সংগঠনের সদস্যদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংবাদ সম্মেলনসহ আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন বলে তারা জানিয়েছেন ।
সকাল ১১ টায় খনি এলাকার অফিস চত্বরে তারা এ ঘোষনা দেন।
এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সাঈদ বলেন, বর্তমান দেশে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের কারনে এবং কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরিপেক্ষিতে পরবর্তি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনসহ আন্দোন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো।
তিনি আরও বলেন,২০১৮ ইং সাল থেকে আমরা ১৫৪ জন শ্রমিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩য় ইউনিট নির্মাণে দক্ষতা অর্জন করেছি। সেই সময় কালে আমাদের সংগঠনের শ্রমিকদেরকে সেখানে চাকুরি দেওয়ার কথা ছিল । তাই আমরা ২০১৮ সাল থেকে সুশৃঙ্খলভাবে শ্রমিক নিয়োগের দাবীতে আন্দোলন করে আসছি। এবং উদ্ধর্র্তন কর্তৃপক্ষকে বার বার বিভিন্ন সময় আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নিয়োগের দাবী জানিয়ে আসছি। সেই সময় কালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাড: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি কেও বিষয়টি অবগত করেছি।
তিনিও আমাদেরকে আশ্বাস দিয়ে ছিলেন। তারপরেও আমাদের নিয়োগটি এখনও সম্পূর্ন হয়নি। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি,আমাদের প্রতি একটু দয়া করুন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের দাবী, ১৫৪ জন শ্রমিককে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়োগ দিতে আপনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এসময় বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আন্দোলন পরিচালনা কমিটির অন্যন্য শ্রমিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে চা একটি প্রধান অর্থকারী ফসল। আর তাই লালমনিরহাটের কৃষক ও পিছিয়ে নেই চা আবাদ করা থেকে। বর্তমানে লালমনিরহাটে প্রায় ১২০ একর জমিতে চা আবাদ হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে হাতিবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের একজন স্থায়ী বাসিন্দা জনাব আবু বক্কর। তিনি ২০১৮ সালে প্রায় এক একর জমিতে চা আবাদ করেছেন, যা বর্তমানে প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর ৮০০০ টাকার সবুজ চা পাতা বিক্রি করছেন তিনি। বাংলাদেশ চা বোর্ড হাতিবান্ধা শাখার উদ্দোগে তিনি চা আবাদ করেন তার নিজস্ব জমিতে। যা বর্তমানে তার সংসারে একটি প্রধান আয়ের মূল উৎস হয়ে দাড়িয়েছে। চা বোর্ড হাতিবান্ধা শাখার প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আরিফ খাঁন বলেন আগামী দুই মাসের মধ্যে তার মাসিক আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে ।
তার চা আবাদিতে তিনি, তার স্ত্রী ও এক ছেলে সন্তান কাজ করে বর্তমানে জিবিকা নির্বাহ করে থাকে। জনাব আবু বক্কর (চা চাষী) আরও কিছু অংশ জমিতে চা আবাদ করার ইচ্ছা পোষণ করছেন। নতুন করে চা আবাদের জন্য তিনি জমি রেডি করেছেন বলে জানা যায়।
চা বোর্ড হাতিবান্ধা শাখা জানান আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তার জমিতে চা চারা রোপণ করা হবে। আবু বক্কর (চা চাষী)র সাথে যোগাযোগ করে চা চারা সংগ্রহ করতে পারবেন লালমনিরহাটের কৃষকগণ। আবার সরাসরি বাংলাদেশ চা বোর্ড হাতিবান্ধা শাখার সাথেও যোগাযোগ করেও এ চা চারা সংগ্রহ করতে পারবেন।
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ শনিবার (১২ জুন)। বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০০২ সাল থেকে জুন মাসের ১২ তারিখে দিবসটি পালন করা শুরু করে। বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় দিবসটি পালিত হবে।
শিশুশ্রম নয়, শিশুর জীবন হোক স্বপ্নময়থ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিবসটি পালন করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। এ উপলক্ষে বাংলাদেশে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করবে।
২০০২ সাল থেকে আইএলও শিশুর অধিকার সুরক্ষা ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম প্রতিরোধের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশে দিবসটি পালিত হয়।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯৪টি শিশু বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত। এর প্রায় ৭৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ (১২ লাখ ৮০ হাজার ১৯৫টি শিশু) নিয়োজিত ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জরিপ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সরকার ২০১৫-১৬ অর্থবছর শিশু বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে শিশু উন্নয়নকে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেটের মূলধারায় নিয়ে এসেছে। শিশুদের জন্য বরাদ্দ প্রতি বছরই বাড়ছে। সরকারের লক্ষ্য ২০২০ সাল নাগাদ শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বরাদ্দ মোট বাজেটের ২০ শতাংশে উন্নীত করা। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ১৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে শিশুশ্রম নিরসনে জনসচেতনতা বেড়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার শিশুশ্রম নিরসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতোমধ্যে ৩৮টি কাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত একলাখ শিশুকে প্রত্যাহার করে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হবে।
সরকার জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি প্রণয়ন করেছে ২০১০ সালে। এ নীতি বাস্তবায়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং শিশুশ্রম নিরসন কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত জাতীয় বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলো কাজ করছে।
কোনও শ্রমিকের সন্তান যাতে শ্রমে নিযুক্ত না হয়, সেজন্য শ্রমিকের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপে শিশুশ্রম নিরসনে জনসচেতনতা বেড়েছে।
শিশুশ্রমের কারণ:
দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ভয়াবহ সমস্যা হলো শিশু শ্রম। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশু শ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক দুরবস্থা হচ্ছে শিশু শ্রমের প্রথম ও প্রধান কারণ। লেখাপড়ার খরচ দিতে না পেরে এবং সংসারের অসচ্ছলতার গ্লানি একজন মা-বাবাকে বাধ্য করে তার সন্তানকে শ্রমে নিযুক্ত করতে।
উপমহাদেশে শিশুশ্রম:
বাংলাদেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ৫-১৪ বছর বয়সী মোট শিশু জনসংখ্যার ১৯%, ছেলেশিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ২১.৯% এবং মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে তা ১৬.১%। অর্থনীতির খাত অনুযায়ী শিশুশ্রমিকদের বণ্টনের চিত্র হচ্ছে: কৃষি ৩৫%, শিল্প ৮%, পরিবহন ২%, অন্যান্য সেবা ১০% এবং গার্হস্থ্যকর্ম ১৫%। কিন্তু পরিবহন খাতে শিশুশ্রমের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য ব্যাপক। অথাৎর্ যেখানে ০.১% মেয়ে শ্রমিক সেখানে ছেলে শ্রমিক হলো ৩%। তবে শিশুশ্রম নিয়োগের প্রায় ৯৫%-ই ঘটে অনানুষ্ঠানিক খাতে। এদের জন্য সাপ্তাহিক গড় কর্মঘণ্টা আনুমানিক ৪৫ এবং মাসিক বেতন ৫০০ টাকার নিচে। মেয়ে শিশুশ্রমিকের মাসিক বেতন ছেলে শিশুশ্রমিকের তুলনায় গড়ে প্রায় ১০০ টাকা কম। বাংলাদেশের আনুমানিক ২০% পরিবারে ৫-১৪ বছরের কর্মজীবী শিশু রয়েছে। এই সংখ্যা শহুরে পরিবারগুলির জন্য ১৭% এবং গ্রামীণ পরিবারের জন্য ২৩
শিশু শ্রম প্রতিরোধে বাংলাদেশের আইন:
ন্যূনতম মজুরি অধ্যাদেশ (১৯৬১) কিশোরসহ সকল শ্রমিকের জন্য ন্যূনতম মজুরি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে এবং নিয়োগকারী কর্তৃক কিশোর শ্রমিককে (১৮ বছরের নিচে) এই অধ্যাদেশের আওতায় গঠিত বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণের কম মজুরি প্রদান বেআইনি বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
দোকান ও স্থাপনা আইন (১৯৬৫) দোকানে বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ১২ বছরের কমবয়সী শিশুনিয়োগ নিষিদ্ধ করেছে। এই আইন ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যক্তির জন্য শ্রমঘণ্টাও নির্ধারণ করে দিয়েছে।
কারখানা আইন (১৯৬৫) ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ১৪ বছরের কমবয়সী ব্যক্তিকে নিয়োগদান নিষিদ্ধ করেছে এবং শিশু ও কিশোরের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কাজের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রবিধান দিয়েছে। এছাড়া এই আইন কোন কারখানায় নারী শ্রমিকদের ৬ বছরের নিচে সন্তানদের লালন-পালনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির নির্দেশ দিয়েছে।
শিশু আইন (১৯৭৪) এবং শিশু বিধি (১৯৭৬) সকল ধরনের আইনগত প্রক্রিয়াকালে শিশুর স্বার্থ রক্ষা করবে। এই আইনে আলাদা কিশোর আদালত গঠনের জন্য বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু অপরাধী যদি যৌথভাবে একই অপরাধ করে থাকে তাহলেও তাদের যৌথ বিচার অনুষ্ঠান করা যাবে না।
খনি আইন (১৯২৩) ১৫ বছরের কম বয়সের কোন ব্যক্তিকে কোন খনিতে নিয়োগদান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং ১৫ থেকে ১৭ বছরের যুবকদের নিয়োগ প্রদান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
শিশু নিয়োগ আইনে (১৯৩৮) বলা হয়েছে যে রেলওয়ের কয়েকটি কাজে শিশুদের নিয়োগ দেওয়া যাবে না এবং রেলওয়ে কারে অথবা বাসে অথবা কোন বন্দরের অধীন এলাকায় শিশুরা কোন দ্রব্য বিক্রয় করতে পারবে না। শিশু (শ্রম) আইনে (১৯৩৩) ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর শ্রম চুক্তির অঙ্গীকার অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে।
গণভবনের লোক ভুয়া পরিচয়ে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের পানবাড়ী ক্যাম্পে আটক।এ সময় প্রতারক চক্রের সদস্যরা অবৈধভাবে ভারতীয় গরু আনার প্রস্তাব দিলে বিজিবি’র সদস্যরা তাদের আটক করেন।
গতকাল শুক্রবার (১২ জুন) মধ্য রাতে প্রতার চক্রের ৫ সদস্যসহ ৭ জনের নামে পাটগ্রাম থানায় প্রতারনার মামলা দ্বায়ের করেছেন পানবাড়ী ক্যাম্পের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম।
আটককৃতরা হলেন, বন্দর নগরী চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মোবারক গোনা এলাকার আলাউদ্দিন ভুইয়া সাগর (৫০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়াইল উপজেলার উচ্চালিয়াপাড়া এলাকার আশরাফ উদ্দিন (৫০), রাজবাড়ী সদর উপজেলার পশ্চিম ভবানীপুর এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আজিজুল হক (৪৮), বরিশালের আগোইলঝড়া থানার বারাক এলাকার আব্দুল সাত্তার হোসেলের ছেলে রফিক মিয়া (৩৫) ও পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামের আক্তার উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৪৩)।
পাটগ্রাম থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক জানান, আটককৃত প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য শুক্রবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র পানবাড়ী ক্যাম্পে গিয়ে গণভবনের লোক পরিচয়ে ভারত থেকে তাদের কিছু গরু আসবে এ বিষয়ে বিজিকে সহযোগিতা করতে বলেন। এ ঘটনায় সন্দেহে সৃষ্টি হলে বিজিবি’র সদস্যরা প্রতারক ৫ জনকে আটক করেন। পরে সারা দিন খোজঁখবর নিয়ে জানাতে পারেন তারা ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করেছেন।
অপরদিকে শেখ যুবরাজ নামে অপর একজন মোবাইল ফোনে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দাবী করে বিজিবি’র সিও’কে ম্যাসেজ দিয়ে অবৈধ পথে ভারতীয় গরু পারাপারের প্রস্তাব দেন। এ ঘটনায় লুনা হুমায়ন পারভীন নামে এক নারী নিজেকে যুব মহিলালীগের কেন্দ্রীয় সদস্য পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে তদবির করেন।
এ ঘটনায় বিজিবি’র পানবাড়ী ক্যাম্পের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার মধ্য রাতে ৭ জনের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃতদের আজ শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
যমুনা, করতোয়া, হুরাসাগর, বড়ালসহ ছোটো -বড় বিভিন্ন নদী বেষ্টিত শাহজাদপুর। সেই সাথে বিল-ঝিল, হাওরে সমৃদ্ধ এই জনপদ। দেশের অন্যতম বৃহত্তম চলনবিলের কিছুটা অংশও রয়েছে শাহজাদপুরে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এটি নিম্নাঞ্চল হিসেবেই পরিচিত। আবহমান বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের আদর্শ রূপ এই অঞ্চল। শাহজাদপুরের মূল শহরের চারিপাশে অগুনিত নক্ষত্রের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামগুলো আবহমান বাংলাকেই উপস্থাপন করে। ৬ লক্ষাধিক মানুষের এই জনপদে একসময় নৌপথ ছিল প্রধান যোগাযোগ ব্যাবস্থা। কালের বিবর্তে তার এখন পরিবর্তন এসেছে।
এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও পৌঁছে গেছে পাকা সড়ক। বিশেষ করে গত এক দশকে গ্রাম অঞ্চলের মানুষের জীবনমান পরিবর্তন করতে যোগাযোগ ব্যাবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন লক্ষ্য করার মতই। মাঠের পর মাঠ পেড়িয়ে সিঁথির মত যে মেঠোপথ বয়ে চলতো এক টুকরো গ্রামের দিকে সেই রাস্তাও এখন কংক্রিটের রাস্তায় পরিবর্তন হয়েছে। একসময় ঘোড়া, গরু বা মহিষের গাড়ি ছাড়া যে সমস্ত রাস্তায় চলাচল করতে কষ্ট হতো সে সমস্ত জায়গায় সশব্দে ছুটে চলে বিশাল বিশাল ট্রাক,বাস, লেগুনা, সিএনজি। এর ফলে শহরের সাথে যেমন মানুষের দূরত্ব ঘুচেছে তেমনি বেড়েছে কর্মসংস্থান। এছাড়াও শাহজাদপুরের তাঁতশিল্প ও দুগ্ধশিল্পের জন্য রয়েছে বিশেষ খ্যাতি।
এখানকার তাঁতশিল্পে উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গির ব্যাপক সুনাম রয়েছে দেশে। এখানকার দ্বিতীয় প্রধান শিল্প হচ্ছে দু্গ্ধশিল্প। বাংলাদেশের বৃহৎতম দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার সবচেয়ে বড় কারখানাটি শাহজাদপুরে অবস্থিত। এই কারখানায় দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াও দুগ্ধজাত ঘি, মাখন, আইসক্রিমসহ নানা পণ্যের উৎপাদন হচ্ছে। মিল্টভিটার প্রায় শতকরা আশি ভাগ দুধ শাহজাদপুরে বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের দুগ্ধ খামার থেকে সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ২,৯০,০০০ লিটার দুধ শাহজাদপুরেই উৎপাদন হয়। রাস্তা -ঘাট পাকা করনের ফলে খুব সহজেই খামারিরা তাদের উৎপাদিত দুধ পৌছে দিতে পারছেন নির্ধারিত গন্তব্যে।
অপরদিকে এই জনপদে ফসলি জমি রয়েছে ৪৯,৩৩২ হেক্টর। এই বিশাল মাঠের উৎপাদিত ফসল একসময় রাস্তার অভাবে সময়মত বাজারজাত করতে পারতেন না কৃষক। ফলে উৎপাদিত ফসলের বিরাট একটি অংশ নষ্ট হয়ে যেত। প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে দিয়ে ডুবো সড়ক বা সাবমার্সেবল রাস্তা হওয়ায় খুব সহজেই কৃষক তাদের ফসল যেমন ঘরে তুলতে পারছেন তেমনি সময়মত বাজারজাত করতে পেরে হাতে পাচ্ছেন নগদ অর্থ।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠের বুক চিড়ে নির্মিত কংক্রিটের রাস্তায় বদলে গেছে গ্রামের মানুষের জীবনমান। সবুজ গালিচার উপর গড়ে ওঠা পাকা সড়কের কল্যাণে নতুন দিনের সন্ধান পেয়েছেন শাহজাদপুরবাসী।
সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর, রূপবাটি, গালা, পোতাজিয়া, নরিনা, গাড়াদহ, হাবিবুল্লাহ নগরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের চিত্র দেখা যায়। নদী-নালা, বিল-ঝিল বেষ্টিত এসব ইউনিয়নের মানুষের আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা যেন শহরের মতোই।
সম্প্রতি উপজেলার বড়ধুনাইল, বাগ ধুনাইল, রূপবাটি, সদামারা, ভুলবাকুটিয়া, রতনকান্দি, আহম্মদপুর, মোয়াকোলা, আন্ধারমানিক,চর ধুনাইল, করশালিকা, দুগালি,বায়ড়া, শিমুলিয়া, রেশমবাড়ি, মশিপুর, নরিনা গিয়ে দেখা যায় লম্বা কংক্রিটের সড়ক মাঠের পর মাঠ পেড়িয়ে ঢুকে পড়েছে এক চিলতে গ্রামের ভিতর। রাস্তায় চলছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, শ্যালো ইঞ্জিন চালিত তিন চাকার বেশ কিছু যানবাহন। এছাড়া রয়েছে যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল। কিছু দূর যাবার পর দেখা যায় বিশাল বাজার। বড়ধুনাইল নামে এ জনপদটি যেন প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে ওঠা এক চিলতে শহর। বড়ধুনাইল বাজার থেকে রাস্তাটি চলে গেছে আরও বহুদূর আরেকটি গায়ে। এভাবেই কংক্রিটের সড়কের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে গ্রামাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোর আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা।
বড়ধুনাইল বাজার থেকে শাহজাদপুর শহরের দিকে তিন চাকার বেটারিচালিত গাড়িতে আসছিলেন আইনজীবী আলমগীর হোসেন।
জানতে চাইলে আলমগীর হোসেন বলেন, বাবা-দাদার আমল থেকে মাটির রাস্তায় পায়ে হেটে কাদামাটিতে মাখামাখি করে যেতাম শহরে। সময় লাগত ২/৩ ঘন্টা। এখন পাঁকা রাস্তা হওয়ায় ২০/২৫ মিনিটেই পৌছে যাচ্ছি গন্তব্যে।
কথা হয় রতনকান্দি গ্রামের ব্যাবসায়ী ও যুবলীগ নেতা এনামুল হক হিরার সাথে, রাস্তা পাকা হওয়ার আগে আমাদের গ্রামের মানুষের জীবন ছিল দুর্বিসহ।
হটাৎ কেউ অসুস্থ হলে কাধে করে নিতে হতো। গ্রামের কৃষকেরা ফসল তুলতে পারতো না ঠিক মত। এখন কৃষকেরা তাদের সোনার ফসল আয়েশ করে গাড়িতে করে বাড়ি নিয়ে আসেন।
ভুলবাকুটিয়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া ছাত্র জিহাদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, একসময় রাস্তা ছিলনা বলে স্কুল থেকেই শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়তো। কারন যানবহন ছাড়া দশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে কলেজে যাওয়া সত্যি দূরহ ব্যাপার ছিল। এখন রাস্তা হওয়ায় সেই দূরত্ব ঘুচেছে।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কৈজুরি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রাম হবে শহর- প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে বাস্তবায়ন করতে আমরা কাজ করছি। গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যেও এখন শহরের সুবিধা পৌঁছে গেছে। নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে টি-আর কাবিখার বরাদ্দ এবং এলজিইআরডির মাধ্যমে নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে এবং নীচু এলাকায় ডুবো রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে গ্রামের মানুষ নতুন নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হয়েছে এবং সার্বিক ভাবে তাদের জীবনমানের উন্নতি ঘটেছে।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে নিমগাছীতে গৃহবধুর রহস্য মৃত্যুর পর থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপর। নিহত গৃহবধুর পুত্রের বর্ণনা আমার মায়ের কোন শত্রু ছিল না। তবে মটর সাইকেল র্দূঘটনায় বুকের ব্যাথার কথা বারবার সে বলেছে।
সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানাযায়, উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের তাঁতীপাড়া গ্রামে ২৫ বছর পূর্বে ৪ শতক বাড়ীর জায়গা ক্রয় করে গৃহবধু তার স্বামী সন্তোষ ও পুত্র সুমনকে নিয়ে বসবাস করেআসছিল।
গত ১ সপ্তাহ পূর্বে উক্ত গৃহবধু তার একমাত্র পুত্র সুমনকে সাথে দিয়ে আবুদিয়া গ্রামে যেতে মটর সাইকেল র্দুঘটনার কবলে পড়ে। এতে ঐ গৃহবধু আহত হয়ে স্থানীয় ডা: অসীমের কাছে চিৎকিসা সেবা নেয়। কিন্তু গৃহবধুর বুকের ব্যাথা কমছিল না।
এ পর্যায়ে মটর সাইকেল দূর্ঘটনার ১ সপ্তাহ পর গত ৪ মে শক্রবার রাত্রি ৮টার দিকে স্থানীয় লিটন চন্দ্র গুনের পুকুরে মাছ পাহারা দিতে গিয়ে গৃহবধুর লাশ দেখতে পেয়ে সাথে সাথে থানা পুলিশকে খবর দেয়।
রায়গঞ্জ থানার ওসি সহিদুল ইসলাম লাশটি ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। গৃহবধুর অপমৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশ পুকুর পাহারাদার জয় ঘোষ ও পুকুর মালিকের বড় ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রাম কৃষ্ণ গুন সহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
তাদের জিজ্ঞাসা বাদে পুলিশ কোন তথ্য পায়নি।পুলিশ তাদের ছেড়ে দেন।অপমৃত্যুর ৫ দিন পর বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয় মিডিয়া কর্মী সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ সময় গৃহবধুর ছেলে সুমন কুমার দত্ত মায়ের অপমৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে অত্যান্ত আবেগে জানায় মায়ের কোন শত্রু ছিল না।মাকে কেউ হত্যা করবে আমি তা বিশ্বাস করিনা। মা মাঝে মধ্যে ঐ পুকুর পাড়ে যেত।হয়তবা হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারে। তবে ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে সবকিছু জানা যাবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বিজয় কুমার পোদ্দার, সুব্রত চন্দ্র ও সুজন চন্দ্র সহ একাধিক প্রতিবেশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা গৃহবধুর বিষয়ে কিছুই বলতে পারেনি।
গৃহবধুর প্রতিবন্ধি স্বামী সন্তোষ কুমার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, কে আমাকে সেবা যত্ন করবে। আমার সবকিছু হারিয়ে গেল।