Author: admin

  • মাধবপুরে শিল্পবর্জ্যের ভয়াবহ দূষণে পরিবেশ হুমকির মুখে, ল্যাব টেস্টে মিলেছে দুষণ।

    মাধবপুরে শিল্পবর্জ্যের ভয়াবহ দূষণে পরিবেশ হুমকির মুখে, ল্যাব টেস্টে মিলেছে দুষণ।

    মাধবপুরহবিগঞ্জপ্রতিনিধিঃ
    হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিল্পবর্জ্যের ভয়াবহ দূষণে হুমকির মুখে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের পরিবেশ ও বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বর্জ্য খালের ছেড়ে দেওয়ায় দুষণ ছড়িয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকায়।
    স্থানীয়রা জানান, উপজেলার হরিতলা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে ভারটেক ওয়্যার কোম্পানি লি., পাইয়োনিয়ার ডেনিম লি. ও নাহিদ টেক্সটাইল লি. নামে তিনটি বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। প্রতিষ্ঠান তিনটি তাদের উৎপাদিত অপরিশোধিত বর্জ্য পাশ্ববর্তী খাল দিয়ে নিষ্কাশন করছে। স্থানীয়দের কাছে ওই খালটি ‘রাজখাল’ নামে পরিচিত।
    তারা জানান- এক সময় এই খালে মাছ শিকার করতেন এলাকার মানুষ। তখন বিভিন্ন ধরণের দেশীয় মাছের বিচরণ ছিল খালে। এখন সেই খালে মাছ থাকা দূরের কথা, খালের পানি পোড়া মবিলের মতো কুচকুচে কালো। দুর্গন্ধে আশপাশে টেকা মুশকিল।
    উপজেলার সাতপাড়িয়া, খতিয়ারপুর, পিয়াম ও সাকুসাইল গ্রামের মানুষরা সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার। এই খালের পানিতে নেমে মারা যাচ্ছে হাঁস-গোরগ, পানি পুকুরে প্রবেশ করে মারা যাচ্ছে চাষের মাছও। এমন কি গৃহপালিত পশু এই খালের পানি পান করে বিভিন্ন সময় অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন শ্বাসকষ্ট ও চর্মসহ বিভিন্ন রোগে।
    সম্প্রতি খাল ও অভিযুক্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান তিনটি থেকে নির্গত পানির মান পরিক্ষা করেছে সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়। যেখানে খালের পানি অতিরিক্ত মাত্রায় দুষণের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া একটি কারখানার পানিতেও অতিমাত্রায় দুষণ পাওয়া গেছে।
    পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ অনুযায়ী ভেতরস্থ পানির পৃষ্ঠর স্বাভাবিক মান ৬ থেকে ৯ পিএইচ হওয়ার কথা। কিন্তু রাজখালের পানি ল্যাব পরিক্ষায় ১০ দশমিক ৬৫ পাওয়া গেছে। সিওডি এর স্বাভাবিক মান প্রতি লিটারে ৫০ মিলিগ্রাম। সেখানে রয়েছে ১ হাজার ২০৮ মিলিগ্রাম এবং টিডিএস লিটারে ১০০০ মিলিগ্রামের স্বাভাবিক স্থলে রয়েছে ১ হাজার ৯৪৯ মিলিগ্রাম।
    আশপাশের অন্তত ৫টি হাওরের ফসলি জমিতে সেচের বড় উৎস এই রাজখাল। অথচ খালটি দুষণের কারণে ওই এলাকার অনেক জমি এখন অনাবাদি থাকছে। যেসব জমিতে ধান চাষ হচ্ছে সেগুলোতেও কমে গেছে উৎপাদন। সেই সাথে জমি প্রস্তুতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
    সাতপাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই খালে এক সময় আমরা মাছ ধরতাম। প্রচুর মাছ পাওয়া যেত খালের মধ্যে। কিন্তু এখন মাছ পাওয়াতো দূরের কথা, দুর্গেন্ধের কারণে খালের আশপাশে যাওয়া যায় না। খালো নামলে কোমর পর্যন্ত ঢুকে যায়। পানি কুচকুচে খালো।’
    একই গ্রামের মোতাহের হুসাইন বলেন, ‘আমরা বাড়ির পাশ দিয়ে এই খাল বয়ে গেছে। কোম্পানীর পঁচা পানি ছাড়ার কারণে দুর্গেন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। হাঁস-মোরগ, গরু-ছাগল পানিতে নামলে মারা যায়, অসুস্থ হয়ে যায়। আমাদেরও এই পানিতে পা-হাত লাগালে চুলকায়। কোম্পানীর পানির কারণে আমরা খুব কষ্টে আছি।’
    তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও আমার গ্রামের এক খামারির দুইশ’ হাঁস মারা গেছে। এছাড়া আমার চাচাতো ভাইয়েরও ৭-৮টি হাঁস মারা গেছে।
    আব্দুল কাদির নামে এক কৃষক বলেন, ‘খালের পানি দিয়ে সেচ দেওয়া যায় না। বর্ষায় এই পানি জমিতে ঢুকে জমির মধ্যে ক্যামিকেলের লেয়ার পড়ে থাকে। এগুলোর কারণে ফলন হয় না। আবার লেয়ার পরিস্কার করতে গেলে প্রতি বিঘায় ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে আমাদের।
    কৃষক রুক্কু মিয়া বলেন, ‘এই পানি যে জমিতে ঢুকে সেই জমিতে ধান হয় না। আমাদের এলাকায় অনেক জমি আছে সেগুলো অনাবাদি পড়ে থাকে। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করার সাহস পাই না। প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
    এলাকাবাসীর অভিযোগ- দুষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে কারখানার নিয়োজিত দালালদের মাধ্যমে দেওয়া হয় হুমকি-ধামকি। প্রায় সময় মারপিট করার অভিযোগও করেন কেউ কেউ।
    প্রতিবেদন সংগ্রহের সময় ঘটনাস্থলে হঠাৎ উপস্থিত হন কারখানার নিয়োজিত তিন দালাল। তার মধ্যে একজন হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদল নেতা এনামুল হক এ্যানি। তার সাথে স্থানীয় দুই যুবক।
    এ সময় তারা কারখানার পক্ষে চাপাই গেয়ে উত্তেজিত হন গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। ছাত্রদল নেতা এ্যানি বলেন, ‘এই এলাকায় ইন্ডাস্ট্রি হওয়ার কারণে এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে। আপনারা এই উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করতে চান। আমি মনে করি আপনারা ভারতের ‘র’ এর এজেন্ড হিসেবে কাজ করছেন।’এ সময় তারা দূষণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার হুমকিও দেন।
    এদিকে, সম্প্রতি রাজখাল ও এর আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেছেন ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন’র নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা জানান, দুষণ বন্ধে সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
    বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ‘মাধবপুরে দীর্ঘদিন ধরে শিল্পদূষণ হচ্ছে, যা স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আমরা চাই ইন্ডাস্ট্রি হোক, কর্মসংস্থান হোক। তবে ইন্ডাস্ট্রিগুলো তাদের বর্জ্য পরিশোধন নিশ্চিত করবে, সেটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারা তা করছে না।’
    তিনি বলেন, ‘রাজ খালের দুষিত পানি বলভদ্র নদী হয়ে মেঘনা পর্যন্ত গিয়ে পড়ছে। যার ফলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা জানি, এই দূষণ মনিটরিংয়ের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। তবে তাদের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
    শরীফ জামিল আরও বলেন, ‘সহজ কথায় বলতে গেলে, এই এলাকায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে উন্নয়ন হতে পারে না। এ বিষয়ে প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হবে। আমরা মামলা পর্যন্ত যওয়ার কথা ভাবতে পারি।
    সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, ‘আমরা হাঁস মারা যাওয়ার পর রাজখাল থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করি। এছাড়া তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত পানির নমুনাও সংগ্রহ করি। তবে খালের পানিতে দেখা গেছে প্যারামিটার অনেক বাইরে। একইভাবে তিনটি গ্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত পানির মানেও মাত্রাতিরিক্ত দুষণ পাওয়া গেছে। তবে প্রক্রিয়া চলমান থাকায় সেই প্রতিষ্ঠানের নাম এই মূহূর্তে প্রকাশ করতে চাই না। আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট আইনে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
  • মোরেলগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু গ্রেপ্তার-২।

    মোরেলগঞ্জে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু গ্রেপ্তার-২।

    ডেস্ক রিপোর্টঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উর্মি সাহা(২৭) নামের এক গৃহবধূ উর্মি সাহার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর স্বামী শিব্বির তালুকদারকে গ্রেপ্তার করেছে।

    মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের বয়রাতলা এলাকার শিব্বির তালুকদারের বাড়িতে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

    জানা যায় বুধবার(২২ জানুয়ারি)সকাল ৭ টার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ গাছ থেকে নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। নিহত উর্মি সাহা ভাইজোড়া গ্রামের সালেছ সাহার মেয়ে। তিন বছর আগে পারিবারিক ভাবে শিব্বিরের সাথে তার বিয়ে হয়। খালেদ নামে তার চার মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

    উর্মির বাবার দাবি তার মেয়েকে হত্যার পর মরদেহ গাছের সাথে ঝুলিয়ে দিয়েছে। নিশ্চিত এটি হত্যাকাণ্ড আত্মহত্যা নয়।আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

    মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. রাকিব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি জানান বুধবার(২২ জানুয়ারি) ভোরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নিহত উর্মির মরদেহ গাছের সাথে ঝুলে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।পরে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।এ ব্যপারে থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। তবে, নিহতের বাবা ও তার পরিবারের মৌখিক অভিযোগের কারনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী শিব্বির তালুকদার ও তার ভাই শাহিন তালুকদারকে থানা নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শিব্বির জানান তার স্ত্রী উর্মি সাহা রাতে একসাথে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোররাতে স্ত্রীকে বিছানায় না পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি স্ত্রীর মরদেহ গাছের সাথে ঝুলে আছে। পরে তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে থানা পুলিশকে খবর দেন।

  • মাধবপুরে বাবার দায়ের কোপে মেয়ে খুন:ঘাতক বাবা গ্রেপ্তার।

    মাধবপুরে বাবার দায়ের কোপে মেয়ে খুন:ঘাতক বাবা গ্রেপ্তার।

    মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি।
    হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের ঘণশ্যামপুর গ্রামে বাবার দায়ের কোপে মেয়ে নিহত হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারী) দুপুর আড়াইটার সময় উপজেলার ঘণশ্যামপুর গ্রামের মঈনুদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম রানু বেগম (১৫)। সে ঘনশ্যামপুর গ্রামের মঈনুদ্দিন (৪২) এর মেয়ে।
    পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে রানু বেগম প্রায় সময়ই মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ছেলের সাথে কথা বলতো। বিষয়টিকে তার পিতা মঈনউদ্দীন ভালোভাবে নিতেন না।মেয়েকে নিবৃত্ত করতে বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে আজ দুপুরে কথা বলার সময় পিছন দিক থেকে ধারালো দা দিয়ে মেয়ের ঘাড়ে কোপ দিলে মেয়ের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
    খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতক পিতাকে আটক করেছে। নিহত রানু বেগমের মা শাহেদা বেগম জানান, ‘ মোবাইলে কথা বলার জেরেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমার স্বামী। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’ ঘাতক মঈনুদ্দিনও থানা সাংবাদিকদের কাছে মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন আটক মঈনুদ্দিন থানা হেফাজতে রয়েছে।এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
  • নীলফামারীতে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপনের শুভ উদ্বোধন।

    নীলফামারীতে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো ধানের চারা রোপনের শুভ উদ্বোধন।

    ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ
    নীলফামারীর ডিমলায় প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের এর মাধ্যমে ব্রি-৯২ জাতের ধান রোপনের কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
    “ডিমলার কৃষি বৈচিত্র্যময় কৃষি”  এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কৃষি সম্প্রসারণ ডিমলার আয়োজনে বুধবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর তিতপাড়া গ্রামে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সমালয় চাষাবাদ (Synchronized Cultivation)  বাস্তবায়নের লক্ষে ব্রি-৯২ জাতের ধানের চারা রাইচ ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপনের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর,নীলফামারী এবং সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মিয়া।
    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(শস্য) জাকির হোসেন, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(উদ্যান) নিকছন চন্দ্র পাল এবং উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার শামিমা ইয়াসমিন।
    অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার মীর হাসান আল বান্না।
    ডিমলা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় ২০২৪- ২৫  অর্থ বছরে ব্লক প্রদর্শনীর মাধ্যমে ট্রেতে বীজতলা বাস্তবায়ন এবং রবি মৌসুমে প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় গত ২৩ ডিসেম্বর মেশিনের মাধ্যমে ডিমলা উত্তর তিতপাড়া ব্লকে ট্রেতে বীজ বপন করা হয়। ব্রি-৯২ জাতের ৬৩০০ ট্রের মাধ্যমে।
    ডিমলা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান জানান, বর্তমানে চালা গুলোর বয়স ২৫ দিন। চলতি মৌসুমে রাইচ ট্রান্সফর্মার যন্ত্র দ্বারা ডিমলা ইউনিয়নের উত্তর তিতপাড়া ব্লকে ৫০ একর জমিতে ব্রি-৯২ জাতের ধানের চারা রোপন করা হবে এবং যন্ত্র দ্বারা ধান রোপন করলে কৃষকরা উপকৃত হবে।
    কৃষক আমির আলী জানান, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সারা দেশের ন্যায় ডিমলা উপজেলার কৃষি অফিসারগন কৃষকদের এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে।
    অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিমলা সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আবু তালেব, উপজেলার দশটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন, স্থানীয় কৃষক- কৃষানী সহ সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।
  • রামপালে গুলি উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার-২ঃ মুল হোতা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

    রামপালে গুলি উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার-২ঃ মুল হোতা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

    রামপাল(বাগেরহাট)প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের রামপালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোঃ আবু সাঈদ’র রাইস মিল থেকে ২৫ রাউন্ড শটগান ও এক রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধারের ঘটনার পাঁচ দিন পার হলেও পুলিশ মাত্র দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। বাকি আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। অন্য আসামিদের এখনও পুলিশ প্রশাসন আটক করতে সক্ষম না হওয়ায় জনমনে তীব্র  অসন্তোষ বিরাজ করছে।

    এ ঘটনায় আবু সাঈদ (৬০)সহ ২১ জনকে আসামি করে বাঁশতলী এলাকায় এস কে আল মামুন(৩৯) নামের এক ব্যক্তি গত (১৮ জানুয়ারি) বাদি হয়ে রামপাল থানায় একটিমা মলা দায়ের করেছেন।

    মামলার অন্য আসামিরা হলো- বাঁশতলী এলাকায় শেখ মোহাম্মদ আলী(৫৮), মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল(৪৬), শেখ নাজিম উদ্দিন(৫২), শেখ কুতুব উদ্দিন(৫৮), শেখ বায়েজীদ হোসেন(৫৫), শেখ মুজিবর(৫৫), মনি শেখ(৪২), শেখ মাতলুব হোসাইন শিহাব(২৯), শিকদার শরিফুল(৫৫), শিকদার জিয়া(৪৬), আল আমিন সরদার(৩৫), শেখ সরোয়ার হোসেন(৪৫), শেখ কামরান হোসেন(৩৮), শেখ সোহাগ(৪৩), শেখ রুবেল(৩৩), দৈনিক অভয়নগর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার  সাংবাদিক মোঃ ইকরামুল হক রাজিব(৩৯), সরদার মিকাইল(৪৩), শেখ মাকসুদুর রহমান(৫৫), হাওলাদার বুলু(৪৫) ও হাওলাদার মিঠুন(৪২)।

    ঘটনার দিন রাতে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তৎক্ষনাৎ পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ’র ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মাতলুব হোসাইন ও দৈনিক অভয়নগর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস)’র বাগেরহাট জেলার সহ-সভাপতি রাজিবকে আটক করে।

    থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, আবু সাঈদ ও বাকি আসামিরা হাসিনা সরকারের পতনের পর তারা সবাই আত্নগোপনে চলে গেলেও গত ১৭ জানুয়ারি, সন্ধ্যায় হঠাৎ করে তারা এলাকায় প্রবেশ করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য কালীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন আবু সাঈদের সোনালী রাইস মিলের সামনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একত্রিত হতে থাকে। এ খবরে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত ও

    সাধারণ লোকজন একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এসময় আবু সাঈদ জনতার দিয়ে উদ্দেশ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলির শব্দে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আবু সাঈদ ও তার সঙ্গীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।এদিকে আত্মগোপনে থেকে আবু সাঈদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে এ

    প্রতিবেদককে জানান যে, সরকারের সাথে চাউল সরবরাহের চুক্তি মোতাবেক কিভাবে চাউল সরবরাহ করবো-তা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছিলাম। আমি গোপন সূত্রে জানতে পারি এলাকার কিছু লোক আমাকে মেরে ফেলার জন্য ও রাইস মিল লুটপাট করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর পেয়ে আমি মিলের প্রধান গেইট বন্ধ করে কর্মচারীদের সাথে নিয়ে ভেতরে অবস্থান করি। সন্ধ্যার পর আড়াই শতাধিক লোক মিলের প্রধান গেইট ভেঙে ভেতরে আসার চেষ্টা করে। তারা একনাগাড়ে ইট-পাথরের টুকরো নিক্ষেপ করে। তাদের হামলায় মিলের পাশে গবাদি পশুর ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবু সাঈদ আরো জানান যে, আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে একটি কুচক্রী মহল এ নাটক সাজিয়েছে এবং রাজনৈতিক কারণে হয়রানি করছে।

    অন্যদিকে সাংবাদিক রাজিবের স্ত্রী পারুল বেগম এ প্রতিবেদককে জানান যে, আমারস্বামী রাজিব এলাকায় একজন পরিচিত সাংবাদিক। সে জাতীয় দৈনিক অভয়নগরসহ কয়েকটি পত্রিকার সাথে যুক্ত। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি (বিএমএসএস)’র বাগেরহাট জেলার সহ-সভাপতি, বাগেরহাট রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ঘটনার কালীগঞ্জ বাজারে দু-পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে আমার স্বামী রাজিব পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সেখানে উপস্থিত হয় এবং মুঠোফোনে পুলিশ প্রশাসনকে এলাকার পরিস্থিতি জানায়। এরপর পুলিশ আমার স্বামীকে বিষয়টি জানার জন্য থানায় নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে তাকে মামলায় ১৭ নম্বর আসামি করে কোর্টে চালান দেয়। কি কারণে তাকে মামলায় দেয়া হলো-বিষয়টি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন যে, তাকে মামলায় আসামি করে কোর্টে চালান দেয়ার পর একটি পক্ষ আমাদের বসত বাড়িতে হামলা চালায়, বাড়ির মালামাল লুটপাট করে এবং সেই সাথে ১ লক্ষ ৭ হাজার নগদ টাকাও লুটপাট করে নেয়। আমাদের এখন একটি পক্ষ বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্ট চালাচ্ছে এবং আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

    এ বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা আমারজমিনকে জানান, পুলিশ বসে নেই, পুলিশের কাজ পুলিশ করছে। এ মামলার অন্য আসামিদের আটক করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি অন্য আসামিদের আটক করতে সক্ষম হবো বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

  • হরিপুরে গণপিটুনিতে মোটরসাইকেল চোর নিহত।

    হরিপুরে গণপিটুনিতে মোটরসাইকেল চোর নিহত।

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

    ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে গণপিটুনিতে মোটরসাইকেল চোর নিহত হয়েছে।অভিযোগ উঠেছে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে একটি গাছে ঝুলিয়ে রেখে পেটান বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। এসময় স্থানীয়দের গণপিটুনিতে রুবেল ইসলাম (৩৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

    উপজেলার ২নং আমগাঁও ইউনিয়নের যাদুরানি বাজার এলাকায় বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় এ ঘটনা ঘটে।

    নিহত রুবেল ইসলাম রাণীশংকৈল উপজেলার ৪নং লেহেম্বা ইউনিয়নের গোগর এলাকার পটুয়াপাড়ার খলিলুর রহমানের ছেলে।

    পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হরিপুর উপজেলার যাদুরানি বাজার এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করেন৷ এরপর তাকে বাজারের গরুহাটি মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রশিতে বেঁধে একটি গাছে ঝুলিয়ে মারধর করলে ঘটনাস্থলে মারা যায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়৷ হরিপুর থানা পুলিশ তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মন্ডল জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এবং ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

  • পিলখান হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পর বাড়ী ফিরবে রবিউল  অপেক্ষার প্রহর গুনছে পরিবার।

    পিলখান হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পর বাড়ী ফিরবে রবিউল  অপেক্ষার প্রহর গুনছে পরিবার।

     (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
    পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৬ বছর কারামুক্তি পাবেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রবিউল ইসলাম (৩৪)। গতকাল রোববার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ যে ২৫০ জন বিডিআর সদস্যকে খালাস দিয়েছে, তার মধ্যে একজন রবিউল ইসলাম।
    রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রবিউল ইসলাম উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের নেংটিহারা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। রবিউলের কারামুক্তির খবরে খুশি মা, ভাই পরিবার-আত্মীয়স্বজন এবং গ্রামের লোকজন। আগামী বৃহস্পতিবার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে শুক্রবার সকালে বাড়ীতে ফেরার কথা রয়েছে তার। ১৬ বছর তার ফেরার খবরে পরিবারের সাথে গ্রামের লোকজন তাকে একনজর দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।
    সোমবার বিকালে রবিউলের বাড়ীতে গিয়ে জানা গেছে, এসএসসি পাশ করার পর চাকরি হয় রবিউলের। প্রশিক্ষণ শেষ করে যোগ দেন পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে। ২৬ দিনের মাথায় ঘটে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা। এরপর থেকে কারাগারে রবিউল। প্রথমে একটি মামলায় ৭ বছর সাজাভোগ করেছেন রবিউল। সাজা খেটে বের হওয়ার কিছুদিন পরে আবার বিস্ফোরক আইনের একটি মামরায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে।
    রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী জানান, চাকরি পাওয়ার পর বাবা ও মা খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু এক মাস যেতে না যেতেই সব খুশি ম্লান হয়ে যায়। চাকরি করে উপার্জন করে রবিউল আমাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু তার উল্টো হয়েছে। রবিউল কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা খাওয়া খরচ। কিছুদিন পর পর কাপড়-চোপড় কিনে দেওয়া, আদালতপাড়ায় অনেক খরচ করতে হয়েছে। তার পিছনে খরচ করতে করতে পুরো পরিবার প্রায় নি:স্ব।
    রবিউলের চাচা রেজাউল করিম জানান, ছেলের জন্য নানা দুশ্চিন্তায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন রবিউলের বাবা আব্দুর রহমান। ফিরবে ফিরবে বলে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে গত অক্টোবর মাসে মারা গেছেন। তার মা সালেহা খাতুন এখনও অসুস্থ, বোনের বাড়ীতে ঠাকুরগাঁও শহরে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। আজ যদি রবিউলের বাবা বেঁচে থাকতেন, রবিউলের বাড়ীর ফেরার খবরে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন।
    রবিউলের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রবিউল আর ফিরবে না, এমনটা ধরে নিয়েছিল পুরো পরিবার। গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ফলে রবিউল ফিরছে বাড়ীতে। ছোট সেই ছেলেটা এখন কত বড় হয়েছে, কেমন আছে। সেটা দেখার জন্য কবে ফিরবে, এমন খোঁজ খবর নিতে রবিউলের বাড়ীতে লোকজনের আসা যাওয়ার শুরু হয়েছে।
    রবিউলের দাদী জমেলা বেগম জানান, ‘ছুয়াডা কোন অপরাধে নি করে, তাহু ছুয়াডাক ১৬ বছর জেলত থাকিবা হইল। এতদিন বাড়ীত থাকিলে বেহা করিলেহে, ওয়ার বাপ-মা নাতি-পুতির মুখ দেখিবা পারিলেহে।’
    রবিউল ইসলামকে পুনরায় চাকরিতে পুনবর্হাল, একই সাথে দীর্ঘদিন বিনা অপরাধে কারাগারে থাকা এবং তার পেছনে খরচ করতে গিয়ে আর্থিক ভাবে যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি। তার ক্ষতিপুরণ সরকারের কাছে দাবি করেছেন রবিউলের ভাই শাহাজাহান আলী।
  • কানাইঘাটে পূর্বশক্রতার জেরে হত্যা সুরমা নদীর চরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার।

    কানাইঘাটে পূর্বশক্রতার জেরে হত্যা সুরমা নদীর চরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার।

    কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ

    সিলেটের কানাইঘাটে আবারো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সালিক আহমদ (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে লাশ সুরমা নদীর বালুচরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
    গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় সাতবাঁক ইউনিয়নের লোভারমুখ বাজার থেকে নদী পার হয়ে বাড়ি ফেরার পথে হত্যাকান্ডের স্বীকার হন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষীপুর (মনিপুর) গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান ছেলে সালিক আহমদ। থানায় লাশ নিয়ে আসার সালিকের স্ত্রী ও ৭ ছেলে-মেয়েদের বার বার কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে খুনীদের ফাঁসির দাবী করেছেন।
    নিহতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাতে লোভারমুখ বাজার থেকে কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছিলেন সালিক আহমদ। স্থানীয় চরিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের নৌকা দিয়ে সুরমা নদী পার হয়ে বাড়িতে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা ৮/৯ জন দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সালিক আহমদকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে লাশ নদীর বালুচরে ফেলে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌকার মালিক ফয়জুর রহমান গুরুতর আহত হলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তবে এ নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।
    নিহতের বড় ভাই আব্দুল খালিক সহ স্বজনরা জানান, অনুমান ২ মাস পূর্বে নিহত সালিকের ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে মাঠে গরু চরানো নিয়ে একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে সায়েল আহমদের সাথে মারামারি হলে সায়েলের পরিবারের লোকজন জাহাঙ্গীরকে মারপিট করে। এতে তার পিতা সালিক আহমদ কানাইঘাট থানায় সায়েল আহমদ ও তার পিতা ইসলাম উদ্দিন সহ কয়েকজনকে আসামী করে অভিযোগ দেন।

    এ নিয়ে গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে সালিশ বিচার বসলে সালিশেও ইসলাম উদ্দিন গংরা সালিক আহমদের হামলার চেষ্টা করে। হামলার ঘটনায় আবারো থানায় সালিক আহমদ অভিযোগ দেন। কেন থানায় অভিযোগ দেয়া হলো এ নিয়ে ইসলাম উদ্দিন সহ তার আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের কতিপয় মাতব্বররা সালিক আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সমাজচ্যুত ও গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ সহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন। বিষয়টি সামাজিক ভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য সালিক আহমদ পাশর্^বর্তী সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া গ্রামের মুরব্বীয়ানদের স্মরনাপন্ন হলে তার প্রতিপক্ষ লোকজন আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এ ঘটনার জের ধরে প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তির ইন্ধনে ও মদদে ইসলাম উদ্দিন, তার ভাই আশিক উদ্দিন গংরা সালিক আহমদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বলেন, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত সালিক আহমদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুনেছি পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।

  • দিনাজপুরে জামায়াতের নামে পিতা-পুত্রের ‘তুঘলকি কাণ্ড।

    দিনাজপুরে জামায়াতের নামে পিতা-পুত্রের ‘তুঘলকি কাণ্ড।

    দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ

    দিনাজপুর সদর উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমীর মো. নাসির উদ্দীন। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘমেয়াদে একই দায়িত্বে থাকায় ওয়ার্ড কমিটি গঠনেও নিজের মর্জি ও স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। তারই বড় ছেলে মো. আবু বক্কর সিদ্দিককে করেছেন দলটির যুব বিভাগের ইউনিয়ন সভাপতি।

    ব্যক্তিগত ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ছেলের জন্য তিনি এ পদ বাগিয়েছেন। যদিও গত ৫ আগস্টের আগে জামায়াতের কোনো কার্যক্রমে আবু বক্করের সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে ‘অভিযুক্তরা জামায়াতের কেউ নন’ বলে মন্তব্য করেছে জামায়াতের জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান।

    ইউনিয়ন জামায়াতের একাংশের দাবি, বাবার সুবাদে পাওয়া পদের দাপটে আবু বক্কর এখন ‘সর্বেসর্বা’। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনেই রাতারাতি ‘মাতব্বর’ বনে গেছেন। তৈরি করেছেন তোষামদি গ্রুপ। ইউনিয়নে অবৈধ বালু উত্তোলন, টেন্ডারবাজি, মামলা বাণিজ্যেও রয়েছে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ। এমনকি থানা পর্যায়ের নেতা ও ইউনিয়নের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা বলতেও দ্বিধা করেন না আবু বক্কর।

    গত ৫ আগস্টের আগে তিনি শিবিরের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন থানা ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল পর্যায়ের একাধিক নেতা। বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে তার তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরে দেখা যায়, গত ৬ আগস্টের আগে দল সম্পর্কিত কোনো পোস্ট করেননি তিনি। এরপর ধারাবাহিকভাবে দল-সংশ্লিষ্ট পোস্ট করেছেন।

    জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে সুন্দরবন ইউনিয়ন আমীরের দায়িত্বে রয়েছেন নাসির উদ্দীন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে কমিটির অন্যান্য সদস্যদের পরামর্শ না নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমনকি জাতীয় নির্বাচনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীকে এলাকায় নিয়ে গেলেও জানান না অন্যদের। তার এমন স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ২০২৫ সেশনের জন্য পুনরায় আমীর নির্বাচিত হওয়ায় নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কয়েকজন রুকন (সদস্য)।

    ইউনিয়ন জামায়াতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কমিটির কোনো সদস্যের সাথে পরামর্শ না করেই নিজ ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিককে যুব বিভাগের সভাপতি বানিয়েছেন নাসির উদ্দীন। অথচ গত ৫ আগস্টের আগে জামায়াত কিংবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। বাবার বদৌলতে পাওয়া পদে আসীন হয়েই নেমে পড়েন আধিপত্য বিস্তারে। গড়ে তোলেন একাধিক অনুসারী গ্রুপ। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তার খাস অনুসারী নূর ইসলাম। যিনি জামায়াতের কর্মী দাবি করলেও দলটির ঊর্ধ্বতন নেতারা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নূর ইসলাম জামায়াতের কর্মী নয়’।

    অনুসন্ধানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি, মামলায় নাম দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবিসহ নানা ‘অপকর্মে’ তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এমনকি তার সহযোগী হিসেবেও কয়েকজনের নাম সামনে এসেছে। সম্প্রতি ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের কমিটিতেও আবু বক্করের হস্তক্ষেপে এবং নাসিরের একক সিদ্ধান্তে নূর ইসলামের অনুগতদেরই ঠাঁই হয়েছে।

    এমনকি এক পরিবার থেকেই দুজনকে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও রাখা হয়েছে। কমিটির নতুন সভাপতি মুজাহার আলীর বিরুদ্ধে মসজিদে দানকৃত জমি ভোগ-দখলসহ রয়েছে নানা অভিযোগ। তার বড় ছেলে শামীম হোসেনকে ওই কমিটির সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক পদে আসীন করা হয়েছে। যদিও শামীম যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে বিএনপির একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।

    জামায়াতের বিরোধিতায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নির্বাচন করা জালাল উদ্দীনের ছেলে মোয়াজ্জেম পেয়েছেন দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব। দলটিতে তার সক্রিয়তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এবং বায়তুলমাল সম্পাদক গাজিউর রহমান দলটির ‘কর্মী’ নন বলেও ইউনিয়ন জামায়াতের ঊর্ধ্বতন নেতারা দাবি করেছেন। আবার মাহাবুর রহমান নামে একজন ব্যক্তিকেই দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতি এবং সহ-সেক্রেটারির পদ। নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে নূর ইসলাম ও আবু বক্কর সিদ্দিকের রয়েছে যোগসাজশ।

    স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সুন্দরবন গ্রামের সুদুর ঘাট থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা এড়াতেই নিজেদের মন-মর্জিমত কমিটি দিয়েছেন বাবা-ছেলে। নূর ইসলাম জামায়াতের ব্যানারে এসব অপরাধে জড়িত হওয়ায় একাধিকবার দলটির ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ইউনিয়ন আমীর ‘প্রমাণাদি’ নেই বলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। প্রকাশ্যে যুবলীগের রাজনীতি করা রবিউলকেও তারা প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ।

    অভিযোগকারীরা জানান, এই চক্রটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় একাধিক ব্যক্তি মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন আমীর ও ঊর্ধ্বতন নেতাদের বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও তারা সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো প্রমাণাদির কথা তুলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। প্রমাণ উপস্থাপন করতে চাইলেও তারা নানা টালবাহানায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

    ইতোমধ্যেই থানায় আবু বক্করের সেই তোষামদি গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরও। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদুল ইসলামের ছেলে নূর ইসলাম, সুন্দরবন ইউপির সাবেক সচিব মো. ছাইদুল ইসলামের ছেলে কামরুল হাসান, ওই নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) গোলাপ হোসেনের ছেলে সেলিম হোসেন, আসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম।

    পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, ‘নাসিরের ছেলে সরকারি বরাদ্দের কম্বল বিতরণ, মাতৃকালীন ভাতা, টিসিবি পণ্যের কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনুসারীদেরকেই প্রাধান্য দিয়েছে। এ নিয়ে একজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে উচ্চবাচ্যও করেছেন আবু বক্কর। ইউনিয়ন পরিষদে টেবিল থাপড়িয়ে বিভিন্ন ভাতার কার্ড ছিনিয়েও নিয়েছে। অথচ সে কোনেদিন জামায়াতের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিল না। তার বাবাকে অভিযোগ দিলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি।’

    বালু তোলার ছবি ধারণ করায় মারধরের শিকার হন স্থানীয় যুবক মো. রুবেল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নূর ইসলাম, কামরুল অবৈধভাবে বালু তুলছিল। ওরা বলছে, বালু তুলে মসজিদ আর মাদ্রাসায় টাকা দিচ্ছি। কিন্তু তারা টাকা দেয় না, উল্টো খায়। আমি ওদের বালু তোলার ছবি তুলেছিলাম। এই কারণে নতুন ভূষিরবন্দর বাজারে আমাকে উলঙ্গ করে মারধর করে তারা। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

    ধনিগ্রাম সুন্দরবন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তারা আমার সমিতিতে গিয়ে ঠিকাদারকে তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। কিন্তু ঠিকাদারকে না পাওয়ায় সমিতির চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে দেয়। ভূষিরবন্দর বাজারে এ ব্যাপারে তাদের সাথে বাকবিতন্ডাও হয়। কাজ বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। মূলত তাদের উদ্দেশ্যই ছিল চাঁদা নেওয়া।’

    স্থানীয় সচেতন মহলের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালুর ট্রলি আটকে দেন মহসীন আলী। কিন্তু তাকে মোবাইল ফোনে নানান হুমকি-ধমকি দেন আবু বক্কর। পরে এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের শরণাপন্ন হলেও তার অভিযোগ নেননি থানা আমীর। উল্টো তার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চান বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    মহসীন আলী বলেন, ‘জামায়াতের ইউনিয়ন আমীরের ছত্রছায়ায় তার ছেলের মদদে অবৈধভাবে বালু তুলছেন স্থানীয় এই ছেলেগুলো। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি দেন। জামায়াতের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে তারা অভিযোগ না নিয়ে আমার রাজনৈতিক পরিচয় জিজ্ঞেস করে। এলাকার সবাই জানে আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। সরকারি সম্পদ তারা অবৈধভাবে লুট করায় প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছি। তারা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমি রাজনৈতিক দলটির কোনো সহযোগিতা পাইনি। আসলে তারা এই চক্রটিকে শেল্টার দিচ্ছে কি না, আমার জানা নেই।’

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন ও থানা জামায়াতের একাধিক রুকন (সদস্য) জানান, নাসির উদ্দীন তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছেলেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে। এ ব্যাপারে কারও সাথে কোনো পরামর্শ করার প্রয়োজন বোধ করেননি। ক্ষমতা পেয়ে তার ছেলে আবু বক্কর বেপরোয়া হয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের নিয়েও অযাচিত কথাবার্তা বলে বেরায়। আবু বক্কর সিদ্দিক আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ‘নির্বাচন করবেন’ বলেও গুঞ্জন রয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে। ক্ষুব্ধ জামায়াত নেতাকর্মীসহ স্থানীয়রা বাবা-ছেলের বহিষ্কারসহ তাদের সমর্থিত ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

    অভিযোগ অস্বীকার করে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বালু উত্তোলনে জড়িত বা ৫ আগস্টের আগে দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না- এগুলো সত্য নয়।’

    সুন্দরবন ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর নাসির উদ্দীন বলেন, ‘ও (আবু বক্কর) ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী ছিল। আমার নির্দেশনায় নয়, থানা জামায়াতের পরামর্শে কাজ করা হয়েছে।’ তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনোটাই অস্বীকার করেননি তিনি।

    কামরুল হাসান বলেন, ‘এসব অভিযোগ ভুয়া’। অবৈধভাব বালু তোলার ছবি ধারণ করায় মারধর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি অসত্য। গ্রামের চক্রান্ত।’ তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে নূর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

    অবৈধভাবে বালু তোলার সাথে গ্রাম পুলিশের সম্পৃক্ততা আছে নিশ্চিত করে সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, “ইউনিয়নে বালু উত্তোলনের কোনো টেন্ডার হয়নি। আমি প্রতিদিন যাচ্ছি। যখন যাচ্ছি তখন বন্ধ আর চলে আসলে আবার তুলে। কয়েকদিন ধরে দিনের পরিবর্তে রাতেও বালু তুলতেছে। এরা স্থানীয় জামায়াতের। আমি চৌকিদারকে বলেছি কিন্তু গোলাপ চৌকিদার বলছে যে, ‘না, না স্যার বালু তোলা হচ্ছে না’। গোলাপ চৌকিদার বালু তোলার সাথে জড়িত, আমি প্রমাণ পেয়েছি। কিন্তু ওকে ধরলে অস্বীকার করে। ট্রলিগুলো ধরতে হবে, মামলা বা জরিমানা না করলে এগুলো বন্ধ হবে না।”

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, ‘আমরা কয়েক দফা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি। এর আগে থানায় অভিযোগগুলো পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্ত করছে। সরেজমিনে দেখে তারা মামলা করতে পারবে।’ তবে এ বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (দিনাজপুর সদর) শাখা-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু হোরায়রা বাদল জানান, এটি তার দায়িত্বরত এরিয়ার আওতাভুক্ত নয়। ইউএনও অফিস থেকে চিঠি এসে থাকতে পারে।

    সুন্দরবন ইউনিয়ন আমীর ও তার ছেলে আবু বক্করের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা তাদের চিনি না। আমাদের কোনো লোকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আসলে কোনো খাতির নেই, তাকে বহিষ্কার করে দিব। তবে আমরা যেটা শুনেছি সেটা আমাদের লোক নয়।

  • ফেসবুকে চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ায় শিক্ষার্থীর উপর হামলা।

    ফেসবুকে চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ায় শিক্ষার্থীর উপর হামলা।

    ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলায় ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের হামলার শিকার হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ডিমলা থানায় মামলা হয়েছে।

    ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম রেজাউল করিম । তিনি উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তঘেষা ঘাটের পাড় গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে ও নীলফামারী সরকারি কলেজের এমবিএ শিক্ষার্থী এবং জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক।
    মামলায় চিহ্নিত মাদক ও অবৈধ গরু ব্যবসায়ী পশ্চিম ছাতনাই এলাকার বাসিন্দা পিয়ারুল ইসলাম, নুর আলম, নুর ইসলামসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনের নামে আসামি করা হয়েছে।
    ভুক্তভোগী রেজাউল করিম বলেন, নীলফামারীতে আমরা শিক্ষার্থীরা মিলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচার পতনের পর এলাকায় এসেছি। নিজের এলাকায় ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারিদের ব্যাপক বিস্তার দেখে বালাপাড়া বিজিবি কমান্ডারকে বিষয়টি জানাই। কোন সুরাহা না পেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি ফেসবুকে লিখি-আজ সকাল ৬ টার দিকে পশ্চিম ছাতনাই এলাকায় ভারত থেকে অবৈধ গরু ও মাদক  আনার সময় চোরাকারবারীদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে ভারতীয় বিএসএফ। এরপর বিজিবি- বিএসএফ পতাকা বৈঠক হয়। পতাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সীমান্তে যেন স্থানীয় বাসিন্দারা কেউ না যায়। আমার প্রশ্ন হলো- চোরাকারবারিদের জন্য সাধারণ মানুষ ভুগবে কেন ? এসব চোরাকারবারি কারা ? কারা এদের নেতৃত্ব দেয়? কেন সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরেও চোরাচালান সিন্ডিকেট এখনো বহাল তবিয়তে আছে। প্রশাসন কি করে? জাতি জানতে চায়? যারা সীমান্ত এলাকায় বসবাস করে তাদের চাষাবাদ থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কারণে বর্ডারের কাছাকাছি যেতে হয়। চোরাকারবারিদের কারণে ভারতের বিএসএফ যদি একটা সাধারণ মানুষের উপরেও হামলা করে। এর দায় পুরোপুরি প্রশাসনকে নিতে হবে।
    এরপর সন্ধ্যায় আমার ওপর হামলা চালায় মাদক ব্যবসায়ী ও গরু চোরাকারবারি পিয়ারুল-নুর আলমসহ তাদের সঙ্গীরা। মারধর করার পাশাপাশি আমাকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মৃত্যুর হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি ডিমলা বৈষম্যে বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের  প্রতিনিধিদের জানালে তারাও ঘটনাস্থলে এসে হামলার শিকার হয়েছেন।
    ডিমলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান ও শাকিল প্রধান বলেন, ওই দিনসন্ধ্যায় খবর পেয়ে আমরা ঠাকুরগঞ্জ বাজারে যাই। সেখানে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী পিয়ারুল- নুর আলমসহ ২৫-৩০ জন আমাদের পথরোধ করে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে ‘হয় সীমান্তে তোরা থাকবি না হয় আমরা ব্যাবসা করবো’। এ সময় মোবাইল ফোন বের করে ভিডিও করার চেষ্টা করলে কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। আরেকজনের স্মার্টফোন পকেটে ছিল, সেটিও লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। আমাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন চলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডিমলা থানায় মামলা করা হয়েছে।
    রেজাউলের বাবা আব্দুল মান্নান বলেন, আমার ছেলে কলেজে পড়ে। সে দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে সংগ্রাম করেছে। অথচ নিজের এলাকায় সীমান্ত দিয়ে  মাদক ও চোরাচালান নিয়ে কথা বলায় হামলার শিকার হয়েছে। এটা দুঃখজনক। হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক ও গরু চোরাকারবার করে। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
    স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, ভারতের সীমান্তবর্তী ডিমলা উপজেলা। ভারতের সঙ্গে ডিমলার সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটার। পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় গরু ও মাদকদ্রব্য পাচার হচ্ছে। বিজিবি এসব দেখেও না দেখার ভান করে। তাদেরকে বারবার জানিয়েও কোন লাভ হয়না।
    শিক্ষার্থী রেজাউল ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের ওপর হামলার ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা জানান অনেকে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
    এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার সাইফুর জামান বলেন, তথ্য প্রমান ছাড়া কাউকে আটক করা সম্ভব নয়। চোরাচালান বন্ধ করতে বিজিবি সবসময় তৎপর রয়েছে।
    এ বিষয়ে ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলে এলাহি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা এজাহারভুক্ত করা হয়েছে । ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলানো হয়েছে।