আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ বুধবার সকাল ১১ টার দিকে সিরাজগঞ্জে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে জেলা যুবদলের সমাবেশ পুলিশের বাঁধের মুখে পন্ড হয়ে যায়। এতে পুলিশ, আওয়ামীলীগ ও যুবদলের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা, ইটপাটকেল, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলের আঘাতে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল বদরুজ্জোহা, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, দপ্তর সম্পাদক আবু মুছা, সদস্য মিলন, পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ও পৌর যুবদল নেতা আব্দুল মতিন সহ ১৫ জনআহত হয়।এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আব্দুল মতিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ভোরে ইবি রোডস্থ দলীয় অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলণ করা হয়। সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জবাব বাবু,সিনিয়র সহ সভাপতি আলামিন খানসাধারণ সম্পাদক মোঃ মোরাদুজ্জামান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণক ময়নুল ইসলামের নেতৃত্বে যুবদলের বিভিন্ন ইউনিট ও স্তরের বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মীরা মিছিল করে শ্লোগান নিয়ে দলীয় অফিসের সামনে সমবেত হয়।
দলীয় অফিসের সামনে এবং আশেপাশে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়ন করা হয়ে ছিলো। পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেই মিছিল করে এসে যুবদলের নেতৃবৃন্দ দলীয় অফিসের সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে। পরে সেখানে ব্যানার নিয়ে প্রধান অতিথি যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠিক সম্পাদক মাছুমুল হকের উপস্হিতে জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবুর সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু করার সাথে সাথে পুলিশ বাঁধা দেয়।
এ সময় যুবদলের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে পুলিশ ধাওয়া করে,এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা এসে পুলিশে সামনেই যুবদলের কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কার্যত বিএনপি অফিসের সামনের সড়কটি ঘন্টাব্যাপী ত্রি-মূখী রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার কথা ছিল যুবদলের। কিন্তু সসমাবেশে লোক জড়ো হলে সেটি আর শান্তিপূর্ণ থাকে না। এ বিষয়টি বলতে গেলে যুবদল নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয় এবং পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরসহ দু’ জন আহত হন।
পরে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান ওসি। জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু বলেন, যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিল। এ সমাবেশে পুলিশ নগ্নভাবে হামলা করে। আমাদের নেতাকর্মীর উপর গুলি চালানো হয়েছে। অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবী করেন তিনি। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ মতিনকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।