ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকে ৩ জন মেম্বার প্রার্থীর ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় মাথায় হাত। দুইজন মেম্বার প্রার্থী জীবিত থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় তাদেরকে মৃত দেখানো হয়েছে। একজন প্রার্থীর ভোট নিজ ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করার অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। এহেন কার্যকলাপে প্রার্থীরাও পড়েছেন বিপাকে।
সংশোধনের জন্য তারা উপজেলা নির্বাচন এবং ইউএনও অফিসে দৌড়-ঝাপ করে যাচ্ছেন। এতে কোন সুরাহা পাচ্ছেন না বলে তাদের অভিযোগ। ফলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়াটা তাদের পক্ষে অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ কারণে প্রার্থী হতে আগ্রহীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। এমন ঘটনা এলাকার সচেতন মহলকে রীতিমতো ভাবিয়ে তুলছে। এনআইডি কার্ড যাচাই করে জীবিত মানুষদ্বয়কে ‘মৃত বিষয়টি প্রার্থীরা যেমন সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন তেমনি নির্বাচন অফিসের দায়িত্বশীলদের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
এসব বিষয়ে রোববার (১০অক্টোবর) ছাতক উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবরে পৃথক তিনটি অভিযোগ করেছেন আলী আহমদ, কমর আলী ও ছিদ্দেকুর রহমান নামের তিনজন ভুক্তভোগী।
উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আসক আলীর পুত্র মোঃআলী আহমদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী হিসেবে ৮নং ওয়ার্ডে তিনি নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষন করেছিলেন। এ বছরও তার আগ্রহ ছিল নির্বাচনে অংশ নেয়ার।
গত ১ জুলাই গোবিন্দগঞ্জ পূবালী ব্যাংক শাখায় একাউন্ট করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানান তার (৯০১২৩৮৫৫৭৬১৭৪) জাতীয় পরিচয়পত্রটি অনলাইনে দেখাচ্ছেনা। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানতে পারেন জাতীয় পরিচয়পত্রে তাকে মৃত দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ব্রাক্ষণগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল আউয়ালের পুত্র মোঃ কমর আলীথর জাতীয় পরিচয় পত্রে তাকে মৃত দেখিয়ে পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। সম্প্রতি করোনার ভ্যাকসিনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (৯০১২৩৮৫৫৭৬৩০৯) নিয়ে নিবন্ধন করতে গেলে তা হয়নি। পরে ওই কার্ড নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাওয়ার পর জানতে পারেন তাকে মৃত দেখিয়ে পরিচয়পত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চাকল পাড়া গ্রামের মো: আবদুল আমিনের পুত্র মো: ছিদ্দেকুর রহমানকে ৯নং ওয়ার্ডে ভোট স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে একটি অভিযোগে উল্লেখ করেন, এ ওয়ার্ডে মেম্বার পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি কাজ করছেন। কিন্তু গত ৯ অক্টোবর একটি ফরম পূরণ করতে গেলে জানতে পারেন তিনি ৭নং ওয়ার্ডের ভোটারনা। একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বেরাজপুরে তার ভোট স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
তাকে নির্বাচনে প্রার্থী থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে এমন কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো তো পাপ কাজ। তিনি এমন কাজের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তদন্তের মাধ্যমে অন্যায়কারীদের চিহিৃত করে দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃফয়েজুর রহমান জানান,এগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিকে সোমবার ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত দেখানো আলী আহমদ ও কমর আলী ছাতক থানায় দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছেন।