ফজল উদ্দিন,ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
আকাশে মেঘ দেখলেই পল্লী বিদ্যুৎ চলে যায়। কখন বিদ্যুৎ আসবে কেউ সঠিক করে বলতে পারছেন না। পল্লী বিদ্যুৎ যন্ত্রনায় জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সুনামগঞ্জপল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে ছাতক উপজেলা গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুতের লাইন বন্ধ থাকে।
বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি না থাকলেও অদক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাইন সম্পর্কে কোনো ধারনা না থাকায় লাইন সংস্কার করতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে অনেক গ্রাহকেরই অভিযোগ। প্রতিদিন বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনায় উপজেলায় হাজার হাজার গ্রাহক ভোগ করছে বিদ্যুতের এ ভেলকিবাজি।
উপজেলায় বিদ্যুতের লাইন সচল রাখার জন্য মাত্র ৩ জন লাইনম্যান দিয়ে গ্রাহক সেবাসহ সংস্কার কার্য পরিচালনা করছে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
উপজেলার ব্যবসায়ি শাকিল আহমদ,সদরুল আমিন সোহান, শিক্ষক নাসির উদ্দিন, পংকজদত্ত জানান, বৈরী আবহাওয়ার নাম করে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লাইন বন্ধ থাকে। ফোন করলে বলে পাওয়ার গ্রিডের অবস্থা খারাপ ২/৩ ঘণ্টা পর ছাড়া সার্ভিস চালু করা সম্ভব নয়।
অভিযোগ রয়েছে, আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেয়। আবার সামান্য বৃষ্টি হলে সারাদিনেও বিদ্যুতের দেখা মিলে না।
গত ২ সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুতের এই ভেলকিবাজিতে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে ঘেরাও মানববন্ধনসহ আন্দোলন করার হুমকি দিলে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জন জীবন। আকাশে মেঘ জমলেই কিংবা সামান্য বাতাস শুরু হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তীব্র গরমের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। তবে পল্লীবিদুতের স্থানীয় জোনাল অফিসের এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার কথাটি কতৃপক্ষ কিছুই জানেন না.তবে কারা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে এনিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে গ্রাহকদের মাঝে ।
সংস্কার কাজের নামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত বন্ধ অধশতাধিক গ্রামে হাজার হাজার গ্রাহকরা হচ্ছেন চরম হয়রানি শিকার । তারা নানা টালবাহানা দেখিয়ে ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে পল্লীবিদ্যুৎ ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিস।
এ অফিসে সব চেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রচন্ড গরমের যন্ত্রণায় প্রতিটি বাড়িতে শোনা যায় শিশুদের আত্বচিৎকার। স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম বিপাকে। নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে এ ভোগান্তি। ঘন ঘন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার, ফ্রিজ, পানির মোটর, ফটোকপি মেশিনসহ বিদুৎ চালিত যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার পথে।
এছাড়াও বাড়তি ভোগান্তি হিসেবে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত ভুতুরে বিল। একজনের বিল আরেকজনের নামে তৈরি করা দেয়া হচ্ছে। জনগনের এমন ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই। ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
লোডশেডিং এর যন্ত্রনায় ফুঁসে উঠছে সাধারণ জনগন, এসব ঘটনার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার সকালে নিযাতিত গ্রাহকরা গোবিন্দগঞ্জ জোনাল পল্লী বিদ্যুতের অফিস ঘেরাও এদফা এক দাবি বলে শ্লোগান দেয়।
এসময় নিযাতিত গ্রাহক পল্লী বিদ্যুতের অফিসে দায়িত্বশীল ডিজিএম ছুটিতে থাকায় তার পক্ষে এজিএম আমজাদ আলী ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান।
আগামী ৩দিনের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান ও বিদ্যুৎ বিলে কোন গড়মিল পাওয়া গেলে তাদেরকে প্রমাণসহ অভিযোগ করলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনা আশ্বাস দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে প্রতিবাদ করছেন সাধারণ গ্রাহকরা। দিন-রাত মিলে অন্তত ১৫-২০ বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। কখনো কখনো বিদ্যুৎ চলে গেলে কয়েক ঘণ্টা পর আসে।
সভার সিদ্ধান্ত ছিল গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুতের কোনো বিপর্যয় ঘটবে না। অথচ তারপরও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক গ্রাহকরা।
তারা অভিযোগ করেন, একে তো করোনায় ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির আবার তার উপর বিদ্যুতের এই অব্যবস্থাপনা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করছে। সব মিলিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এ অব্যবস্থাপনা অযোগ্য অদক্ষ লাইন ম্যান টেকনিশিয়ানের কারণে গোবিন্দগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর মাশুল গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসে এজি এম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আমজাদ হোসেন জানান, সাব-স্টেশনের যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে এবং আবহাওয়া খারাপে গাছপালার ডাল পড়ে লাইনের সমস্যা দেখা দেয়।এ সমস্যা সমাধান করতে সময় লাগছে। রাত থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্টানে।বিদ্যুৎ লাইনে টেকনিশিয়ান দ্বারা সামাল দেয়া অসম্ভব। দিনে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দিয়েও লাইন ঠিক করা সম্ভব হয় না।