সারা দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনার রোগের পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্লেটলেট হ্রাস ডেঙ্গু রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে মাথাব্যাথা অন্যতম কারন। তার মধ্যে গুরুতর হলো মাথাব্যথা,পেশী এবং চোখের ব্যথা, শরীরে লালভাব দেখা দেয়া।
ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস কি ভাবে ছড়ায়ঃ
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার মাধ্যমে মানুষের দেহে ছড়ায়। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য,মানব দেহকে প্রথমে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।প্রতিদিনের স্বাভাবিক খাবারের সাথে শারিরীক ঘাটতি মেটাতে প্রয়োজনীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্রয়োজনীয় খাবারঃ
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার হলো প্রোটিন ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। মাছ, মুরগি, চর্বিহীন লাল মাংস (গরুর মাংস, ছাগল), ডিম, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে প্রোটিন বেশি থাকে। এই খাবারগুলো রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের জুড়ি নেই। পালং শাক, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মিষ্টি কুমড়া, ডালিম, মটর, মসুর, মসুর, কচুশাক ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা রোগীকে শারীরিক দুর্বলতা দূর করতেও সাহায্য করে।
ডেঙ্গুর জীবাণু ধ্বংসে ভিটামিন “কে” দরকারঃ
উপরন্তু, রক্তপাতের ঝুঁকি কমাতে, ডেঙ্গু রোগীদের ভিটামিন কে আছে এমন ধরনের খাবার প্রচুর পরিমাণ গ্রহণ করা উচিত, যেমন সবুজ শাকসবজি, বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি এই খাবারগুলি প্রয়োজনীয় খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তাই রোগীকে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে এই খাবারগুলো খেতে হয়।
ভিটামিন “সি” ও বি-১২ জাতীয় খাদ্যঃ
ডিম, দুধ, মাখন, পনির, কম চর্বিযুক্ত দই ভিটামিন বি -১২ এর কিছু উৎস। ভিটামিন “সি” একটি কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,যা কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক রাখতেও ভিটামিন সি কার্যকর। কমলা, মাল্ট, আপেল, পেয়ারা, আম, পেঁপে, আম, আনারস, আঙ্গুর, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। ডেঙ্গু রোগীদের প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে এই ফল খাওয়া উচিত।
পানিশুন্যতাঃ
ডেঙ্গু রোগীরা পানিশূন্যতা অনুভব করতে পারে।সেক্ষেত্রে রোগীকে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হয়। এছাড়া নারকেলের পানি এবং বিভিন্ন ফলের রস শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে উপকারী। এ ছাড়া নরম সেদ্ধ পোরিজ ভাত, খিচুড়ি, বিভিন্ন ধরনের স্যুপ খেতে হবে। ডেঙ্গু রোগীকে প্রয়োজন অনুযায়ী ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরসি) দেওয়া যেতে পারে।
ডেঙ্গু রোগীর খাদ্য পরিহারঃ
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের নির্দিষ্ট কিছু খাবার পরিহার করতে হবে। যেমন তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাটি খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, আচার, চিনিযুক্ত খাবার, কাঁচা সবজি ইত্যাদি।
এছাড়াও, উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, চা-কফি, কোকো, অন্যান্য ক্যাফিনযুক্ত পানীয় ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।