বগুড়া শেরপুরে বেলগাড়ী গ্রামের পারুল বেগমের স্বত্বদখলীয় সম্পত্তির উপরে হামলা করে বেদরক মারপিট করেছে নামিক আসামিগণ। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে শেরপুর থানায় মামলা করেন।
বাদীনি মামলায় উল্লেখ করেন সে একজন সহজ সরল, গ্রাম্য সাধারণ মহিলা অপর পক্ষে আসামীগণ একদলবদ্ধ, অন্যায়কারী, পরধন লোভী আইন অমান্যকারী ব্যক্তি। আসামীগণ এলাকায় বিভিন্ন ধরণের অপকর্মের জড়িত। তাহাদের দলীয় লোকজন লইয়া বিভিন্ন ধরণের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। বাদীনির পিতার তপশীল বর্ণিত সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া দখলভোগ করিয়া আসাকালে মৃত্যুবরণ করিলে বাদীনি ও তাহার পিতা ও মাতা উক্ত সম্পত্তিতে স্বত্ববান হইয়া দখলভোগ করিয়া আসিতেছে।
বাদীনি ও ২/৩ নং সাক্ষীগণ নালিশী সম্পত্তিতে বর্তমান মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বৃক্ষাদি রোপন করিয়া তথায় দেখাশোনা করিতে থাকে। বাদীনির স্বামীর চান্দাইকোনা বাজারে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রহিয়াছে। তাহাতে ব্যবসা করিয়া স্বচ্ছলভাবে জীবন যাপন করে। বাদীনি প্রায় সময় তার পিতার বাড়ীতে অবস্থান করে। বাদীনির ২নং সাক্ষীও ব্যবসার কারণে অন্যত্র অবস্থান করিতে হয়। বাদীনির পরিবারের উক্তরূপ স্বচ্ছলতা দেখিয়া আসামীগণ প্রায়ই সময় বাদীনির ক্ষতি করতে চেষ্টা করিতে থাকে এবং তাহাদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বেদখলের চেষ্টা করিতে থাকে।
এমতাবস্থায় বাদীনি ও ২/৩ নং সাক্ষী ১/২নং আসামী পিতার বিরুদ্ধে শেরপুর সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা করে। উক্ত মোকদ্দমা দায়েরের পর হইতে আসামীগণ অতিশয় ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে এবং বাদীনিদের সমূহ ক্ষতি করার চেষ্টা করিতে থাকে। এরই একপর্যায়ে গত-১৯/০৮/২০২১ ইং তারিখে আসামীগণ কতিপয় সন্ত্রাসী ব্যক্তিকে লইয়া বাদীনির স্বামী ও ভাইয়ের অনুপস্থিতির সুযোগে নালিশী সম্পত্তিতে অবৈধভাবে, বেআইনীভাবে প্রবেশ করিয়া তাহাদের হাতে থাকা দা, কোদাল, কুড়াল ইত্যাদি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বাদীনির ও তার ভাইয়ের লাগানো চারা গাছ কাটিতে থাকে।
একপর্যায়ে প্রায় ৭০/৭৫ টি ইউক্যালিপটাস, ১০/১২ আমগাছ ৬/৭টি কাঁঠাল গাছ,১৫/২০ টি কলাগাছ কাটিতে থাকে।
উক্ত গাছ বৃক্ষাদি দেখাশোনা করার জন্য একটি পার্শবর্তী টিন চালাঘর তৈরি করে এবং তাহারা ভাঙ্গিয়া থাকে, যাহাতে প্রায় ৩ বান্ডিল টিন খুলিয়ে লইতে থাকে।
এমতাবস্থায় বাদীনি খবর পাইয়া দ্রুত ঘটনাস্থলে আসিয়া আসামীদের এহেন অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করিলে ১নং আসামী ক্ষিপ্ত হইয়া বলে যে শালাকে শেষ করে দে। এদের খুব বাড়াবাড়ি হইয়াছে। এমত বলামাত্র ২নং আসামী মোঃ শামীম তাহার হাতে থাকে কাঠের বাটাম দ্বারা বাদীনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করিতেই বাদীনি মাথা সরাইলে উক্ত আঘাত বাদীনির হাতের ডানায় লাগিয়া গুরুতর জখম হয়।
৩নং আসামী তখন ছুটিয়া আসিয়া বাদীনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাহার ২ হাত দ্বারা বাদীনির গলা চাপিয়া ধরে ইহাতে বাদীনির প্রায় নিঃশ্বাস বন্ধ হইয়া যায় এবং বাদীনি ছটফট করিতে থাকে ২নং আসামী বাদীনির কাপড় চোপড় টানা হেঁচড়া করিয়া শ্লীলতাহানী ঘটায়।
একপর্যায়ে ১নং আসামী বাদীনির গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের স্বণের চেইন জোরপূর্বক ছিনিয়া চুরি করে। ২নং আসামী হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীনিকে কাঠের বাটাম দ্বারা মাথা লক্ষ করিয়া আঘাত করলে উক্ত আঘাত বাদীনির বাম পায়ে লাগিয়ে গুরুতর জখম হয়। তখন বাদীনি চিৎকার দিতে থাকলে আশেপাশের লোকজন সহ সাক্ষীগণ আসিতে থাকে। আসামীগণ দ্রুত সকল চারাগাছ, টিন ভ্যানে উঠাইয়া লয় যাহার আনুমানিক মূল্য- ৩৫,০০০/- টাকা এবং স্বর্ণের চেইন যাহার মূল্য ৫০,০০০/- টাকা প্রায় লক্ষাধিক টাার ক্ষয়ক্ষতি করে। পরবর্তীতে ২নং সাক্ষী দ্রুত ঘটনাস্থলে বাদীনিকে আঘাতপ্রাপ্ত দেখিতে পাই ভ্যান যোগে দ্রুত শেরপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করায় ২১ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকে।
এমতাবস্থায় আসামীগণ আরও বলিয়া বেড়াইতেছে যে, আজ বেঁচে গেলি পরবর্তীতে বাদীনিকে ও তার পরিবারের সদস্যদের যেকোন ধরণের ক্ষতি করিবে মর্মে প্রদর্শন করিতেছে। আসামীদের আচরণে বাদীনি ও তার পরিবার লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগিতেছি।
বিষয়টি লইয়া বাদীনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাইয়া থানায় অভিযোগ করিতে গেলে আসামীগণ প্রভাবশালী হওয়ায় থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহণ না করিয়া আদালতের আশ্রয় গ্রহল করিতে বলে।
বাদীনির স্বামী এবং ভাই এখনও আসামীদের ভয়ে ঠিকভাবে বাড়িতে থাকিতে পারিতেছে না।