আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা ষাঁড় গরু বিক্রি নিয়ে আশঙ্কায় করছেন খামারীরা। পক্ষান্তরে কোরবানির জন্য গরু ক্রয় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে ক্রেতাসাধারণ। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে সমস্যা ততো ঘনীভূত হচ্ছে। সব মিলে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে দদোল্যমান অবস্থা।চলমান কঠোর লকডাউনের সময় বেড়ে যাওয়ায় এই আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তার তিব্রতা আরোও বেড়ে গেছে।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ছোট বড় খামারী ও পারিবারিক ভাবে কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে প্রায় ৩২ হাজার ষাঁড় গরু বিক্রির জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। চলমান লকডাউনের মধ্যে প্রস্তুত করা গরুগুলো সঠিক সময়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারবে কি না এনিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন গরু মালিকেরা।
একাধিক খামারী ও পরিবার গণমাধ্যমকে জানান প্রতি বছর ঈদের ২০-২৫ দিন পূর্বে ঢাকার গরু ব্যবসায়ীগণ খামারে বা পারিবারিক ভাবে পালন করা গরু দামাদামি করে প্রায় অর্ধেক পরিমান কিনে নিয়ে যায়। লকডাউনের কারনে সেই কেনাবেচাটা এ বছরে বন্ধ রয়েছে। ঈদের আর ক’দিন বাকী রয়েছে। ঢাকার কোন ব্যবসায়ী গরু কেনার জন্য অদ্যবদি পর্যন্ত কোন খামার বা পরিবারে আসেন নাই।
কাজিপাড়া গ্রামের নূরে আলম জানান তার প্রায় ৩ মণ ওজনের একটি ষাড় গরু কোরবান ঈদ উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করতে সব মিলিয়ে প্রায় ৫৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।গরুটি ৬০-৬৫ হাজার বিক্রির আশা করছেন।কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ কেনার মত করে দাম করছে না।লকডাউন থাকায় গরু হাটে নিয়ে দাম যাচাই করার মতো সুযোগ নাই। গরুর দাম ও বিক্রি নিয়ে সে আশঙ্কায় রয়েছে বলে জানান।
ফেন্সি ডেইরি এ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমুল আলম হৃদয় জানান আমার খামারে সিন্ধি, বার্মা, শাহীয়াল ও দেশী জাতের ৪২ টি ষাঁড় গরু কোরবানি ঈদ উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর বৃদ্ধির পরিমার বেশি হয়েছে,কোন সমস্যা নাহলে ৫০ থেক ৬০ লাখ টাকা মতো বিক্রির আশা করছি। গরুগুলোর ছবি ও ভিডিওতে ওজনসহ অনলাইনে বিক্রির জন্য চাহিদা দিয়েছি। অনলাইনে এপর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি না। তবে ছোট বড় মিলে ৮ টি গরু অনলাইনে বিক্রি করতে পেরেছি।
লকডাউনের জন্য ঢাকার ব্যবসায়ীরা গরু কেনার জন্য খামারে আসতে পারছে না পক্ষান্তরে স্থানীয় পশুর হাট বন্ধ থাকলে আমার খামারে লোকশান গুনতে হবে।এগুলোর পাশাপাশি দুগ্ধখামার জন্য ক্রস, শাহীয়াল,বার্মা,সিন্ধি জাতের ৩০ টি গাভীন গরু রয়েছে। এছাড়াও বাঘাবাড়ী, শাহজাদপু, মোহনপুর ও ভাঙ্গুড়ায় দুগ্ধ সংগ্রহের জন্য চিলি সেন্টার করেছি । বাহির থেকে দুধ আমদানি করে কোম্পানির চাহিদা পূরন করতে হয়। বাহিরের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে দুগ্ধখামারের চিন্তা করি। আশানুরুপ ফলাফল পাবো সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করছি।এতে করে কোম্পানিরও ভালো টার্নওভার পাবো বলে আশা করছি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ মোর্শেদ উদ্দীন আহম্মদ জানান উপজেলায় ছোট বড় ৫ হাজার খামারী ২৬ হাজার ষড় গরু কোরবানির ঈদ উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে। পারিবারিক ভাবে আরোও ৬ হাজার গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। দেশের মহামারি করোনা ভাইরাস প্রদুর্ভাবে পশুর হাট না থাকায় আমাদের সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সার্বিক জেলার জন্য অনলাইনে গরু বিক্রির www.poshorhut.gov.bd একটি ওয়েবসাইট খুলেছেন।কোন খামারী ইচ্ছা করলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করে এই ওয়েবসাইটে গরু বিক্রির জন্য নাম,ঠিকানা ও কন্ট্রাক নাম্বারসহ গরুর ছবি ও ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। তাছাড়া উপজেলার খামারীদের সার্বিক সুবিধার জন্য ulo ullapara নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে গরু কেনাবেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে।খামারীরা ইচ্ছা করলে আমাদের সাথে কথা বলে এখানেও গরু বিক্রির জন্য ছবি ও ভিডিও আপলোড করতে পারেন।