ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসথ ও পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লক্ষ্মীপুরের উপকূল সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার এবং আজ বুধবার বিকেলে জোয়ারের পানি জেলার সদর, কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার মেঘনা নদী সংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর ভাটা পড়লে পুনরায় পানি নেমে যায়।
জোয়ারের পানির আঘাতে উপকূলীয় এলাকার কাঁচা এবং পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া নদীতে অতিরিক্ত ঢেউয়ের কারণে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ জানান, নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় এক মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তীর সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে।
জানা গেছে, পূর্ণিমা এবং ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসথ এর প্রভাবে মেঘনা নদী সংলগ্ন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন, কমলনগরের মতিরহাট, চরমার্টিন, সাহেবেরহাট, পাটারীরহাট, নাসিরগঞ্জ, নবীগঞ্জ, লুধুয়া এবং রামগতি উপজেলার বড়খেরী, রামদয়াল, বিবিরহাট, তেলিরচর, বয়ারচর, চরগাজীর নীচু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০ কি. মি. এর বেশি এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় পুরোপুরি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে এসব এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, খুব সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে এসব এলাকার ফসল বিনষ্ট করে ফেলে একই সাথে মাছের খামার তলিয়ে যায়। এতে চরম ক্ষতির মূখে পড়ে বাসিন্দারা। দীর্ঘ সময় ধরে রামগতি ও কমলনগরের বাসিন্দারা নদী ভাঙণ রোধে এবং জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন।
কমলনগরের চরকালকিনি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েফ উল্যাহ বলেন, জোয়ারের পানির তোড়ে মতিরহাট- নাসিরগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্নস্থানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা ভেঙে লোকালয়ের বিভিন্নস্থানে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। গত দুইদিনে নাছিরগঞ্জ বাজারে পায় ১০টি দোকানরঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আজ বুধবার বিকেলে জানান, তিনি জোয়ারে প্লাবিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেখানে প্রায় দুই শতাধিক লোকের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এছাড়া জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার তালিকা করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের বলেছেন। পানি নেমে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ওই সকল সড়ক মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।