নব দম্পত্তির নও মুসলিম ঐশির ৭ দিনের ঘর সংসার ভোলা দৌলতখানের মৃর্ধারহাটের চরখলিফা ইউনিয়নের দিদার উল্ল্যাহ মুসলিম পরিবারের মোঃ আলী হোসেনের ছেলে মোঃ কামরুলকে(২২) ভালোবেসে ধর্মান্তরিত হয়ে,বিয়ে করে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর উপজেলার এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পূর্বে তার নাম ছিল শ্রাবন্তি মন্ডল ঐশির, পিতা শংকর চন্দ্র মন্ডল, মাতা নিয়তি রাণী মন্ডল।
কুদ্দুস মাওলানার বাড়িতে হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ার অপরাধে, বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী প্রশাসনের পরিচয়ের অপব্যবহার করে প্রকাশ্যে স্থানীয় কতিপয় দুষ্কৃতকারী ও টাকালোভী কিছু জঘন্য অপরাধীর বিশেষ সহোযোগিতায়, পেশীশক্তির প্রভাব দেখিয়ে শত শত জনতার সামনে, অমানবিক নির্যাতন করে নও মুসলিম সদ্য বিবাহিত গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসকে (১৮) জনগনের সামনে দিয়ে জোরপূর্বক হাত-পা বেঁধে গাড়িতে তুলেন।
উল্ল্যেখ্য, ১৫ এপ্রিল তারা উভয়ে আইন মোতাবেক, স্বথইচ্ছায়, স্বজ্ঞানে মোকাম ভোলা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করে।
মাদক সম্রাট চাঁদাবাজ ভূমিদস্যু, নারীলোভী, কালাম তুফানি গং নামক লোকের কাছে হেরে গেলো আইন,হেরে গেলো মুসলমান,হেরে গেলো একজন নও মুসলিম ও সদ্য বিবাহিত গৃহবধূ ।
সরজমিন গেলে স্থানীয় লোকজন বলেন, মেয়ের পরিবার কতৃক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দালাল কালাম তুফানি গং, চরখলিফা ইউনিয়নের কলাকোপা ২ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন মেম্বার মোঃ সবুজ গং, উত্তর জয়নগর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার গিয়াসউদ্দীন গং ও আলাউদ্দিন মৃর্ধা গং, মাদ্রাসা শিক্ষক মহিউদ্দীন গং সহ সংশ্লিষ্ট আরো কয়েকজন সহযোগীদেরকে মোটা অংকের (২,০০,০০০০/- আনুমানিক টাকা) এর বিনিময়ে তাদের সহযোগিতায়, জোরপূর্বকভাবে স্বামীর বাসা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়।
অভিযোগ উঠেছে এসব দালালরা স্থানীয় ইউনিয়নে বিচারের নামে অসহায় পরিবারগুলোকে লুটপাট ও শোষন-নিপিরন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এটা কোন সভ্য সমাজের কাজ হতে পারেনা। খুবই ন্যাক্কারজনক, হৃদয়বিদারক। একজন হিন্দু মেয়ে ভালোবাসার টানে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে কোর্ট কাবিনের (৩,০০,০০০/-)মাধ্যমে শরীয়ত সম্মতভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
জেলা সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্থানীয় লোকজন বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। মেয়েটির কাগজপত্র যাচাই পূর্বক স্ব-স্থানে ফিরিয়ে দেয়ার জোড় দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনতা।
কামরুলের চাচা নূরউদ্দীন দাবি করেন, স্থানীয় কালাম তুফানির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী লোক ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে কামরুলের স্ত্রীকে বহিরাগত প্রশাসন নামক সন্ত্রাসীদের কাছে দিয়ে দেন।
কয়েকদিন পূর্বে, নও মুসলিম নববধূ জান্নাতুল ফেরদাউস একটি সাক্ষাৎকারে দৃঢ়তার সাথে বলেছিলেন, সে নিজ ইচ্ছায় মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং একটি মুসলিম ছেলেকে শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেছেন।
অপরদিকে, জানা গেছে, গাজীপুর উপজেলায় একটি ফ্যান কোম্পানিতে কাজ করতেন দৌলতখানের আলী হোসেনের ছেলে মোঃ কামরুল । সেখানে শ্রাবন্তী রাণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
কামরুল ইসলাম জানান, আমাদের প্রথম পরিচয় যখন হয় তখন শ্রাবন্তী অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। যখন ২ বছর প্রেমের সর্ম্পক চলছিল তখন জানাজানি হলে তার লেখাপড়া বন্ধ করে দেয় তার পরিবার। আমি চট্টগ্রামে চলে যাই। সেখানে একটি জাহাজে চাকরি নেই।
সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল শ্রাবন্তি আমার কাছে চলে আসে দৌলতখানে। (১৫ এপ্রিল) নোটারির মাধ্যমে ইসলামধর্ম গ্রহণ করে সে। তার নতুন নাম দেওয়া হয় জান্নাতুল ফেরদৌস। এরপরে আমরা বিয়ে করি। শুক্রবার থেকে আমরা সংসার শুরু করি। কামরুল ইসলাম আরও জানান, আমি পরে জানতে পারি জান্নাতুল ফেরদৌসের পিতা শংকর চন্দ্র আমার নামে অপহরণ মামলা দিয়েছেন। পরের শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) লোকজন নিয়ে এসে তারা আমার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায়।
কামরুল বলেন, আমি যদি অপহরণ করতাম তাহলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে তো লুকিয়ে থাকতাম। তাকে নিয়ে সালিসে যেতাম না। আমার স্ত্রী সবার সামনে চিৎকার করে বলেছে ‘সে ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছে। তারপরও কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসেনি। আমার সংসারটি ৭ দিনেই ভেঙে দিল কতিপয় দালালরা। কামরুল দাবি করেন, তার স্ত্রীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২০০৩ সালের ৩ মার্চ গাজীপুরে শংকর চন্দ্র মণ্ডল ও নিয়তি রানী মণ্ডলের ঘরে জন্ম নেন শ্রাবন্তী রাণী।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার বিবাহিত স্ত্রীকে আইনসম্মতভাবে অতিদ্রুত ফেরত চাই, সে যাতে তার গ্রহন করা ইসলাম ধর্ম শান্তিতে পালন করতে পাড়ে। পাশাপাশি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জীবন-যাপন করতে পাড়ি। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জরিত সকলের উপযুক্ত বিচারের জন্য অনুরোধ করছি। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে, আজ ২৬ এপ্রিল (সোমবার) আছরের নামাজের পর মিয়ার হাট বাজার থেকে চরখলিফা ইউনিয়ন পরিষদ প্রর্যন্ত এক বিশাল প্রতিবাদী মিছিল করা হয়। মিছিলে বিক্ষুব্ধ জনতা কালাম তুফানির সহ সহযোগী সকলের উপযুক্ত বিচার চায় ও নববধুকে সুস্থভাবে ফেরত চায়।
এসময়, ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় তারা। নাহলে পরবর্তীতে তারা কঠোরতর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে বলে জানায়।
বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্দ্যেশ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৌলতখান থানার অফিস ইনচার্জ বজলার রহমান বলেন, আপনাদের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে থানায় এসে অভিযোগ করুন। আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব। আপনার যার যার মতো শান্তিপূর্ণ ভাবে ফিরে যান।