ডিমলা(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডিমলায় পুলিশি হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধসহ চারদফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিকরা।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সহযোগিতায় উপজেলার স্মৃতি অম্লান চত্বরে ‘ডিমলা উপজেলা সর্বস্তরের অটোরিকশা শ্রমিক’ ব্যানারে সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। দুই ঘন্টা ঘণ্টাব্যাপী এ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন পাঁচ শতাধিক অটোরিকশা শ্রমিক ও শিক্ষার্থী।
এ সময় অটোরিকশা থেকে বিভিন্ন সমিতির নামে দৈনিক চাঁদা আদায়সহ থানায় রিকুইজিশনের নামে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া প্রধান সড়কগুলোর ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেন তারা।দাবি না মানলে আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবীসমূহঃ
————————-
১। অবৈধভাবে বিনাপারিশ্রমিকে ইজিবাইক (অটো) শ্রমিকদের রিকোজিশন ডিউটির নামে প্রহসন বন্ধ কর। নাগরিক হিসাবে ইজিবাইক ( অটো) শ্রমিকদের মানুষ হিসাবে নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত কর।
২। যানজট নিরসনে ফুটপাতে অবৈধ অস্থায়ী দোকানসমূহ উচ্ছেদ এবং ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ কর।
৩। ব্যাটারিচালিত যানবাহন শ্রমকিদের উপর জুলুম, নির্যাতন ও চাঁদাবাজি বন্ধ কর। কার্ড-টোকেনের নামে অবৈধ চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও তাদের প্রশ্রয় দাতাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে চাঁদাবাজি বন্ধ কর। ইতিপূর্বে সমবায় সমিতির নামে আদায়কৃত সকল অর্থ ফিরত দিতে হবে।
৪। ইজিবাইক (অটো) নিবন্ধন, চালক লাইসেন্স ও রুট পারমিট প্রদান করতে হবে। ব্যাটারিচালিত যানবাহনের সংগঠন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-চালক দ্বারাই পরিচালিত হবে, রাজনৈতিক ও বহিরাগত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
ডিমলা উপজেলা সর্বস্তরের অটোরিকশা শ্রমিকের আহ্বায়ক আলম ইসলাম বলেন,বিগত ১৫ বছর এই উপজেলায় চলাচলকারি প্রায় তিন হাজার অটোরিকশা থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করতো সাবেক এমপি আফতাবের স্বজন ও তার লোকজন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনে চালকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
কিন্তু বর্তমানে এই সেক্টরটি হাত বদল হয়ে নতুন করে অটোরিকশা চালকদের নিকট থেকে আবারো চাঁদা আদায় শুরু করা হয়েছে। দালাল চক্রকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা না দিলে জোর-জবরদস্তি করে থানায় রিকুইজিশনে খাটানো হচ্ছে।
উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিরা বলেন,উপজেলার সড়কগুলোতে চলাচল করতে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় চালককে। সমিতির নামে দালাল চক্রের মাধ্যমে এসব চাঁদা আদায় করা হয়।আর থানা পুলিশ রিকুইজিশনের নামে অটোরিকশা চালকদের হয়রানি করছে।
রিকুইজিশনে অধিকাংশ সময় চালকদের কাটাতে হয় অর্ধাহারে, অনাহারে ও অনিদ্রায়। ভাড়া কিংবা কোনো প্রকার পারিশ্রমিক না পেয়েও ডিউটি করতে বাধ্য করা হচ্ছে চালকদের। এই অবস্থার পরিত্রাণ চাই।
Leave a Reply