শুক্রবার (১৫শে নভেম্বর) সকাল থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার অধীনে মাধবপুর ইউনিয়নের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চে ঢাক-ঢোল, খোল-করতাল আর শঙ্খ ধ্বনির মধ্য দিয়ে শ্রী কৃষ্ণ ও তার সখি রাধার লীলাকে ঘিরে এ উৎসব শুরু হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের জোড়া মণ্ডপে বিষ্ণুপ্রিয়া (মণিপুরী) সম্প্রদায়ের ১৮২তম এবং আদমপুর ইউনিয়নে মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মীতৈ (মণিপুরী) সম্প্রদায়ের ৩৯তম মহারাস উৎসব পালন করছে ।
জানা যায়, মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র মণিপুরে প্রথম এই রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। মণিপুরের বাইরে ১৮৪২ সালে কমলগঞ্জের মাধবপুরে প্রথম মহারাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। রাস উৎসবে সকালবেলা ‘গোষ্ঠলীলা’ বা ‘রাখাল নৃত্য’ হয়। গোধূলি পর্যন্ত চলে এই রাখাল নৃত্য। এরপর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা শেষে রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় রাস উৎসবের মূল পর্ব শ্রী শ্রী কৃষ্ণের মহারাসলীলা অনুসরণ। মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের পোশাকে নেচে গেয়ে কৃষ্ণবন্দনা ভোর পর্যন্ত চলে রাসলীলা। রাসনৃত্যে শ্রীকৃষ্ণ,রাধা ও প্রায় ৪০-৪৫ জনের মতো গোপী থাকেন।
এই মহারাস উৎসবে বসেছে নানা রকমের মেলা।সারারাত ব্যাপী চলবে এ উৎসবের আমেজ। মনিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকসহ হাজার হাজার মানুষ সমাগমের মধ্যদিয়ে পরিণত হয়েছে মিলনমেলায়।
এ মহারাত্রির আনন্দের পরশ পেতে সমাগত হয়েছেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি পর্যাটকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপ প্রাঙ্গণ।
মহারাস উৎসবকে ঘিরে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে সাদা কাগজের নকশার নিপুণ কারুকাজে। করা হয়েছে আলোকসজ্জাও।
এ উৎসব মনিপুরীদের সংস্কৃতির এক বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলা।
আয়োজক কমিটি পক্ষ থেকে জানা যায় রাত ১২টা দিকে জোড়া মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে মহারাসের মূলপর্ব মহারাসলীলা।