নীলফামারীর ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের বারবিশা গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান চালক শরিফুল ইসলাম ও গৃহিনী আজিজা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান রিয়াদ (৮) বাঁচতে চায় । জটিল রোগে আক্রান্ত রিয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সে স্কুলে যেতে চায়, বন্ধুদের সাথে খেলতে চায়। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে চিকিৎসা করাতে না পারায় তার স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে।
জটিল রোগে আক্রান্ত রিয়াদ তার বাবাকে কাঁদতে কাঁদতে বলেছে, “আব্বা, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমাকে যেভাবেই হোক চিকিৎসা করে বাঁচাও।” হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র সন্তানটি ছাতনাই ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্র।
দীর্ঘ ছয় মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে মেধাবী ছাত্র রিয়াদ। দিনরাত বিছানায় শুয়ে শুধু চিৎকার করছে আর বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। সারা শরীরে ব্যথা, হলুদ চোখ, কালো হয়ে যাওয়া শরীর, এবং কঙ্কালসার দেহ – রিয়াদের অবস্থা ভাল না। তার হার্টে ছিদ্র, দুইটি বাল্বের একটি অকোজ এছাড়া হার্টের রক্তনালী বন্ধ থাকায় তার সারা শরীর কালো হয়ে গেছে। হাঁটাচলার শক্তিটুকুও আস্তে আস্তে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন কোন কিছু খেতে পারে না। দরিদ্র বাবার যা সম্পদ ছিল সব বিক্রি করে প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা খরচ করে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন। বর্তমানে বাড়ির দুই শতাংশ জায়গাটুকুই তার শেষ সম্বল। ছেলের চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু দরিদ্র পিতার পক্ষে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা আর সম্ভব হচ্ছেনা। তাহলে কি অর্থের অভাবে মেধাবী ছাত্র রিয়াদের জীবন প্রদীপ নিভে যাবে?
জানা যায়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করে রিয়াদের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। পরবর্তীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা যায়, রিয়াদের হৃদপিণ্ডে ছিদ্র, একটি বাল্ব অকেজো এবং হৃদপিণ্ডের রক্তনালী শুকিয়ে গেছে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক ডাঃ মো. নুরুল আক্তার হাসান জানান, রিয়াদের জীবন বাঁচাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে দুটি জটিল অপারেশন করাতে হবে, যার খরচ প্রায় ১২ লাখ টাকার বেশি।
রিয়াদের বাবা শরিফুল ইসলামের কণ্ঠে ভেসে উঠছে হাহাকার। অর্থের অভাবে ছেলের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা করাতে না পারায় তিনি মর্মাহত। কান্না জড়িত কণ্ঠে শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন আর কোন স্বপ্ন নেই। আমার ছেলেটা বাঁচলেই আমি খুশি।”
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রিয়াদের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। তিনি বলেন, “রিয়াদের পরিবার খুবই দরিদ্র। তাদের পক্ষে এত বড় অঙ্কের টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই আমি দেশের সকল সহৃদয় ব্যক্তি ও বিত্তবানদের কাছে রিয়াদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, রিয়াদের অসুস্থতার কথা তিনি শুনেছেন। শিশুটি যাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পায়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।
অসুস্থ রিয়াদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য এগিয়ে আসুন। (রিয়াদের বাবা)
*বিকাশ ০১৭৭৩৯৯০২৪৫* নগদ ০১৭৭৭৯৪৬১৪৭ আপনার আর্থিক সহযোগিতা রিয়াদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে।