কমলা গাছে অজানা পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজারের কমলা চাষিরা। পোকার আক্রমণে মারা যাচ্ছে পুরাতন কমলার গাছ। পাশাপাশি নতুন চারা বড় হওয়ার আগেই আক্রান্ত হচ্ছে নতুন চারা গুলো।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৬.৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৯৫টি কমলা বাগান রয়েছে। এরমধ্যে গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে আছে ৬২ হেক্টর। এ অঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাঁসি ও নাগপুরি জাতের আবাদ হচ্ছে।
জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের লালছড়া গ্রামের কমলা চাষি মোর্শেদ মিয়া বলেন, আমার বাগানে প্রায় ১৫০০ কমলা গাছ ছিল। গত তিন বছরে ৪০০ গাছ মারা গেছে। আরও ২০০ গাছ মারা যাওয়ার পথে।
তিনি বলেন, প্রথমে এক ধরনের সাদা পোকা মাটির নিচে কমলার শিকড় থেকে পানি চুষে ফেলে। পরে উইপোকা শিকড় খেয়ে ফেলে। প্রথম বছর গাছের পাতা হালকা হলুদ, দ্বিতীয় বছর পুরোপুরি হলুদ এবং এরপর পাতা ঝরা শুরু হয়। তৃতীয় বছর গাছটি মারা যায়।
মোর্শেদ আরও বলেন, পোকার আক্রমণের শুরুতে কমলার আকার স্বাভাবিক থাকলেও দ্বিতীয় বছর আকার ছোট এবং পরের বছর আরও ছোট হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাহমুদুল আলম খান বলেন, কমলা চাষিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি বাগান পরিদর্শন করে বেশ কিছু সমস্যা নির্ণয় করা হয়েছে। বাগানগুলো পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বেশি। আমরা চাষিদের কিছু কীটনাশক সরবরাহ করেছি। এর মধ্যে কিছু কাজ করেছে, কিছু করে নাই। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে আমরা পত্র লিখেছি। একটি উচ্চপর্যায়ের দল এসে পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। কারণ এখানে অপরিচিত কিছু মথ আছে যেগুলো শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর বলেন, সম্প্রতি কৃষি অফিসারসহ আমরা কমলা বাগান পরিদর্শন করেছি। সমস্যাগুলো বিশ্লেষণসহ সুপারিশ আকারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিব, যাতে করে কমলা চাষ সমৃদ্ধ হয় ও চাষিরা উপকৃত হন। আমরা সে পদক্ষেপ নিচ্ছি বলে জানান তিনি।
Post Views: 102