দিনাজপুরের ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নামে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের সরকারি বরাদ্দের টাকা সাবেক কর্মকর্তা ডাক্তার মো: নুরল ইসলামের পকেটে,কিছুই জানেন না স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কতৃপক্ষ।
২০২০-২১ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর-১ম পর্যায়) কর্মসূচির আওতায় নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক দিনাজপুর-৫ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান এমপির অনুকূলে নগদ বরাদ্দকৃত অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
গত ১১/১১/২০২০ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত জেলা কর্ণধার কমিটির সভায় ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংস্করণের কাজের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়।
পরবর্তীতে উক্ত বরাদ্দকৃত নগদ টাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস হতে উত্তোলন করা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ কিংবা উত্তোলিত টাকার ব্যাপারে কিছুই জানেনা।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, অফিসিয়াল ভাবে আমাকে কোনো চিঠি করা হয়নি এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। এ বরাদ্দ সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই এমনকি টাকা উত্তোলনে আমার কোন সই-স্বাক্ষরও নেই। টাকা উত্তোলনের খবর আপনাদের মাধ্যমেই জানতে পারলাম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শফিউল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নূরুল ইসলাম দায়িত্বে থাকা কালে হাসপাতালের বিল্ডিং সংলগ্ন এসএস পাইপের বেষ্টনী দিয়ে বাগান করেছিলেন। উক্ত কাজে এমপি মহোদয়ের অর্থায়নের ওয়াদা থাকলেও বাজেট না থাকায় দিতে পারেন নি। তাই পরবর্তিতে ডা. মো. নূরুল ইসলামকে ২০২০-২১ অর্থ বছরে টিআর প্রকল্পের ২লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের কথা অস্বীকার করে ডা. মো. নূরুল ইসলাম বলেন, “সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত খরচে বাগান করেছি, সাইকেল গ্যারেজ করেছি। আমি দু বছর আগে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে অবসর গ্রহণ করি। আমার পাওনা টাকার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কতৃপক্ষের সমন্বয়ে উপজেলা থেকে এই বরাদ্দের টাকা আমাকে দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাগানটি উদ্বোধন করা হয়েছে ২০১৯ সালের ১৪ই অক্টোবর।
বাগান উদ্বোধনের কয়েক দিন পরই ডা. মো. নূরুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র চলে যান এবং ২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর প্রতিষ্ঠনের নামে বরাদ্দকৃত প্রকল্পের টাকা কিভাবে তুলতে পারেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সাবেক কর্মকর্তা নিজের টাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ করেছেন তাই তাকে এই টাকা দেয়া হয়েছে। বর্তমান কতৃপক্ষ যদি বিষয়টি না মানেন তবে টাকা ফেরত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বললে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এই বরাদ্দের বিষটি তিনি জানেন না, বিষয়টি খেঁাজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেবেন।
এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। সরকারি টাকায় হাসপাতাল সংস্করণের পরিবর্তে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।