লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের ছিলাদি গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ হোসেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক। ঋণ নিয়ে এ বছর চার একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন তিনি। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
জমিতে ফলন দেখে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ইউসুফ দেখছিলেন হাজারো স্বপ্ন। কিন্তু গত রোববার (০৩ এপ্রিল) মাত্র ১৫ মিনিটের ঝড়ে শেষ হয়ে যায় তার স্বপ্ন।
শুধু ইউসুফের জমি নয়, লক্ষ্মীপুরে শতশত একর জমির বোরো ধান বিবর্ণ হয়ে গেছে। কোনো ক্ষেতের ধান সাদা, আবার কোনোটার লাল, কালো হয়ে গেছে। ধানগুলো সব চিটায় পরিণত হয়েছে। দিন যত যাচ্ছে শতশত একর জমিতে ধানের বিবর্ণ চেহারা ততই স্পষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থা দেখে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়ন, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর উপজেলার অন্তত পাঁচটি গ্রামে ধানে এ বিবর্ণ চেহারা দেখা গেছে। বিবর্ণ ধানের বেশির ভাগই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের। এমন অবস্থায় বড় ক্ষতির আশংকা করছে ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী কৃষক ইউছুফ জানান, তিনি চার একর জমিতে ব্রিধান-৬৭ রোপণ করেছিলেন। ধানের শীষও বের হয়েছে। এমন সময় গত রবিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মাত্র কয়েক মিনিটের কাল বৈশাখী ঝড়ে তার সবগুলো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের গ্রামের প্রায় আড়াইশ একর জমির ধান এমন বিবর্ণ দেখা গেছে বলে জানান তিনি।
কমলনগর উপজেলার উত্তর চরলরে গ্রামের কৃষক হারুন, জাহাঙ্গীর ও চৌধুরী মিয়া জানান, জীবনে বহু দূযোর্গ দেখলেও এমন কান্ড বিগত সময়ে আর কোন দিন দেখেননি। কি কারণে এমন অবস্থা হয়েছে তা কেউই অনুমান করতে পারছেন না।
তাদের অভিযোগ, ঝড়ের পর কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও কৃষি বিভাগ কিংবা সংশ্লিষ্ট কেউ এসে খোঁজ নেয়নি।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের তথ্য কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন জানান, ঝড়ের পর ধানে ক্ষতির কথা তারা শুনেছেন। আগামি ২-৩ দিনের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির হিসেবটা বের করা যাবে বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ফসল আবাদ করা হয়েছে।