সরকারি নির্দেশনায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পৌর শহর ও গ্রামঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র কাঁচাবাজার, ঔষধের দোকান ও নিত্যপন্যের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু এসব দোকানও সন্ধ্যার পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তা-ঘাট। শহর ও গ্রামের রাস্তায় দু’একটি করে রিকসা,অটোরিকসা দেখা গেলেও ভাড়া পাচ্ছেন না চালকরা,এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবি নিম্ন আয়ের মানুষ।
এদিকে জেলা-উপজেলায় গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মাইকিং করে দোকানপাট, যান চলাচল বন্ধ রাখাসহ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। আর এ নির্দেশনা কার্যকর করতে প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ বাহিনী।
ফুলবাড়ী শহরের রিকসা চালক শফিকুল ইসলাম জানান, একদিন রিকসা না চালালে খাবার জোটে না। তাই রিকসা নিয়ে সকাল থেকে শহরে ঘুরছি। শহরে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই তাই পেছেঞ্জার মিলছেনা। প্রতিদিন ৩-৪শ টাকা রোজগার করি, বর্তমানে এমন অবস্থা সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩০টাকা কামাইছি। আয় রোজগার করতে না পারলে কিস্তি দিবো কি করে পরিবারের মুখেও খাবার জুটবে না। শহরের আরেক রিকসা চালক আব্দুল কাদের ও শহিদুল জানান, আমরা গরিব মানুষ প্রতিদিন রিকসা চালিয়ে চাল-ডাল কিনে খাই। বিধি নিষেধ থাকলেও উপায় নেই আমাদের। তাই সব বিধি নিষেধ উপেক্ষা করেই রিকসা নিয়ে ঘুরছি । এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারেই থাকতে হবে। এসময় যদি কেউ সাহায্য করতো অনেক উপকার হতো।
এ অবস্থায় এইসব মানুষের পাশে এসে দাড়াতে সকলকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সারাবিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়,প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা। আপনাদের একটি ছোট উদ্যোগ বাঁচাতে পারে অনেক প্রাণ। সকলের কল্যাণের জন্যই সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু আশেপাশে এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা দিনের রোজগার দিয়ে সেদিনের আহারের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি কিছু ভাসমান মানুষও রয়েছে। সেই সকল খেটে খাওয়া পরিশ্রমী মানুষ যাতে না খেয়ে না থাকেন, সে ব্যাপারে আমাদের সকলেই এগিয়ে আসতে হবে।
এদিকে করোনা সতর্কতায় যান বাহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ উপজেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া রিকসা চালক, ভ্যান চালক,দিনমজুর ও ড্রাইভারসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবি মানুষের অবস্থা খুবই নাজুক। অসহায় এই মানুষগুলো সরকার এবং সমাজের বৃত্তবানদের কাছে সাহায্য এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন।