শিরোনাম
মাধবপুরে বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা। দুর্গাপুরে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে কেন্দ্র পরিচালক ও পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ। ডিমলায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। গাঁজায় চলম ধ্বংসষজ্ঞ ও প্রানহানীর প্রতিবাদে ডিমলায় বিক্ষোভ। গাঁজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মাধবপুরে বিক্ষোভ মিছিল। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে কালিয়াকৈরে বিক্ষোভ মিছিল। ইহুদীদের সাথে হযরত মুহাম্মদ (স.) জামাকে তুলনা করায় মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ। কালিয়াকৈর চাপাইর তুরাগ নদীতে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার। উল্লাপাড়ায় শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ। উল্লাপাড়ায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৩ অপরাহ্ন

অভাবের তাড়নায় নবজাতক বিক্রি করা মায়ের পাশে ইউএনও।

আনোয়ার হোসেন আকাশ,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ / ১৯৯ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩

শিল্পী বেগম এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে। অভাবের তাড়নায় ৩০ হাজার টাকায় সেই বাচ্চাটিকে বিক্রি করে দেন। শিল্পী বেগম গোয়ালপাড়া এলাকার রায়হানের স্ত্রী। স্বামীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের পর দীর্ঘদিন ভাড়া বাড়িতে ছিল তার বসবাস।

তার বকেয়া ছিল সেই ভাড়া বাসায়। পাশাপাশি মুদি দোকানেও বাকি খেয়েছেন। সেসব টাকা পরিশোধে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক ছেলে সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। নবজাতকটি তার চতুর্থ সন্তান ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়টি নজরে আসার পর শিল্পী বেগমকে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন। এ ছাড়া নবজাতক সন্তানকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নের বাতেন মোড় এলাকায় শিল্পী বেগমের হাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চাবি তুলে দেন ইউএনও বেলায়েত হোসেন। ঘর পেয়ে মহাখুশি তিনি।

শিল্পী বেগম জানান,  ১২ বছর আগে বিয়ে হয় তার। সংসারে আরও দুই ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তবে চতুর্থ সন্তান গর্ভে আসার পরেই হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে চলে যান তার স্বামী রায়হান। এরপর অভাবের সংসারে বিপাকে পরে যান শিল্পী বেগম। সন্তান গর্ভে থাকার সময় বাড়িভাড়া ও মুদি দোকান মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ টাকা বকেয়া তার।

অভাবের বিষয় জানতে পেরে সন্তান বিক্রির পরামর্শ দেয় দালাল চক্র। পরে নিরুপায় হয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করতেই নবজাতক শিশু বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

জানা গেছে, স্ট্যাম্পে নবজাতক কেনাবেচার বিষয় লেখালেখির কাজ সম্পন্ন করেই বাচ্চাটিকে বিক্রি করা হয়েছে। দালাল চক্রের হয়ে কাজ করছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকার মিনি বেগম ও শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার মাহমুদা বেগম।

নবজাতক শিশুর ক্রেতা সেজে কথা হয় দালাল চক্রের সদস্য মিনি বেগমের সঙ্গে। নবজাতক কেনাবেচার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি এই বছর ৫টি শিশু কেনাবেচার কাজ করেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। আপনি চাইলে কম দামে আপনাকে একটা বাচ্চার ব্যবস্থা করে দেব।

মিনি জানান, তারা বেশ কয়েকজন মিলে এই কাজ করেন। বাজারে ছেলে শিশুর চাহিদা একটু বেশি। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় মেয়ে শিশু পাওয়া যায়। আর ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ হাজার খরচ করতে হয় ।

নবজাতক শিশুর ক্রেতা জসিম বলেন, আমার বিয়ের বয়স ১৫ বছর। এখনো কোনো সন্তান নেই। ডাক্তার বলেও দিয়েছে যে, আমি আর কখনো বাবা হতে পারব না। তাই এই বাচ্চাটা কিনতে চেয়েছি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন জানান, নবজাতক শিশু ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো সুযোগ নেই। এটা অপরাধ। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর