স্টাফ রিপোর্টারঃশ্রীমঙ্গলে দ্বিতীয় বারেও সূর্যমুখী চাষে সফল কৃষক। এ বছরে ১০০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে সূর্যমুখী গাছে ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। সূর্যমুখীর প্লটগুলোতে এখন ফুলের সমারোহ। চাষিরাও খুব খুশি। অল্প খরচে সূর্যমুখী চাষে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন সূর্যমুখী চাষিরা। শ্রীমঙ্গলের বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে হাসছে সূর্যমুখী। সবুজের মধ্যে হলুদ ফুলগুলো অপরুপ সৌন্দর্য হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, পানি, মাটি সূর্যমুখী চাষের উপযোগী। তাই আমাদের দেশে সূর্যমুখীর সম্ভাবনা উজ্বল। এ কারণে দেশে তেলের ঘাটতি মেটাতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গত মৌসুমে অর্থাৎ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করা হয়। গত মৌসুমে সূর্যমুখীর চাষ সফল হওয়ায় এবার আরো অধিক জমিতে সূর্যমুখীর সফল চাষ হয়েছে।
জানা যায়, গেল বছর উপজেলার শ্রীমঙ্গল সদর, মির্জাপুর,ভূনবীর,আশিদ্রোন,কালাপুর ও সিন্দুরখানসহ ৬টি ইউনিয়নে ৬০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছিল। ৬০টি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছিল।
কৃষি অফিস সুত্র জানা যায়, গত বছর প্রতিজন সূর্যমুখী চাষীকে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বিনামূল্যে সার, বীজ, প্রশিক্ষণ ভাতা এবং প্রদর্শনী প্লটের পরিচর্যা, সেচ, আগাছা ও পোকা-মাকড় দমন বাবদ এক হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল। ভোজ্যতেলের পুরোটাই আমদানির উপর নির্ভরশীল। তাই আমদানি নির্ভরতা কমাতে এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসম্মত তেল উৎপাদনই এর উদ্দেশ্য।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, গত বছর সূর্যমুখীর সফল চাষ ও ভাল ফলন হওয়ায় এবার অনেক চাষি সূর্যমুখী চাষে উৎসাহী হয়েছেন। ফলে এ বছরে উপজেলায় ৯ ইউনিয়নে ১০০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে এবং এক বিঘা করে এক’শটি। প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে । প্রতিজন কৃষককে বিনামূল্যে সার, বীজ, পরিচর্যা, সেচ, আগাছা পোকা-মাকড় দমন বাবদ দেড় হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৩০০ জন চাষিকে ৩০০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষের জন্য বীজসহ অন্যান্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। তিনি নিয়মিত এইসব প্রদর্শনী প্লটসহ সূর্যমুখীর অন্যান্য জমিগুলো নিয়মিত দেখভাল করা হচ্ছে।
সূর্যমুখী একধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। এর বীজ তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। বাংলাদেশেও একটি তেল ফসল হিসেবে সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। সূর্যমুখী তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে খুব ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এ ছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি এবং ই রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, সূর্যমুখী তেল পৃথবীর শ্রেষ্ঠ তেল যা রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমুখী অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর অর্থাৎ পুষ্টিমানে সর্বোত্তম। এক কথায় সূর্যমুখী তেল মানে-গুনে অনন্য। এ তেল হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ উপযোগী কারণ এতে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ে না।