ছেলে ও স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে রাগের মাথায় বাড়ী থেকে বের হয়ে আসেন কফিজুল ইসলাম নামে এক ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ। এরপরে কনকনে ঠাণ্ডায় শীতের কাপড় ছাড়াই রাত্রিযাপন করছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের লাহিড়ী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায়।
গত শনিবার গভীর রাতে বাড়ী ফেরার সময় বৃদ্ধকে বারান্দায় এমন অবস্থায় দেখে এগিয়ে যান সরকারি শহীদ আকবর আলী কলেজের প্রভাষক মামুন কায়সার। বৃদ্ধকে সেখান থেকে বিদ্যালয়ের পাশেই তার নিজের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার পর খাবার খাওয়ান। এরপরে শীতের কাপড় দিয়ে বাড়ীতে থাকার অনুরোধ করলেও ওই বৃদ্ধ রাতেই চলে যান বিদ্যালয়ের বারান্দায়।
প্রভাষক মামুন কায়সার রবিবার সকালে ওই বৃদ্ধের ছবিতুলে পরিচয় এবং পরিবারের সন্ধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে নজরে আসে পাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকের। পরিচয় শনাক্ত করে ওই বৃদ্ধের ছেলে শাহিনুরসহ রবিবার রাতে উপস্থিত হন বিদ্যালয়ের বারান্দায়। বাবার রাগ ভাঙিয়ে বাবাকে বাড়িতে নিয়ে যান ছেলে।
উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের সরমজানি গ্রামের বাড়ী ওই বৃদ্ধের। ছেলে শাহিনুর জানান, গত শুক্রবার সকালে বাড়ীতে ঝগড়া করে বাবা বের হয়ে আসেন। এরপরে আর বাড়ীতে ফিরেননি। আমরা খোঁজাখুজি করছিলাম, কিন্তু পায়নি। ঝগড়া করবে না এবং বাবার যত্ন নিবে বলে বাড়ীতে নিয়ে যান বাবাকে।
প্রভাষক মামুন কায়সার বলেন, নিজের বাবা-মা নেই। তাই বাবা ও মায়ের অনুপস্থিতির বিষয়টা মাঝে মাঝেই হৃদয়ে নাড়া দেয়। আমি চেষ্টা করেছি বৃদ্ধ বাবার কষ্ট লাঘব করতে। বাবা ও ছেলের সম্পর্কের অবনতি ভবিষ্যতে আর না ঘটুক এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সন্ধ্যায় ফেসবুকে পোস্ট নজরে আসার পর বৃদ্ধ বাবার পরিচয় খুজে বের করি। এরপরে পাড়িয়া বাজার থেকে বের হওয়ার সময় তার ছেলে শাহিনুরকে নিয়ে যায় বাবার কাছে। বর্তমানে বৃদ্ধ বাবা বাড়ীতে রয়েছেন। আমি তাঁর ভালোমন্দ খোঁজ খবর রাখছি।