বেলকুচিতে প্রধান আসামিসহ ৪ জনকে বাদ দিয়ে চার্জশিট দাখিল-পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নাবিন মন্ডলকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত ১৩ আসামির মধ্যে প্রধান আসামিসহ চারজনকে বাদ দিয়েই আদালতে চার্জশিট দাখিল করার অভিযোগ উঠেছে বেলকুচি থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। মামলায় প্রধান আসামী ঢাকার মন্ডল গ্রুপের জিএম ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম ও বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আকতার হামিদসহ চারজনের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিতে অবশেষে আদালত বরাবর সুপারিশ পাঠিয়েছে পুলিশ। শাহাদত হোসেন মুন্না, ইয়াসিন আলী, সবুজ, হয়রত আলী, মাসুদ, সৌরভ, আলমাছ, আসাদুল ও সোলেয়মানসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে গত ৩০ জুন আদালতে চার্জশীট জমা দেয় পুলিশ। জমা প্রদানের পর থেকে চার্জশীট সুকৌশলে নজরবন্দী রাখায় দেখা সম্ভব হয়নি। ঈদের ছুটি শেষে কোর্ট ইন্সপেক্টর মোস্তফা কামাল রোববার অফিসে আসেন। অতপর দুপুরে তা দেখার সুযোগ মেলে। মুল চার আসামীই বাদ দেবার বিষয়টিও নিশ্চিত হন মামলার বাদী।
বাদী নাবিন মন্ডল বলেন,গত ১০ জুন সন্ধ্যায় আমাকে মারপীটের ঘটনার পর রাতে আমার বাবা যখন বেলকুচি থানায় যান তখনই ওসি সাহেব ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আকতার হামিদ, সজিব আহম্মেদ ও হাকিম মন্ডলের নাম বাদ দেবার জন্য পিড়াপিড়ি করেন। বাবা রাজি না হওয়ায় মামলা নিতে গড়িমশি করে পুলিশ। ঘটনার চারদিন পর মামলা হলেও জখমের গ্রীভিয়াস সনদ আদালতে পৌঁছাতেও পুলিশের গড়িমশিতে ওই চারজন বাদে সকল আসামীই জামিন পান। তদন্তে এসে স্বাক্ষীর বক্তব্য ও আলামত গ্রহনেও নানা কৌশল ও টালবাহানা করে পুলিশ। পুলিশ শেষ পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামসহ মুল চারজনকে বাদ দিবে, তা আগে থেকেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। আগামী ২৪ জুলাই এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। আইনজীবির মাধ্যমে আমি নারাজি দেবার প্রক্রিয়া করবো।’
বাদীর বাবা দৌলত মন্ডল বলেন,বেলকুচি থানা পুলিশ যে শুধু আমার ছেলের বেলায় এ ধরনের রহস্যজনক আচরণ করেছে তা নয়। আলহাজ সিদ্দিকী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী মাসুদ এবং ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ভুঁইয়া ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের লাঞ্ছিতের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অভিযুক্ত হলেও একই ধরনের নাটকীয়তার আশ্রয় নেন পুলিশ। আমার ছেলেকে মারপীটের এজাহারে স্বাক্ষী জামাল উদ্দিন বাপ্পী, রিপন চক্রবর্তী, রুবেল তালুকদার, অলিফ সরকার, মোখলেছুর রহমান রতন এবং চেয়ারম্যান মির্জা সোলেয়মান পত্নী স্বীকৃতি বেগমের নাম রয়েছে। তারা গত ৩০ জুন সুস্পষ্টভাবে সকলের উপস্থিতিতে স্বাক্ষ্য দিলেও রহস্যজনক ভাবে ওই সকল আসামিদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। বেলকুচি থানা পুলিশের এসব অনৈতিক ও গড়িমশির বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের আইজিপি মহোদয়ের কমপ্লেইন শাখায় অভিযোগ দেবার কথাও ভাবছি।
বেলকুচি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নিয়ামুল কথা বলতে রাজি না হলেও। অন্যদিকে (ওসি) গোলাম মোস্তফা দাবি করেন,তদন্ত ও স্বাক্ষ্যগ্রহন শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় চার জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া,নয়জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনও আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত আমলে নিতে পারেন, চুড়ান্তই সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টার মোস্তফা কামাল বলেন, সংক্ষুব্ধ হলে আদালতে বাদীর না-রাজি দেবারও উপযুক্ত বিধান রয়েছে।