শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১১ অপরাহ্ন

ডিমলায় বুড়ি তিস্তার বাঁধ মেরামত না হওয়ায় হতাশায় কৃষক।

মোঃ হাবিবুল হাসান,ডিমলা(নীলফামারি)প্রতিনিধিঃ / ২১৬ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২

ডিমলায় বুড়ি তিস্তার বাঁধ মেরামত না হওয়ায় হতাশায় কৃষক

নীলফামারীর ডিমলায় বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা গ্রামের খাল পাড়া হইতে খোকসার ঘাটের উজানে দক্ষিন সুন্দর খাতা পর্যন্ত বুড়ি তিস্তার বাঁধটি দেশ স্বাধীনের পূর্বে নির্মিত।

১৯৮৮ সালের প্রাকৃতিক দূয্যোর্গ বন্যার পানিতে ৮০-১০০ ফিট বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি এক সময় মেরামত করা হলেও উজানের পানির ঢলে ভেঙ্গে য়ায়। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষা কচুবাড়ীর দলার বাঁধটি মেরামত করা আজও সম্ভব হয়নি। বাঁধটি মেরামত না হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের শস্যভান্ডার খ্যাত ডিমলা উপজেলার নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা, দক্ষিন সুন্দর খাতা গ্রামের কয়েক হাজার বিঘা জমিতে এ এলাকার কৃষকেরা বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপন করতে পারে না ।
ফলে প্রতিনিয়ত কৃষকেরা স্বপরিবারে অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চলতি বোরো মৌসুমে বাঁধের ভাটিতে কৃষকেরা বোরো ধান চাষাবাদ করলেও তারা এখন পাঁকা ধান কাটতে ঝুকির মুখে। ইতিমধ্যে কাল বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ায় ফলে উপজেলার স্থানীয় লোকজনদের ঘরবাড়ী, গাছপালা, ভুট্টাক্ষেত সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান পাকার আগ মুহুর্তে বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে উজানের পানি প্রবাহিত হয় তাহলে কৃষকদের বাঁচার উপায় থাকবে না।
শুক্রবার (১৩ মে) বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিমলা সদর উপজেলা থেকে ৫ কিঃ মিঃ দুরে বুড়িতিস্তা নদীর পূর্বপাশ ঘেষে বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দর খাতা মাইঝালীর ডাঙ্গা গ্রামের কচুবাড়ীর দলার খালপাড়া সংলগ্ন বাঁধটি। বুড়ি তিস্তা নদীটির নাব্যতা না থাকায় শুকনো মৌসুমে কৃষি জমি হিসেবে ব্যবহার করে অনেকে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষাবাদ করে আসছে। এর ফলে নদীর নাব্যত্য যেমন হারিয়ে গেছে তেমনি বর্ষা মৌসুমে উজানের পানির ঢলে বাঁধটি ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তি কৃষি জমিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করছে।
বন্যার পানিতে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ায় এ অবধি এলাকার গরীব অসহায় কৃষকেরা আমন ধান রোপন করতে পারে না। ইরি ধান মৌসুমে জমিগুলোতে বোরো ধান চাষাবাদ করলেও বোরো ধানকাটা মৌসুমে বুড়িতিস্তা নদীর পানি বাঁধটির ভাঙ্গা অংশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চাষাবাদকৃত পাঁকা বোরো ধান তলিয়ে গিয়ে অনেক কৃষকের পাঁকা ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়  এবং মধ্যম সুন্দর খাতা মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়লয়টির মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।  বিদ্যালয়টির মাঠটি পানিতে তলিয়ে গেলে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ জনসাধারনের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হবে।
বাঁধটি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ায় ফলে সুন্দর খাতা কচুবাড়ীর দলা হইতে খোকসারঘাট ব্রীজের উজানের জমিগুলো আমন মৌসুমে চাষাবাদের অনুপযুক্ত। জমিগুলোতে কৃষকেরা বোরো ধান চাষাবাদ করে দৈনন্দিন মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করে আসছে।
কৃষকদের দিকে তাকিয়ে ও দেশের খাদ্য চাহিদার বৃহৎ স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বুড়িতিস্তার বাঁধটি মেরামত করলে এলাকার কৃষকেরা উপকৃত হবে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, চলতি বোরো মৌসুম ধান পাঁকার আগে বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে পড়লে আমাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে এবং তা পুষিয়ে নিতে পারব না। স্থানীয়দের দাবী সরকারী বরাদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি মেরামত করা হলে এলাকার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে সেই সাথে তারা এক ফসলী জমিতে দুই ফসল চাষাবাদ করতে পারবে।
বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধটি অনেক দিন আগে ভেঙ্গে যায়। এ এলাকার কৃষকেরা জমিতে আমন ধান রোপন করতে পারে না কৃষকেরা ইরি-বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল। ইরি-বোরো ধান পাঁকার শেষ মুহুর্তে যদি জমিগুলোতে উজানের পানি ঢুকে পড়ে তাহলে কৃষকদের অপূরনীয় ক্ষতিসাধন হবে। বন্যার কবল হইতে বাঁধটি মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাঁধটি মেরামতের কথা তুলে ধরে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটার চেষ্টা করব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর