ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা হাড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন ইয়াছিন আলী।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার যাত্রী সেজে ওঠেন দুই ব্যক্তি। ছোট ছেলে দেখে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে ঘুরতে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে হাউস করে অটোরিক্সা চালাতে বসে ছেলেটিকে ফাঁকি দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে রিকশা নিয়ে উধাও হয়ে যান তারা।
এই দিকে ভাড়ায় চালিত অটোরিক্সাটি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোর চালক মো. ইয়াছিন (১৪)।
ইয়াছিনের সাথে কথা বলে জানা যায়,রোববার (৬ছয় ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের পলোয়ান মসজিদ এলাকা থেকে ১৪ বছর বয়সের ছেলে ইয়াছিল আলীর অটোরিকশাটি চুরি হয়ে যায়।
দেড় মাস আগে পরিবারের হাল কাঁধে নিয়ে কিশোর বয়সে অটোরিকশার হ্যান্ডেল ধরে ইয়াছিন। সেটি চুরি হয়ে যাওয়ায় এখন চোখেমুখে অন্ধকার দেখছে ছেলেটি।
ইয়াছিনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চরভুতা গ্রামে।
ইয়াছিন জানায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৭নং ভবানীগঞ্জের চৌরাস্তা বাজার থেকে তার অটোরিকশায় দুইন যাত্রী ওঠে জেলা শহরে আসার জন্য। বিভিন্নস্থানে ঘুরিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে আসে পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের পলোয়ান মসজিদের পাশে। সেখানে ওই যাত্রীরা নেমে চা পান করে।
এ মসয় যাত্রীরা চালক ইয়াছিনকে পাশের একটি ভবন দেখিয়ে সেখানে পাঠায় একটি সাউন্ড বক্স আনার জন্য। সরল বিশ্বাসে সে তাদের কথামতো সেখানে যায়। এই সুযোগে যাত্রীবেশী চোরেরা তার অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। মুহূর্তেই এমন ঘটনায় সে হতবিহ্বল হয়ে পড়ে ইয়াছিন। এরপর কান্নায় ভেঙে পড়ে সে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইয়াছিন বলে,গত দেড় মাস যাবত এলাকার জনি মেস্তুরী নামে একজনের কাছ থেকে আটোরিকশাটি ভাড়ায় নিয়েছি। দিনে ৫-৬শ টাকা পাই। ৩শথ টাকা ভাড়া হিসেবে মালিককে দিতাম। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালাই।
অটোরিকশাটি এখন চোরে নিয়ে গেছে,মালিককে কী বুঝ দেব? ইয়াছিন জানায়,তার বাবা মোঃ ইব্রাহিম অন্যত্র বিয়ে করে তাদের রেখে চলে গেছে। তার তিন বোন। ছোট এক ভাই ছিল,ছয় মাস আগে ব্রেন ক্যান্সারে মারা গেছে। ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক টাকা ঋণ করতে হয়েছে তাদের পরিবারের।
একদিকে ঋণের বোঝা,অন্যদিকে পুরো পরিবারের ভার তার কাঁধের ওপর। তাই লেখাপড়া ছেড়ে অটোরিকশা চালানো শুরু করেছে। কিন্তু অটোরিকশাটি হারিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছে ইয়াছিন। এই দিকে অটোরিকশা চুরির বিষয়টি লক্ষ্মীপুর শহর ফাঁড়ি পুলিশের নজরে আনা হলে উদ্ধারের চেষ্টা চালাবেন বলে জানান সেখানকার ইনচার্জ মো. জহিরুল আলম।