সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ-পারাপার হতে হচ্ছে।এতে একদিকর সংকটাপন্ন হচ্ছে জীবন অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি ।
গত ১২ জানুয়ারী (বুধবার) কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের নাটুয়ারপাড়া কে.বি.বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,ঘোড়াগাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,খাষশুড়িবেড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় সহ খাসরাজবাড়ি,চরগিরিশ,তেকানি ও নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণী থেকে ১০ ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের টিকা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
নদী বিধৌত এলাকা হবার সুবাধে সাধারণ ভাবেই ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পার হতে হয় যাত্রীদের ,এরই মধ্যে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে একই নৌকাতে ২০০-২৫০ জন শিক্ষার্থীকে চাপাচাপি করে নৌকাতে পারাপার করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নৌ-পথে নৌকাতে ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় আট গুণ অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে পারাপারে একদিকে শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে চরম ঝুঁকিতে অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণীর একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,”আমরা এক নৌকাতে এত ছাত্র-ছাত্রী উঠতে অস্বীকার করলে,স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক জোড় করে এক নৌকাতে চাপাচাপি করে উঠায়”
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স থেকে করোনা ভাইরাসের টিকা দিয়ে ফেরার পথে যমুনা নদীতে খাষশুড়িবেড় বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে ৯ম শ্রেণীর ঝুমুর খাতুন, এসএসসি পরীক্ষার্থী নুপুর,৭ম শ্রেণীর শারমিন সহ চার জন মেয়ে পানিতে পড়ে যায়। এসময় নৌকাতে থাকা অপর ছাত্ররা পানিতে পড়া ছাত্রীদের উদ্ধার করে।আহত ছাত্রীদের নিজ নিজ বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানা যায়।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ -পারাপার বিষয়ে জানতে চাইলে নাটুয়ারপাড়া কে.বি.বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন,” এতো ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়া জীবনের জন্য হুমকি স্বরুপ “তা ছাড়া এক নৌকাতে এতো চাপাচাপি করে নৌ পারাপারে স্বাস্হ্যবিধি বিঘ্নিত হচ্ছে”।
অন্যদিকে ঘোড়াগাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,”শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে এসে টিকা কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোড় তদবির করা হলেও কোন সুফল আসেনি”।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্হ্য কর্মকর্তা ডা.মোমেনা পারভীন বলেন,”শিক্ষার্থীদের কিভাবে পার করবেন?এটা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপার,তবে এই ভ্যাকসিন এসি ছাড়া রাখা সম্ভব না হওয়াতে প্রতি স্কুলে গিয়ে টিকা দেওয়া যাচ্ছে না”।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দীকির সাথে এ বিষয় নিয়ে জানতে চাইলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ পারাপার হয়ে করোনা ভাইরাসের টিকা দিতে গিয়ে জীবন সংকটে পড়ায় অনেক অভিভাবক তাদের কোমলমতি সন্তানদের টিকা দিতে অনীহা দেখাচ্ছে বলেও জানা যায়।
উল্লেখ্য,সারাদেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসের ফাইজার টিকাদান কর্মসূচী ধারাবাহিক ভাবে চলমান থাকবে ।