ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় একতা নার্সিং হোম নামের একটি ক্লিনিকের চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রাতে নিহত প্রসূতি মায়ের স্বজনেরা এমন অভিযোগ করেন।
জানা যায়, নিহত প্রসূতির নাম নাসিমা খাতুন (২৯)। তিনি সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের খইলসাকুরি গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী।
এ বিষয়ে নিহতের মা আনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আমার মেয়ে নাছিমা খাতুনকে শহরের একতা নার্সিং হোম ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। এরপর চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম আমার মেয়ের সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সিজারের পরে ডাক্তার জানান শিশু সন্তানটি মারা গেছে। এ কথা শুনে অমরা সবাই আমার মেয়েকে দেখতে চাইলে নার্সরা আমাদের দেখা করতে যেতে দেয়নি।
অন্যদিকে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার মেয়েকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। এরপর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একটি অ্যাম্বুলেন্সে আমার মেয়েকে রেখে পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়।’
একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা মা কান্না জড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের সুচিকিৎসা হয়নি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এবং এই ডাক্তারেরও বিচার চাই।’
এ বিষয়ে নিহতের ফুপাতো ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার সময় আমার বোন একদম সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। এখানকার ডাক্তার তাঁর চিকিৎসা ভালো দিতে পারেননি। যে কারণে আমার বোন মারা গেছেন।’
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাচ্চা পেটেই মৃত ছিল। আমি যখন অপারেশন করে চলে যাই, তখন পর্যন্ত রোগী ভালোই ছিল। এরপর প্রায় ৫০ মিনিট পর জানতে পারি রোগীর বিপি পাওয়া যাচ্ছে না।
পরে ক্লিনিকে আবার এসে রোগীর অবস্থার অবনতি দেখে রোগীকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কারণ রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনেরা তাকে নিয়ে যেতে রাজি হননি। তারা এই ক্লিনিকেই চিকিৎসা দিতে বলেন। দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো রোগীটিকে বাঁচানো যেত।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেলে ঘটনা খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’