ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের দৌলতপুর ইউনিয়নের কেউটগাঁও গ্রামের মহেন্দ্র দাসের ১৩ বছর বয়সের ছোট্র ছেলে রিপন দাস অজানা রোগ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। সে বৃক্ষশিশু নামেই পরিচিত।তাকে সবাই বৃক্ষশিশু নামে ডাকে। তার হাত পায়ের তালুর ঘাগুলো গোলাকার ও লম্বাকৃতি বিস্কুটের মতো দেখতে। নখগুলো বড় হয়ে সামনের দিকে কুঁকড়ে গেছে। তার মাথাতেও কালো শুকনো ঘা। ঠোঁটেও ছোট ছোট ঘা।
রোগের বিষয় জানতে চাইলে রিপন বলে,আমার হাতে-পায়ে অনেক ব্যথা। আমি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। আমি সুস্থ হতে চাই। মা-বাবা আর দুই বোন ছাড়া আমার কেউ পছন্দ করে না। স্কুলে কেউ আমার কাছে আসতে চায় না। ঠিকমতো খাইতে পারি না। চামুচ দিয়া ভাত খাই।’
জানা গেছে, জন্মের চার মাসের মাথায় অজ্ঞাত জটিল রোগে আক্রান্ত হয় সে।গুটি গুটি শুকনো ঘায়ে ভরে গেছে তাঁর হাত-পায়ের তালু। অজ্ঞাত রোগে বন্দী হয়ে পড়েছে তাঁর শৈশব। মহেন্দ্র দাস রামের একমাত্র ছেলে রিপন। সে কেউটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
রিপনের মা গোলাপী রানী রায় জানান, ২০০৭ সালে জন্মের চার মাসের মাথায় রিপনের মাথা, হাত ও পায়ের তালুতে ঘামাচির মতো দেখা দেয়। তবে ঘামাচিতে কোনো রস দেখা যায়নি। চার-পাঁচ মাস পর ঘামাচিগুলো বড় আকার ধারণ করে। তিন-চার মাস পর সেগুলো কালো হয়ে যায়। ধীরে ধীরে হাত-পায়ের তালুগুলো জালের মতো ফাটতে থাকে। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে ঘাগুলো বড় হতে থাকে।
এ বিষয়ে রিপনের বাবা মহেন্দ্র দাস আমারজমিনকে বলেন,সামান্য মুচির কাজ জুতা সেলাই করে কষ্টে অর্জিত সামান্য আয় দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার চালাতে হয়। এমনিতেই নুন আনতে পান্তা ফুড়ায়ের মত খেয়ে নাখেয়ে চলছে সংসার তার উপর ছোট ছেলের শরীরে এমন দুর্রাজ্ঞ ব্যধি হয়েছে। চিকিৎসা ছাড়া ছেলেকে বাঁচনো সম্ভব নয়।একজন বাবার কোলে মাথা রেখে সন্তন যখন বাঁচার আকুতি করে সে কষ্ট কত যন্ত্রনার হয় বাবা মা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারে না। আমার পক্ষে তাঁর চিকিৎসা ব্যয় অসম্ভব। সহযোগিতা পেলে আমার ছেলের চিকিৎসার সুযোগ হতো।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয় রিপনকে। সেখানে কয়েকটি অপারেশন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর কিছুটা ভালো হলেও বাড়িতে ফিরে আনা হয় তাকে। এর পরে তার আর চিকিৎসা হয়নি বলে জানান মহেন্দ্র দাস।
এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন,আমরা যত দূর সম্ভব সহযোগিতা করছি।’বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।