নাসিরুল ইসলামঃ কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলাধীন বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা দাখিল মাদরাসায় ৫০তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকল শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী একটি র্যালি বের করে।
র্যালিটি দাসিয়ারছড়া কালিরহাট বাজার প্রদক্ষিণ করে দাসিয়ারছড়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। র্যালি ও পুস্পস্তবক অর্পনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী।
র্যালিটি শেষ করে শেখ ফজিলাতুন্নেসা দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে আলোচনা সভায় সুপার আমিনুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমরা ছিটমহলের মানুষ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আছে বলেই। তিনি আমাদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
আমরা এখন নিজের পরিচয় দিতে পারি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছে বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার অগ্রদূত। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে হয়তো আজও বাঙ্গালী জাতি স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহন করতে পারতো না এবং পরাধীনতার শিকলে আজও আবদ্ধ থাকতো। আমাদের সকলের মাতৃভূমি বাংলাদেশ একসময় ছিল বিদেশী শত্রুদের দখলে। সেই বিদেশী শত্রুদের হাত থেকে দেশ কে স্বাধীন করার লক্ষ্যে নিজের জীবন বাজি রেখে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু।
পৃথিবীতে যত মহান ব্যাক্তিত্ব রয়েছেন তাদের তালিকায় বঙ্গবন্ধুর নাম রয়েছে প্রথম কাতারে। তার অসামান্য নেতৃত্বের দক্ষতার মাধ্যমে তিনি দেশের সর্বস্তরের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধ অনুপ্রাণিত করতে। এবং দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়ে গিয়েছেন শত্রুদের বিরুদ্ধে। ছিনিয়ে এনেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং আমাদের উপহার দিয়েছেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের । আমরা পেয়েছি একটি নতুন পতাকা, নতুন মানচিত্র এবং স্বাধীনতার স্বাদ।
সাবেক সভাপতি আলতাব হোসেন বলেন, ছিটমহল বিনিময়ের পর আমারা রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎ, স্কুল, কলেজ এবং একটি সরকারি মাদ্রাসা পেয়েছি। যেমন বঙ্গবন্ধু না আসলে এদেশে মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত হতো না। তেমনি মুক্তিযুদ্ধ না হলে এদেশে স্বাধীনতার সূত্রপাত হতো না এবং সৃষ্টি হতো না স্বাধীন বাংলাদেশের। তবে আমাদের কখনোই ভূলে গেলে চলবে না এখনো এদেশে টিকে আছে কিছু স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। এবং তারা প্রতিটি পদক্ষেপে দেশকে একটি ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিনত করতে চায় এবং স্বাধীনতার গৌরবকে কলুষিত করতে চায়।
তাই এদের সকলের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে। এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের সকলকে একজোগে কাজ করতে হবে। তাহলেই তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার আত্মাকে আমরা শান্তি দিতে পারবো।
সহকারী শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম বলেন, ছিটমহল বিনিময়ের পর আমরা পেয়েছি নাগরিকত্ব, পেয়েছি বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের সহায়তা। বঙ্গবন্ধু, বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, যাতে এদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তার রাজনীতির মূলমন্ত্রই ছিল আদর্শের জন্য সংগ্রাম। আদর্শের জন্য ত্যাগ। যে আদর্শ, বিশ্বাস ও স্বপ্ন নিয়ে তিনি রাজনীতি করতেন, শত কষ্ট ও প্রচণ্ড চাপেও তিনি তাতে অটল ছিলেন। তার আদর্শ, ত্যাগ, দূরদর্শিতা এবং অকুতোভয় আপসহীন নেতৃত্বে দেশ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। বাঙালি জাতি পায় হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।
পরিশেষে সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করে উক্ত আলোচনা সভায় সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
Post Views: 230