জানা যায় উধুনিয়া ইউনিয়নের দত্তখারুয়া গ্রামের খেলার মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে সেখানে মৌসুমী ফসল মাড়াইয়ের স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা। আর এতে গ্রামের ছাত্র ও যুবকেরা কোন ধরনের খেলাধুলা বা শরীরচর্চামূলক কর্মকান্ড করতে পারছেন না। একদিকে ভেঙ্গে পড়ছে কিশোর ও যুবকদের মন অন্যদিকে মাঠটি বেদখল করছে কিছু প্রভাবশালী মানুষ। এ বিষয়টি দ্রুত সমাধান নাহলে গ্রামের সাধারন মানুষের মধ্য গোলযোগের আশঙ্কায় রয়েগেছে। মাঠটি দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রামের যুব সমাজ উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছে।
ইতোপূর্বে গ্রামের যুব সম্প্রদায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান সরকারি মাঠটি পরিমাপ করে সেখানে গ্রামবাসীর ফসল মাড়াইসহ ব্যক্তিগত সকল কর্মকান্ড বন্ধের নির্দেশনা সূচক একটি সাইনবোর্ড সেটে দিয়েছে। কিন্তু মাঠ দখলকারীরা সরকারি নির্দেশনা মানছেন না।
দত্তখারুয়া গ্রামের যুব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে মোঃ রজব আলী অভিযোগ করেন, তাদের এই খেলার মাঠটি বহু প্রাচীন। জেলা প্রশাসকের নামে এটি তফশীলভুক্ত। এখানে শুধু গ্রামের ছেলেরা খেলাধুলা করে না। উপরোন্ত এই মাঠে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো লোকজনও ফুটবলসহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। কিন্তু এই গ্রামের হাজী মজনু মিয়া,আমজাদ হোসেন,আব্দুল লতিফ,রাজু আহম্মেদ,জিন্নাহ মিয়া, মোজাম হোসেন,মোমিন মাষ্টার ও আব্দুল লতিফসহ বেশ কিছু কৃষক ৪/৫ বছর ধরে মাঠটি দখল করে মাঠের পুরো ঘাস তুলে ফেলে সরিষা মৌসুমে সরিষা, ধানের মৌসুমে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করে আসছে। ফলে ছেলেদের এই মাঠে সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। গেল বছরের শেষের দিকে এ ব্যাপারে উপজেলা ভূমি অফিসে একটি অভিযোগ দেওয়া হলে ভূমি অফিস স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহযোগিতায় মাঠটি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ এবং এই মাঠ ব্যক্তিগত কোন কাজে ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখার জন্য নির্দেশনামূলক একটি সাইনবোর্ড সেটে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে গ্রামের মাঠ দখলকারী ব্যক্তিগণ যথারীতি চলমান সরিষা মৌসুমে এখানে সরিষা মাড়াই ও শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজ করে যাচ্ছেন।
আর এতে গ্রামের ছেলেরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রজব আলী জানান, তিনি আবারোও চলতি জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে উপজেলা ভূমি অফিসে এ ব্যাপারে অভিযোগ পত্র দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাজী মজনু মিয়া ও আব্দুল লতিফ গংদের সাথে কথা হলে তারা জানান, গ্রামের অপর ব্যক্তিদের সঙ্গে তারা বিভিন্ন মৌসুমে এই মাঠে ফসল মাড়াই ও শুকানোর কাজ করে থাকেন। বাড়িতে জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে বছরের কিছু সময় মাঠটি তারা ব্যবহার করে থাকেন। এসময় খেলাধুলা বন্ধ থাকে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান কথিত খেলার মাঠটি গ্রামবাসীর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের কথা নিশ্চিত করে জানান, দ্বিতীয় দফায় তিনি গ্রামের যুবসম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আরো একটি অভিযোগপত্র পেয়েছেন। দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।