শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

খাসি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সংবর্ধনা ও প্রাক-বড়দিন  অনুষ্ঠান পালন।

রিপোটারের / ৩৮৩ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২১

এলিসন সুঙ,মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ খাসিয়া স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আয়োজনে এবছর  বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়  উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া খাসি জনগোষ্ঠির ছাত্র-ছাত্রীদেরকে  সংবর্ধনা দেওয়া হয়,একই সাথে তাদেরকে নিয়ে একত্রিত ভাবে প্রাক-বড়দিন অনুষ্ঠান  পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ডিসেম্বর)  কারিতাস সিলেট   হলরুমে এই সংবর্ধনা ও প্রাক-বড়দিন আনন্দ উৎসব পালন মধ্য দিয়ে একটি মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে তারা।
বাংলাদেশ খাসিয়া স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজু রুপসীর সঞ্চালনায় খাসিয়া স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি এলিজ্যাক তাংসং এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পেট্রিক সোয়ের ও লিভিংসন পঃস্না, প্রিন্সি পাটুয়াট, সানডে পঃডুয়েং, রিয়া রেখেলেম, মারকুস পাপাং, বিজয় সুচিয়াং প্রমূখ।
প্রধান অতিথি  বলেন,আধুনিক শিক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষতা অর্জন করেই আগামীর পৃথিবীতে টিকে থাকতে হবে।নিজস্ব সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে বুকে ধারণ করে বিশ্বায়নের যুগে মূলধারার জনগোষ্ঠির সাথে প্রতিযোগিতায় সফল হতে খাসিয়া জনগোষ্ঠির প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে পরিশ্রমী ও মেধাবী হতে হবে।
দূর্গম পাহাড় টিলা ও সীমান্ত এলাকায় কঠোর পরিশ্রম করে প্রকৃতির সাথে মানিয়ে পরিবেশ ও জৈব বৈচিত্র রক্ষা করে টিকে থাকার সংগ্রামের পাশাপাশি দেশের মূলধারায় অবস্থান সুসংহত করতে না পারলে মৌলিক ও মানবাধিকার পুরোপুরি ভোগ করা সম্ভব হবে না।
তিনি খাসিয় পুঞ্জিসমূহে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের নিকট দাবী জানান। এছাড়া সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে কোনো খাসি পরিবার যাতে বাস্তুচ্যুত না হন ও তাদের জীবন-জীবিকা যাতে হুমকির সম্মুখিন না হয় সেজন্য সরকার সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে খাসি জনগোষ্ঠির অবদানের বর্ণনা  করে তিনি আরও বলেন, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের মূলধারার নাগরিকদের ন্যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টিসমূহের সদস্যদের রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সুফল নিহিত।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ তথা সিলেটের অন্যতম একটি জাতিগোষ্ঠি খাসি। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই খাসিরা বসবাস করলেও মূলত ভারতের মেঘালয় রাজ্যই হচ্ছে খাসি বা খাসিয়াদের প্রধান অবস্থান। সেখানে দশ লক্ষের বেশি আর বাংলাদেশে ২০ হাজারের মতো খাসি বসবাস। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও বাহুবল, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখা, রাজনগর, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও সিলেটের তামাবিল সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর ও জাফলং এলাকায় মূলতঃ খাসিপুঞ্জিসমূহের অবস্থান। খাসিদের আদি ধর্ম থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৯৮ শতাংশ খাসি খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বী।
মিশনারীগুলোর মাধ্যমে আধুনিক ইংরেজী মাধ্যমের শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। প্রতিবছরই বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ জনগোষ্টির শিক্ষার্থীরা চান্স পাচ্ছেন।বাংলাদেশ  খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন নামে এ একটি ছাত্র সংগঠন রয়েছে। এ সংগঠন খাসি জাতিগোষ্টির ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে সে ব্যাপারে উৎসাহ উদ্দীপনা দিচ্ছে এই সংগঠন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর