ছাতক(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় খুরমা উত্তর ইউনিয়নের আমেরতল গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ১৫ নভেম্বর সোমবার সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত ৩০জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ১৫ রাউন্ড গুলি ফায়ার ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়।
তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এএসপি সার্কেল ছাতক-দোয়ারা বিল্ল্লা হোসেন, ছাতক থানার (ওসি) মিজানুর রহমান। ঘটনাস্থলে ছাতক থানা পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশের দুটি টিম মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানাগেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বিল্লাল আহমদ। তার চাচাতো ভাই আওয়ালীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী অ্যাভোকেট মনির উদ্দিন মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। এই নির্বাচনে তৃতীয় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিল্লাল আহমদ।
ফেইসবুকে লেখালেখি নিয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় রুবেল আহমদ ও আব্দুল আলিম নামে দুজনের মধ্যে কথাকাটি হয়। জলাল উদ্দিনের ছেলে ও অ্যাভোকেট মনির উদ্দিনের বাতিজা হয় রুবেল। উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের কাকুরা গ্রামের আব্দুল কাহারের ছেলে ও ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ ভাগীনা হয় আব্দুল আলিম।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। আজ সোমবার সকাল ৮ টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ছুলফি, ঝাঁটা, দা, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, সাহেদ আহমদ (২৪) আতিক হাসান (২৬), বদরুল (২৫), পারভীন আক্তার(৪০) মরিয়ম বেগম (৫৫), মুক্তার (২৩), আমির আলি (৫৫) আবুল (৬০), রাসেল (৩০), মারুফ আহমদ (২৫), ছুরুক মিয়া(৪৫), ছায়েদ আহমদ (২৮), লিটন মিয়া (৩২), হানিফ আলি (৫০), রজব আলি (৫৩) জলাল মিয়া (৩২), শরিয়ত আলি (৪০)। অন্যান্য আহতদের নাম তাৎক্ষনিক জানা যায়নি। গুরুতর আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অন্যান্য আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তী ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতদের মধ্যে রয়েছেন খুরমা উত্তর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত সদস্য, জামিরখাই গ্রামের কয়ছর আহমদ। তার পরিবারের দাবি কয়ছর আহমদ সালিশ করতে গিয়েছিলেন। পুলিশ সন্দেহ করে তাকে আটক করে নিয়ে গেছে। তবে পুলিশ বলছে ভেজা কাপড়ে সবাইকে আটক করা হয়েছে। এ দিকে নিরপরাদ কেউ যেনো হয়রানীর শিকার না হয় সে জন্য সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, এএসপি সার্কেল ছাতক-দোয়ারা ও ছাতক থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কয়ছর আহমদের পরিবার।
এ বিষয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মিজানুর রহমান সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এএসপি সার্কেল ছাতক-দোয়ারা বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।