রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন

শেরপুরে চলছে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা।

জালাল উদ্দিন, নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ / ৩৫ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের শেরপুরে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় উঠেছে নানান প্রজাতির মাছ। পৌষসংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসব উপলক্ষে অন্যান্য মাছের পাশাপাশি মেলায় উঠেছে বড় আকারের বাঘাইড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্প-সহ নানান প্রজাতির মাছ।
এই মাছের মেলা এখনো এই অঞ্চলে মানুষের ঐতিহ্যের অংশ। মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাছ নিয়ে আসেন মাছ ব্যবসায়ীরা। এখানে খুচরা ও পাইকারি দরে মাছ বিক্রি হয়।
মেলায় আসা নানান প্রজাতির মাছ দেখতে মৌলভীবাজার জেলা-সহ হবিগঞ্জ- সিলেট ও দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে প্রচুর পরিমান দর্শনার্থীর সমাগম গঠেছে।
গতকাল রবিবার রাত থেকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুর কুশিয়ারা নদীর পাড়ে এই মেলা বসে। আগামীকাল বুধবার ভোরে শেষ হবে এই মেলা।
মেলার আশপাশের স্থানীয়রা বলেন, এই মেলা প্রায় ২০০ বছর ধরে পৌষসংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয়ে আসছে এই মাছের মেলা। এবারের মেলায় সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা দাম চাওয়া হয়েছে একটি বিরাট আকারের বাগাড়ের দাম। বিক্রেতা বলতেছেন এই মাছ কিনে নেওয়ার মতো ক্রেতা এখনো পাইনি। এই মাছের দাম শুনে সবাই চলে যায়।
মেলা উপলক্ষে প্রতিবছর কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছের আড়তদারেরা মাছ নিয়ে এসেছেন। মজুত করে রাখা হয়েছে ছোট-বড় নানা জাতের মাছ। পাশাপাশি মেলায় বড় বড় দোকানে নানা ধরনের গৃহস্থালি ও বিভিন্ন ধরনের আসবাব, শৌখিন জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনা-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়েও বসেছে বিভিন্ন দোকানিরা।
মেলায় আসা বড় আকারের এক বোয়াল মাছের দাম বিক্রেতা চাইছে ৮৫ হাজার টাকা। অন্য এক বিক্রেতা ৪০ কেজি ওজনের এক কাতলা মাছের দাম চাইছেন ৫৫ হাজার টাকা। আরেক বিক্রেতা কুশিয়ারা নদীর ৪০ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছের দাম হাঁকছেন ৫৫ হাজার টাকা।
মেলার আয়োজকরা জানিয়েছেন, শেরপুর কুশিয়ারা নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী এ মাছের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। মেলায় বিক্রিও হচ্ছে ভালো।
মাছ বিক্রেতা মোঃ রফিক আলী বলেন, মেলায় নদী ও হাওরের মাছ নিয়ে এসেছেন বিক্রি করার জন্য। ছোট দেশীয় প্রজাতির মাছের দিকে ক্রেতাদের চোখ। মেলায় বিভিন্ন আকারের বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, মৃগেল, কার্প, বাঘাইড়-সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উঠেছে। প্রচুর পরিমানে মাছের আগমনে দামও অনেকটা কম। কমদামে মাছ কিনতে পেরে মেলায় আসা ক্রেতারাও সন্তুষ্ঠি প্রকাশ করছেন।
মেলায় আগত মৎস্য ব্যবসায়ী অদন পাল বলেন, ঐতিহ্যবাহী মেলায় আমরা প্রতিবছর আসি, এখান থেকে পাইকারি মাছ কিনে আমরা স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করি।
হবিগঞ্জ থেকে আগত মৎস্য ব্যবসায়ী সাগর হোসেন বলেন, এই মেলায় আমাদের বাপ-দাদারাও মাছ বিক্রি করেছেন। এখন আমরা মাছ বিক্রি করি।
সাগর আরও বলেন, আমাদের কাছ থেকে পাইকারি মাছ কিনে মৌলভীবাজার, সিলেট-সহ দেশের বিভিন্ন স্থান পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে মাছ বিক্রি করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে বাগাড়, বোয়াল, আইড়, চিতল, কাতলা, রুই ইত্যাদি মাছ বেশি বিক্রি হয়।
মেলায় আগত দর্শনার্থী ফরহাদ রেজা বলেন, শেরপুর মাছের মেলায় প্রথম এসেছি। এই মেলায় না আসলে এত বড় বড় মাছ কখনো দেখা হতো না। এই মেলা শত বছর ধরে ঐতিহ্য বহন করে বলেন জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর