শিরোনাম
실시간 메이저사이트, 풋볼스피크 추천 플랫폼 How To Handle Every MEGA Challenge With Ease Using These Tips দুর্গাপুরে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে কেন্দ্র পরিচালক ও পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ। ডিমলায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। গাঁজায় চলম ধ্বংসষজ্ঞ ও প্রানহানীর প্রতিবাদে ডিমলায় বিক্ষোভ। গাঁজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মাধবপুরে বিক্ষোভ মিছিল। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে কালিয়াকৈরে বিক্ষোভ মিছিল। ইহুদীদের সাথে হযরত মুহাম্মদ (স.) জামাকে তুলনা করায় মৌলভীবাজারে প্রতিবাদ। কালিয়াকৈর চাপাইর তুরাগ নদীতে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার। উল্লাপাড়ায় শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ।
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ভুলে গেছে বন্যার ক্ষতিগ্রস্তের কষ্ট।

জালাল উদ্দিন, নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ / ১০৭ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মৌলভীবাজার মাঠে মাঠে পাকা আমন ধান কাটার উৎসব চলছে। এখন অগ্রহায়ণের ঘরে ঘরে কৃষকের কোনো অবসর নেই। আগাম রোপণ করা ধান কাটা প্রায় শেষের দিকে। মাঠের প্রায় অর্ধেক পাকা ধান কাটা হয়ে গেছে এরই মধ্যে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে বিলম্বে রোপণ করা ধান কেটে ঘরে তুলতে আরও সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগতে পারে কৃষকদের।
এ বছর বন্যায় অনেক খেতের আমন ফসল পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল মৌলভীবাজারে। ফসল হারিয়ে অনেক কৃষকই দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে যেভাবে পেরেছেন, হালিচারা সংগ্রহ করেছেন। বিলম্বে রোপণ করা জমিতে আগাম ফসলের চেয়ে উৎপাদন কম হতে পারে জেনেও রোপণ করেছেন চারা। এদিকে বিলম্বে রোপণ করা জমিতে যে ফসল হয়েছে, তাতে কৃষকেরা অখুশি নন। অনেকেই বন্যার ক্ষতির কথা ভুলে গেছেন। ঘরে পাকা আমন ফসল তুলছেন।
সদর উপজেলার শিমুলতলার কৃষক সমীরণ সরকার গত বুধবার বলেন, পয়লা যা রুইছলাম (রোপণ), তা বন্যায় শেষ করি লাইছে। পরে আবার রুইছি, খারাপ নায়। ধান ভালা অইছে। তিনি বলেন, ছয় কিয়ার (এক কিয়ার=৩০ শতাংশ) জমিতে তিনি আগাম আমনের চারা রোপণ করেছিলেন। শ্রমিকসহ তাঁর ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। ধলাই নদের ভাঙনের পানিতে খেত তলিয়ে সব ফসল নষ্ট হয়ে যায়, তিনি পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। এদিকে বন্যার পানি সরে গেলে আবার নতুন করে সাড়ে পাঁচ কিয়ার জমিতে স্বর্ণ মশুরি জাতের ধানের চারা রোপণ করেন। শ্রমিক ছাড়া নিজেই চারা রোপণ করেছেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার টাকা। এখনো ধান কাটেননি। কয়েক দিনের মধ্যে পাকা ধান কাটবেন তিনি।
কৃষক সমীরণ সরকার বলেন, লেইটে রুইছি, এতে তেমন কোনো সমস্যা অইছে না। কিছু ধান ইন্দুরে (ইঁদুর) খাইছে। ছাট (ফাঁদ) দিছলাম। পাঁচটা ইন্দুর মারছি। আর কাটছে না। কিয়ারও আশা কররাম ১৫/১৬ মণ ধান পাইমু। বন্যার ক্ষতি পুশাই যাইবো আশা করি।
এ দিকে সদর উপজেলার মাতারকাপন, শিমুলতলাসহ বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কৃষকেরা খেতে পাকা ধান কাটছেন। অনেকে কাঁধভারে সেই ধান নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। কোথাও ধান এখনো পুরোপুরি পাকেনি। ধানে কিছুটা সোনালি রং ধরলেও সবুজ রয়ে গেছে। আরও কয়েক দিন সময় লাগবে সম্পূর্ণ ধান পাকতে। মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার যেসব মাঠে বন্যায় ফসল নষ্ট হয়েছিল, সেসব মাঠে এখনো আধাপাকা ধান রয়ে গেছে বিলম্বে রোপণ করায়।
শামীম মিয়া কয়েকজনকে নিয়ে পাকা ধান কাটছিলেন শিমুলতলা মাঠে। তিনি বলেন, এই খেত পানিয়ে (বন্যায়) সাদা অই গেছিল। সব ফসল শেষ। এরপর লাইমলা রুইলেও ধান ভালা অইছে। নদীর (মনু ও ধলাই নদ) পানির সাথে পলি আছিল। এতে ফসলের উপকার অইছে। কিয়ারো ১৬/১৭ মণ পাইরাম।
তিনি আরও বলেন, বন্যায় তাঁর আগাম রোপণ করা প্রায় ৩৫ কিয়ার জমির ধান পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে সময় শুধু শ্রমিকদেরই দিয়েছিলেন ৬০ হাজার টাকা। বন্যার পরে ২৫ কিয়ারে রঞ্জিত জাতের ধান রোপণ করেছেন। রাজনগরের মোকামবাজার, সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে হালিচারা সংগ্রহ করে এনে রোপণ করেছিলেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা। যে ফসল পাচ্ছেন, তাতে তাঁরা খুশি। বন্যার ক্ষতি নিয়ে আর ভাবছেন না। তাঁদের কথা, যদি বিলম্বে রোপণ না করতেন, তা হলে এখন যে ধান পাচ্ছেন, সেটাও তাঁরা পেতেন না তিনি।
কৃষি বিভাগ, কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে পাহাড়ি ঢল, মনু ও ধলাই নদের ভাঙনে পুরো জেলাতেই কমবেশি বন্যা হয়েছে। পানিতে তলিয়ে পাকা-আধা পাকা আউশ ধান, রোপা আমন ও আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়েছে, এমন আমন ফসলের বেশির ভাগই সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বন্যার সময়টি ছিল আমন ধানের চারা রোপণের প্রায় শেষ পর্যায়। অনেকের রোপণ করা শেষ হয়ে গিয়েছিল। চারাও আর ছিল না। পরে বিলম্বিত চাষে কেমন ফসল হবে, তা নিয়ে কৃষি বিভাগ-সহ অনেক কৃষকেরই উদ্বেগ ছিল। তবে বিলম্বে রোপণে আগাম ফসলের চেয়ে উৎপাদন কিছুটা কম হলেও কৃষকেরা হতাশ নন। ফসল ভালো হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, বন্যার কারণে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বিলম্বে আমন চাষ হয়েছে। রাজনগর, কুলাউড়া ও মৌলভীবাজার সদরেই এই জমি বেশি। এ বছর সারা জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ এক হাজার হেক্টর। চাষাবাদ হয়েছে প্রায় ৯৮ হাজার হেক্টরে। বিলম্বে রোপণ করা জাতের মধ্যে ব্রি ধান-৪৯ ও ৮৭- এগুলোর ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৮ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, বন্যায় যে খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, সেগুলোর ফলন ভালো হয়েছে। বিলম্বে রোপণ করা ধানের ফলন কিছুটা কম হয়েছে, তারপরও ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কিছু না পাওয়ার চেয়ে যা মিলছে, তা ভালোই। মাঠের সব ধান কাটতে আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে বলে আশা করা যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর