নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাদরাসার সৌরশক্তি থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের সুজানগর আইডিয়াল মাদরাসায় পল্লী বিদ্যুৎতের বড়লেখা জোনালে প্রথম নেট মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এই মিটারের মাধ্যমে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরকারি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সৌর থেকে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে জানায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, এখানে স্থাপিত সৌরবিদ্যুত থেকে দিনের বেলায় মাদরাসার প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে তা নেট মিটারের মাধ্যমে সরকারী লাইন জাতীয় গ্রিডের সাথে যুক্ত হবে। মাদরাসা যখন বন্ধ থাকবে সেদিনের বিদ্যুৎ ও জাতীয় গ্রিডে চলে যাবে। আবার রাতের বেলা এবং দিনে যখন সূর্যের আলো থাকবেনা তখন জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের মাধ্যমে মাদরাসার সকল কার্যক্রম চলবে।
সুজানগর আইডিয়াল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও এই প্লান্টের মূল তত্ত্বাবধায়ক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সময় আমাদের মাদরাসা থেকে যে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যাবে সেই বিলের সাথে সমন্বয় করা হবে। আবার যদি দেখা যায় পুরো বছরে জাতীয় গ্রীড থেকে আমরা যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছি তার থেকে আমরা বেশী বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করেছি তাহলে সরকার আমাদেরকে বিদুতের মূল্য পরিশোধ করবে। এই ব্যাপারে আমরা চুক্তি করেছি সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে।
তিনি আরও বলেন, এরকম একটি প্লান্ট আমার ভাগনা তৈরি করেছে। তার এটা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি এই কাজটি করি। প্রতিদিন ১৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ এখান থেকে উৎপাদন হবে। মাঝে মধ্যে কমবেশি হতে পারে। সূর্যের আলো থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। আর এই বিদ্যুৎ পবিবেশ বান্ধব। কার্বন উৎপাদন কমায়। প্লান্ট তৈরিতে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন ও মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম এ.বি.এম মিজানুর রহমান আমাদের সহযোগিতা করেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা আমিনুল ইসলাম বলেন, গ্রামে সব সময় বিদ্যুৎতের সমস্যা থাকে। বিশেষ করে আবাসিক শিক্ষার্থীরা রাতে গরমের সময়ে প্রচণ্ড দূর্ভোগ পোহায়। তাদের এই দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমাদের কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের পরামর্শে আমরা কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, এই প্লান্ট রেডি করতে প্রথম পর্যায়ে আমরা ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করি। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে প্লান্টের কাজ সমাপ্ত করা হয়।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বড়লেখা জোনাল অফিসের ডিজিএম ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সোহেল রানা চৌধুরী সাংবাদিক মোঃ জালাল উদ্দিনকে বলেন, সৌর থেকে গ্রাহক বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ বিক্রি করবে। এটা করতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। যাতে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎতের চাপ কম থাকে।
তিনি আরও বলেন, যারা এইরকম করতে চায় আমরা তাদের একটি নেট মিটার দেই। তারা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রীডে অন্তর্ভুক্ত করলে আমরা তাদেরকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য টাকা দেব। আর যদি আমাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাহলে সেই আলোকেই টাকা দিবেন। এটা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে। বিশেষ করে বড় বড় ইন্ড্রাস্টিগুলোতে। তারা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রীডে অন্তর্ভুক্ত করেন বিদুৎ।
Post Views: 127