নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা ও শিক্ষার্থীদের আহতের প্রতিবাদে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধদের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও পরে মশাল মিছিল করেছে মৌলভীবাজারের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার ২১ অক্টোবর ২০২৪ইং, রাতে মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুসুমবাগ পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মশাল মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মৌলভীবাজারের সমন্বয়ক মারুফ আল হামিদ, আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, সাইফ উদ্দিন ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। মশাল মিছিলে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
সমন্বয়ক সাইফ উদ্দিন বলেন, রোববার রাতে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে গোপন তৎপরতা চালাচ্ছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় হামলা করছেন। আমরা এই সন্ত্রাসী বাহিনীর নিষিদ্ধ ঘোষণা চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রুহুল আমিন বলেন, স্বৈরাচার সরকারের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন পাঁয়তারা করছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাদেরকে আর কোনো অবস্থাতেই দেশের মাটিতে অবস্থান করতে দেওয়া হবে। সবাই মিলে স্বৈরাচার হাসিনার দোসর ছাত্রলীগকে প্রতিহত করতে হবে।
এরআগে একই দাবিতে আরেকটি মিছিল সোমবার ২১ অক্টোবর ২০২৪ইং, সন্ধ্যা ৬টার সময় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব সম্মুখ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি প্রেসক্লাব মোড় থেকে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সম্মুখে ছাত্রসমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় তানজিয়া শিশির, উসমান আলী জাকি, আফসার মিয়া, মোজাম্মেল হোসেন লিখন, তোফায়েল আহমদ, আশরাফ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান; ছাত্রলীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান; স্বৈরাচারের দোসরেরা হুঁশিয়ার সাবধান; চবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই; আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করো করতে হবে ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। এই সন্ত্রাসী সংগঠনকেও বাংলাদেশের মাটিতে নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের নব্য স্বাধীনতার নস্যাৎ করার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনো তাদের কালো হাত দেখাচ্ছে। আমার ভাইদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে সেই রক্তের দাগ এখনো শুকায় নাই। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সন্ত্রাস লীগের শেষ চিহ্নটুকু বাংলার মাটিতে থাকা পর্যন্ত আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে যাব।
বক্তারা আরো বলেন, প্রায় ১৫০০ শহিদের শাহাদাত বরণ ও ২৯ হাজার আহত ভাইবোনের আত্মত্যাগের ফলে আমরা আজকের স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু সেই পরাজিত শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদী কায়দায় তাদের খায়েশ মেটানোর চেষ্টা করছে। যারা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যুবলীগকে ধারণ করে, লালন করে তাদের প্রতি আপনারা চোখ কান খোলা রাখবেন। যদি দেখেন কোথাও তারা সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে তাদের প্রতিহত করবেন। আমাদের লড়াই সংগ্রাম শেষ হয়ে যায়নি, আগামী দিনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই সংগ্রাম করতে হবে।
Post Views: 59