দুর্নীতি ও শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আসনের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন লিকা।
দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ সংক্রান্ত কাজে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র সাংবাদিক দেকে নিশ্চিত করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-রায়পুর ২ আসনের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের ২০২১ইং সালে নির্বাচনী হলফনামায় দাখিল করা তথ্যানুসারে বাৎসরিক আয় ৩৭ লাখ ১০ হাজার ২৯০ টাকা এবং ১ কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৮ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে দাখিল করা সম্পদের তথ্য অনুযায়ী তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
সচিবালয়ে ‘বুলেটপ্রুফ গ্লাস’ লাগাতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা কর্মস্থলে না ফেরা ‘অপরাধী’ কর্মকর্তাদের খুঁজছে পুলিশ কিন্তু দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজ রোডের ১০ শতাংশ জমির উপর ৫ তলা ভবন সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৪০-৫০ শতাংশ জমি ক্রয় এবং ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। সব মিলিয়ে তার ঘোষিত সম্পদের বিবরণের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সম্পদের খোঁজ মিলেছে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে।
দুদক জানায়, টাকার বিনিময়ে নয়ন নিজস্ব ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন এবং বাজার দখল, বাসস্ট্যান্ড থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চাঁদা তুলতেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রভাব খাটিয়ে নিজ ও তার পক্ষের অন্য ব্যক্তিদের নামে এবং তার উপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়। এছাড়াও তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
অন্যদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন লিকা ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে ও তার পরিবার পরিজনের নামে অবৈধভাবে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২২ইং সালে মহিলা সদস্য পদের নির্বাচনের জন্য দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে তার অতি সামান্য পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেয়ার পর হতে নিজ নামে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও তার উপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়। এছাড়াও বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।