এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বিকেল ২টার বড়চতুল ইউনিয়নের হারাতৈল মাঝবড়াই গ্রামের মাঝবড়াই জামে মসজিদের সামনে। স্থানীয় এলাকাবাসী নিহত জয়নাল আবেদীনের পরিবারের সদস্যরা জানান, হারাতৈল মাঝবড়াই জামে মসজিদের উত্তর পাশের্বর সীমানার কিছু জায়গা দখল করে রেখেছিলেন নিহতের ভাই মৃত আছদ আলীর পুত্র সমছুল হক ও তার ছেলেরা সংঘবদ্ধ ভাবে আক্রমণ করে।
মসজিদের জায়গার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সমছুল হকের সাথে তার অপর ভাই সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন ও তার ৫ ভাই সহ স্থানীয়দের পূর্ব থেকে বিরোধ ও মনোমালিন্য চলছিল। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মসজিদের ইমামের ঘর নির্মাণ নিয়ে মসজিদে গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে কথাবার্তা হয়।
এ সময় জয়নাল আবেদীন মসজিদের জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে ইমামের ঘর তৈরি করার জন্য বললে তার বড় ভাই সমছুল হক ও তার ছেলে আলমাছ উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে সমছুল হক তার ছেলে আলমাছ উদ্দিন, কামাল আহমদ, সুহেল আহমদ, রুহুল আহমদ সহ আরো কয়েকজন জয়নাল আবেদীনের বসত বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে দেখে নেবে।
বিকেল ২টার দিকে জয়নাল আবেদীন বাড়ি থেকে বের হয়ে মসজিদের পূর্ব পাশের্ব রাস্তায় যাওয়া মাত্র বড় ভাই সমছুল হক ও তার ছেলে আলমাছ, সুহেল, কামাল, রুহুল সহ আরো কয়েকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জয়নাল আবেদীনকে এলোপাতাড়ি কোপিয়ে রক্তাক্ত আহত করে রাস্তায় ফেলে রাখে। এ সময় তার শোর চিৎকারে অপর ভাই ছয়ফুল্লাহ ও আব্দুল্লাহ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হামলাকারীরা রাস্তার পাশে ক্ষেতের মাঠে পানিতে ফেলে দেয়। হামলাকারীদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে এসে আহত হন তাদের চাচাতো আব্দুর রশিদ, আব্দুল কুদ্দুস।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাবেক ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন, তার ভাই ছয়ফুল্লাহ, আব্দুল্লাহকে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা উদ্ধার করে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে পথিমধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জয়নাল আবেদীন। তার অপর দুই ভাই আশংকা জনক অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়ে কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি অলক কান্তি শর্মা, থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সিলেট শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে জয়নাল আবেদীন হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত নিহতের বড় ভাই সমছুল হক, ভাতিজা সুহেল আহমদ ও কামাল আহমদকে আটক করা হয়েছে বলে থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানিয়েছেন।
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।