মাটিরাঙ্গা(খাগড়াছড়ি)প্রতিনিধিঃ কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে নিজের ভুল শিকার করে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলেন মাটিরাঙ্গা বাজারের সেই স্বর্ণ ব্যবসায়ী রঞ্জিত বনিক।
তিনি মাটিরাঙ্গা উপজেলার সনাতনী সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন এর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এই আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা করেন ।
আজ সোমবার মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র কার্যালয়ে এক জরুরী মতবিনিময় সভায় এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন রঞ্জিত বনিক ।
এ সময় শান্তি সম্প্রতির মেলবন্ধনে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ পার্বত্যাঞ্চলে বসবাস করে যাচ্ছে যুগ যুগ ধরে মন্তব্য করে বক্তারা ভবিষ্যতে যেনো কেউ কারো ধর্মকে আঘাত বা অবমাননা না করেন, সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান। সভায় ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম, হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর ক্ষমা ও ত্যাগের সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দরা বলেছেন যেহেতু রনজিত বনিক তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকবেন বলে সকলকে আশ্বস্ত করেছেন। তাকে এবারের মতো ক্ষমা করে দিয়েছেন।
সভায় রঞ্জিত বনিক বলেন, সকলের কাছে অনিচ্ছাকৃত এই ফেসবুক পোস্টের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখপ্রকাশ করছি। সেই সাথে গোটা জাতির কাছে বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল হবে না বলে প্রতিজ্ঞা করছি।
সভায়, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মোঃ শামসুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা, পৌর কাউন্সিলর মো: শহিদুল ইসলাম সোহাগ, মিজানুর রহমান খোকন, তৌফিকুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা ইমাম ও ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী সলিম উল্যাহ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা বেফাক সভাপতি মাওলানা মো: আনোয়ার হোসেন মিয়াজী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা কওমী মাদ্রাসা ও ওলামা ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা আক্তারুজ্জামান ফারুকী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা খেদমাতুল উম্মাহ’র সভাপতি মুফতী আব্দুল হান্নান জুলফিকার, মাটিরাঙ্গা সম্মিলিত ইসলাম প্রচার সংস্থা’র সভাপতি মাওলানা মোঃ আবুল খায়ের। মাটিরাঙ্গা উপজেলা সনাতন সমাল কল্যান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার সাহা, বলিটিলা শংকর মঠ ও গীতা আশ্রম এর সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ দে, মাটিরাঙ্গা কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দিরের সভাপতি ব্রজলাল দে সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল মুসলমানদের ২য় বৃহত্তর ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আযহা পালনকারীদের রাজাকার সন্তান আখ্যা দিয়ে ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে রনজিত বনিক তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনা সামাল দিতে এলাকাবাসীর পক্ষে পৌর ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম সোহাগ বাদী হয়ে থানায় মামলা করে।
অপরদিকে হিন্দু সমাজ ও সামাজিক কর্মকাণ্ড হতে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়। পরে ৯ দিন কারাভোগের পর ১৭ এপ্রিল আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে আজ নিজের ভুল স্বীকার করে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।