রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে
উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্রের সভাপতিত্বে সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা মুন্সী, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন, বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাহউদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী নিশাদ আহম্মেদ, দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আঃ রহমান মন্ডল, দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের এসআই মো. ফরিদ উদ্দিন, জেলা সড়ক পরিবহন ও বাস মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য সুকুমার ভৌমিক, আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির অফিস সেক্রেটারী জুয়েল রানা, পরিবহন নেতা তোফাজ্জেল হোসেন, হাসেম খান, সহ থ্রি হুইলার সমিতিসহ ঘাট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সভায় জানানো হয়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথে ফেরী ও লঞ্চ সংখ্যা বাড়ানোসহ ঘাট প্রস্তুত রাখা, যাত্রীদের সুবিধার্থে সড়ক ও ঘাট এলাকায় পর্যাপ্ত লাইটিং এর ব্যবস্থা, লুচ কালেকশনের নির্ধারিত পোশাক পরিধান করা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো, ঈদকে সামনে রেখে যাতে অপরাধীদের অপতৎপরতা বেড়ে না যায় সেদিকে নজরদারি বাড়ানো, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলরত ফেরীতে ঈদের সময় জুয়া, ছিনতাইকারী, ডাকাতির দল সক্রিয় হয়ে উঠে নৌপুলিশ সদস্যদের এ ব্যাপারে আরো বেশি তৎপর হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় আরো জানানো হয়, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৫টি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করবে এছাড়াও যাত্রী পারাপারের জন্য ফেরীর পাশাপাশি ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টি লঞ্চ চলাচল করবে এই নৌরুটে। ফেরিতে জুয়ারি চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি, ডাকাতি, ঘাটে অতিরিক্ত বাস – প্রাইভেটকারের কাউন্টার বসিয়ে কতিপয় নেতা ও জনপ্রতিনিধির অনৈতিক সুবিধা আদায়,ছিনতাই, অবৈধ ও ফিটনেস বিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ, বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধ, ঘাটে যাত্রীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরন, লঞ্চ ও ফেরির সংখ্যা বাড়ানো,প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানো, নদীতে অবৈধ ট্রলার, স্পীড বোট,বলগেট চলাচল বন্ধ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগে ও পরে মোট ছয় দিন জরুরি পণ্য ও সেবা ব্যতীত সব পণ্যবাহী ট্রাক এবং কাভার্ডভ্যানের ফেরি পারাপার বন্ধ থাকবে। এ ছাড়াও ৬ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পদ্মা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়ক ব্যবহার করে সরাসরি ঘাটে চলে যাওয়া বা ফেরিতে উঠে যাওয়া যানবাহন হতে যে কোন ধরনের টোল বা চাঁদা আদায় অবৈধ। অন্তত ৬ ঘন্টা টার্মিনাল ব্যবহার না করলে টার্মিনাল চার্জ আদায়েরও বিধান নেই। ইতুপূর্বেও আমার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। সংশ্লিষ্টদের এ ধরনের টোল আদায় বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও না মানলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্হা নেয়া হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা মুন্সী ঘাট সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ জানান। ঘরে ফেরা মানুষ যেন নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারে এবং ঘাটে যেন যাত্রী হয়রানীর শিকার না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, এ বছর ঘাট দিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যেন কোন রকম ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ী পৌছাতে পারে তার সু-ব্যবস্থা করা হবে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয় সে সকল বিষয়ে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী হয়রানী ও ভাড়া মনিটরিংয়ের জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালিত করবে উপজেলা প্রশাসন। এমনকি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে ঘাট এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবে।
Post Views: 138