নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি এলাকা দিয়ে আশির দশকে বিদ্যুতের লাইন টানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। আর বাকপ্রতিবন্ধী দিনমজুর ফয়জুর রহমান ঘর নির্মাণ করেন চার থেকে পাঁচ বছর আগে। বিদ্যুতে ১১ হাজার ভোল্টের সঞ্চালন লাইনের নিচে ঘর নির্মাণের সময় বাধা দেয়নি মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
বৈদ্যুতিক তারে নিরাপত্তার জন্য কোনো রাবারও যুক্ত করেনি তারা। ফলে গত মঙ্গলবার রাতে ঘটে মর্মন্তুদ ঘটনা। বজ্রপাতসহ ঝড়বৃষ্টির সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান ফয়জুরসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য। এ ঘটনার জন্য স্থানীয় অনেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অবহেলাকে দুষছেন।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া পরিবারের একমাত্র সদস্য দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সোনিয়া সুলতানাও গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যায়। ফলে পরিবারের শেষ প্রদীপটিও নিভে গেল। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সালাম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘরের ওপর দিয়ে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন গেলেও ফয়জুরের বসতের ভেতর কোনোদিন জ্বলেনি বিদ্যুতের আলো। সম্প্রতি ঘরের মধ্যে ওয়ারিংয়ের কাজ শেষ করে সংযোগের জন্য আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে আলোকিত ঘর আর দেখতে পারেননি তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ মৌলভীবাজার জোনাল অফিসের ডিজিএম সোহেল রানা জানান, তাদের লাইনটি আশির দশকে টানা হয়। ২০২০ সালের দিকে লাইনের নিচে ঘর তৈরি করেন ফয়জুর। এক সময় সেখানে কাজ করতে গিয়ে তারা জায়গার মালিকপক্ষের বাধার সম্মুখীন হন বলে দাবি করেন। ঘর তৈরির অনেক আগে থেকে লাইন ছিল দাবি করে দায় এড়াতে চান তিনি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ফয়জুরের বাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও লাইনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ঘরের পাশের দুটি খুঁটির দূরত্ব অনেক বেশি। তারে অনেকগুলো জোড়া রয়েছে। যে কোনো সময় হালকা বাতাসে এসব তারে বিজলির মতো চমকায়। আগুনের মতো এই বিজলি দেখে সবাই ভয় পেত। অনেকবার পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের বলার পরও তারের নিচে নেট বা রাবার দিয়ে আবৃত করা হয়নি বলে জানান তিনি।
Post Views: 270