উল্লাপাড়া(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
উল্লাপাড়ার নব নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। রমজান মাসে এটি দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন দর্শনার্থী আসছেন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে উদ্বোধন করা হয় উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ। ১৯৮৩ সালে ইটের দেয়াল ও ছাদে নির্মিত হয় মসজিদটি। নতুন এই মসজিদ নির্মাণ নিয়ে কথা হয় মসজিদ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি জানান, পুরাতন মসজিদের জরাজীর্ণ অবস্থা এবং মুসল্লিদের জায়গা সংকট হওয়ায় তৎকালীন ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেনের কাছে জানানো হয় এবং একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের কথা বলা হয়। পরে ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেন উদ্যোগী হয়ে চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তৈরি করেন। প্রায় ১ বছর ইট, পাথরে বিভিন্ন কারুকার্য করে ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ৪ হাজার স্কয়ারফিট মসজিদের দেয়ালে কার্লিওগ্রাফী যেন সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদটির অসাধারণ নির্মাণ শৈলী, রং ও লাইটিং দূর থেকেই কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। নির্মাণের পর থেকেই প্রতিদিন মসজিদটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন হাজারো দর্শনার্থী।
অসাধারণ লাইটিং ও মসজিদের মোহনীয় সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। মসজিদ দেখা শেষে মুগ্ধতার আবেশ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও দর্শনার্থীরা। দিনের আলো, সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহুর্ত ও রাতের অন্ধকার ভিন্নরকম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ। তবে সন্ধ্যার পর মসজিদের লাইট জ্বালানো হলে ফুটে ওঠে এর দ্যূতি ছড়ানো সৌন্দর্য। এর সামনেই রয়েছে বাহারী ফুলের বাগান, ফুলের সৌন্দর্য আর সুঘ্রাণ মুগ্ধ করছে সবাইকে। এসি ব্যবহার করা হয়নি তবে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় নির্মিত মসজিদে গ্রীষ্মকালে সারাক্ষণ থাকে ঠান্ডা আবহাওয়া। শীতকালে গরম আবহাওয়া বিরাজমান। মসজিদটিতে রয়েছে ১ হাজার মুসল্লির একসাথে নামাজের ব্যবস্থা এছাড়াও নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদের নিচতলায় রয়েছে ইসলামিক লাইব্রেরি, আরবি ভাষা চর্চা কেন্দ্র।
মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা। মসজিদে নামাজের জন্য একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও ১ জন খাদেম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের খাদেম নুরুজ্জামান জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো। কিন্তু বর্তমানে এই নতুন মসজিদ যেমনটা নান্দনিক তেমনটি নামাজের জন্য আরামদায়ক। দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে মসজিদ দেখার জন্য। রমজান মাসে এখানে কুরআন তেলওয়াত হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার মোঃ হাসান আলী জানান, উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের অসাধারণ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ। এখানে নামাজ পড়ে মনে অনেক প্রশান্তি পাই। এখান থেকে ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে না।
মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ যিনি নিয়েছিলেন তৎকালীন ইউএনও মোঃ উজ্জল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, পুরাতন মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে অনেক কষ্ট হতো ও জায়গা সংকট ছিলো। উল্লাপাড়ার স্থানীয় মুসল্লিদের অনুরোধে নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ এক বছর নির্মাণ কাজ করে সম্পূর্ণ হয়েছে। এটির নঁকশা ইউএনও নিজেই করেছেন বলে জানান তিনি।