নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাহে রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা রাখেন, সেই সঙ্গে ইবাদত করে থাকেন। এ জন্য এই মাসে পবিত্রতার বিষয়ে সবাই বেশ সতর্ক থাকেন।
কিন্তু দিনের বেলায় রোজা থাকা অবস্থায় কখনো স্বপ্নদোষ, অথবা কখনো রোজা রেখে দিনের বেলায় ঘুমানো অবস্থায় স্বপ্নদোষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় রোজা ভাঙে কি না। তা নিয়ে অনেকের মনে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। আবার এ নিয়ে অনেকের মধ্যে নানা প্রশ্ন থাকে।
রোজা থাকা অবস্থায় দুপুরে ঘুমানো নিষেধ নয়। এমনকি ঘুমের ভেতরে স্বপ্নদোষ হলে স্বপ্নদোষের কারণেও রোজা ভাঙে না। তবে স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরজ হয়। কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন, রোজা অবস্থায় যদি স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে; তাদের এ ধারণা সঠিক নয়।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে নবী কারিম (সা.) বলেন, তিনটি জিনিস রোজা ভঙ্গের কারণ নয়— বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ। (বায়হাকি, হাদিস : ৪/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার : ২/৩৯৬; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ৫২৮৭; নাসবুর রায়াহ : ২/৪৪৭; মাজমাউয যাওয়ায়েদ : ৩/১৭০; জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭১৯)।
উম্মুল মুমিনিন উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আবু তালহা (রা.)-এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম (রা.) আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নিকট এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা সত্যের বিষয়ে নিঃসঙ্কোচ। (তো আমার জিজ্ঞাসা এই যে,) কোনো নারীর স্বপ্নদোষ হলে কি তার উপর গোসল ফরজ হয়?
উত্তরে আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ। যদি সে পানি (ভেজা) দেখতে পায়। (সহিহ বুখারি : ১/৪২)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায়- ১. ছেলেদের মত মেয়েদেরও স্বপ্নদোষ হয়। ২. স্বপ্নদোষ হলে ছেলে-মেয়ে উভয়ের গোসল করা ফরজ হয়।
অতএব, উপরোক্ত হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায় যে, স্বপ্নদোষ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই স্বপ্নদোষের কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না। সুতরাং রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙে যায়- এ ধারণা ঠিক নয়। (ফতওয়ায়ে শামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৬৬)। আল্লাহ তাআলা আপনি আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে রমজান পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন চুম্মা আমিন।
Post Views: 127